মালদার সাজিনুরের অভিযোগে ফের বিতর্কে দিল্লি পুলিশ, পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার

- আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 35
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলে বাংলায় ফিরে এলেন মালদার চাঁচলের বাসিন্দা সাজিনুর পারভিন। তাঁর দাবি, বাংলাদেশি সন্দেহে দিল্লি পুলিশ তাঁর দেড় বছরের সন্তানকে পর্যন্ত মারধর করেছে। বৃহস্পতিবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই চাঁচলের ফিরোজাবাদে নিজের বাড়িতে পৌঁছন এই পরিযায়ী শ্রমিক। সংসারে দারিদ্র্য চিহ্ন স্পষ্ট, টিনের দেওয়াল ঘেরা বাড়ি, দিল্লি থেকে ফিরে কীভাবে চলবে সংসার—সে চিন্তায় প্রহর গুনছে পরিবার।
এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এ দিন তাঁদের বাড়িতে যান চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ, মহকুমাশাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায় এবং চাঁচল থানার আইসি পুর্ণেন্দু কুণ্ডু-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা। সাজিনুরের পরিবারের জন্য পাকা বাড়ি তৈরির উদ্দেশ্যে ‘বিধায়ক ভাতা’ থেকে দেড় লক্ষ টাকা অর্থ সাহায্যের ঘোষণা করেন বিধায়ক। আপাতত পুলিশের নিরাপত্তায় থাকবে এই পরিবার। বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, “এই পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারটির নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে সবরকম সহযোগিতা করছে রাজ্য সরকার।”
ঘটনাটি ফের আলোচনায় উঠে আসে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে দাবি করেন, দিল্লি পুলিশের হাতে নির্যাতিত হয়েছে বাংলার শ্রমিক পরিবার। তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে সাফ অভিযোগ তোলেন। তৃণমূল নেতৃত্বও দাবি করেছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি সন্দেহে লাগাতার হেনস্থা করা হচ্ছে।
দিল্লি পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ভিডিয়োটি ‘সত্যি নয়’, বরং সাজিনুর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত এক আত্মীয়ের কথায় এমন ভিডিয়ো তৈরি করেছেন। যদিও বুধবার রাজ্যে ফিরে সাজিনুর স্পষ্ট জানান, তাঁর সব অভিযোগ সত্যি। দিল্লি পুলিশ তাঁর দেড় বছরের শিশুকে মারধর করেছিল।
বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরে সাজিনুরের পরিবার কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। তিনি নিজে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আর ভিন রাজ্যে কাজ করতে যেতে চান না। বাংলাতেই কাজ করে সংসার চালাতে চান তাঁর স্বামী। এর জন্য রাজ্য সরকারের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।
এই ঘটনাকে ঘিরে ফের তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা, বাংলা-বিদ্বেষ এবং পুলিশি হেনস্থা নিয়ে ফের কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে।