০২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাশিয়া থেকে খনিজ তেল কেনা বন্ধ করেছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি? রিপোর্টে দাবি

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার
  • / 40

 পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: রাশিয়া থেকে খনিজ তেল আমদানি আপাতত স্থগিত রেখেছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি সংস্থা— এমনটাই দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। যদিও রিপোর্টের সত্যতা এখনও নিশ্চিত হয়নি। রিপোর্টটি প্রকাশ্যে আসতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চারটি বাক্যে প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেন, “আমি শুনেছি ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনছে না। এটা খুব ভাল সিদ্ধান্ত। সত্যি কি না জানি না। দেখা যাক কী হয়।”

 

রয়টার্স জানায়, গত সপ্তাহ থেকে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (IOC), হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম (HPCL), ভারত পেট্রোলিয়াম (BPCL) এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড (MRPL) রাশিয়ার খনিজ তেল কেনা বন্ধ রেখেছে। তবে রয়টার্স ওই সংস্থাগুলির কারও সঙ্গেই সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেনি। কেন্দ্রীয় সরকারও বিষয়টি নিয়ে কিছু জানায়নি।

আরও পড়ুন: বেকারত্বের হার বাড়ছে, তথ্য প্রকাশ করতেই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ট্রাম্পের

 

আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে ভারতের তেল-অস্ত্র আমদানি নিয়ে চরম অসন্তুষ্ট আমেরিকা, ট্রাম্পের হুমকি: কেন এত ক্ষোভ?

শুক্রবারই ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে এবং রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র আমদানির জন্য ভারতকে ‘জরিমানা’ দিতে হবে। তবে সেই জরিমানার পরিমাণ স্পষ্ট করেননি তিনি। এই ঘোষণার কিছু সময় পরই রয়টার্সের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে।

আরও পড়ুন: ইরান থেকে পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্রয়, ভারতের ৬টি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্প প্রশাসনের

 

শনিবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়ালকে যখন এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়, তিনি জানান, এ ধরনের কোনও পদক্ষেপ সম্পর্কে কেন্দ্র অবহিত নয়। তিনি আগের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “বাজার পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করেই ভারত জ্বালানির চাহিদা পূরণ করে। জাতীয় স্বার্থই আমাদের অগ্রাধিকার।”

 

ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম খনিজ তেল আমদানিকারক দেশ। বর্তমানে নয়াদিল্লি তার মোট আমদানির প্রায় ৩৫ শতাংশ তেল রাশিয়া থেকেই নেয়। এক সময় সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ছিল প্রধান তেল সরবরাহকারী দেশ, কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তেলের বাজারে আমূল পরিবর্তন ঘটে। পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞার জেরে রাশিয়া বড় ছাড়ে তেল বিক্রি শুরু করে। সেই ছাড়ের সুযোগ নিয়েই ভারত সস্তায় তেল কিনছে মস্কো থেকে। যদিও আমেরিকার অভিযোগ, এই তেল আমদানির ফলে রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারছে। তবে ভারত বরাবরই নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে আন্তর্জাতিক চাপের বিরুদ্ধে জ্বালানি নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

 

এই পরিস্থিতিতে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ রাখার খবরে কূটনৈতিক চাপ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখন দেখার, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির তরফে এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাশিয়া থেকে খনিজ তেল কেনা বন্ধ করেছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি? রিপোর্টে দাবি

আপডেট : ২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার

 পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: রাশিয়া থেকে খনিজ তেল আমদানি আপাতত স্থগিত রেখেছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি সংস্থা— এমনটাই দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। যদিও রিপোর্টের সত্যতা এখনও নিশ্চিত হয়নি। রিপোর্টটি প্রকাশ্যে আসতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চারটি বাক্যে প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেন, “আমি শুনেছি ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনছে না। এটা খুব ভাল সিদ্ধান্ত। সত্যি কি না জানি না। দেখা যাক কী হয়।”

 

রয়টার্স জানায়, গত সপ্তাহ থেকে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (IOC), হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম (HPCL), ভারত পেট্রোলিয়াম (BPCL) এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড (MRPL) রাশিয়ার খনিজ তেল কেনা বন্ধ রেখেছে। তবে রয়টার্স ওই সংস্থাগুলির কারও সঙ্গেই সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেনি। কেন্দ্রীয় সরকারও বিষয়টি নিয়ে কিছু জানায়নি।

আরও পড়ুন: বেকারত্বের হার বাড়ছে, তথ্য প্রকাশ করতেই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ট্রাম্পের

 

আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে ভারতের তেল-অস্ত্র আমদানি নিয়ে চরম অসন্তুষ্ট আমেরিকা, ট্রাম্পের হুমকি: কেন এত ক্ষোভ?

শুক্রবারই ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে এবং রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র আমদানির জন্য ভারতকে ‘জরিমানা’ দিতে হবে। তবে সেই জরিমানার পরিমাণ স্পষ্ট করেননি তিনি। এই ঘোষণার কিছু সময় পরই রয়টার্সের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে।

আরও পড়ুন: ইরান থেকে পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্রয়, ভারতের ৬টি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্প প্রশাসনের

 

শনিবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়ালকে যখন এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়, তিনি জানান, এ ধরনের কোনও পদক্ষেপ সম্পর্কে কেন্দ্র অবহিত নয়। তিনি আগের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “বাজার পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করেই ভারত জ্বালানির চাহিদা পূরণ করে। জাতীয় স্বার্থই আমাদের অগ্রাধিকার।”

 

ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম খনিজ তেল আমদানিকারক দেশ। বর্তমানে নয়াদিল্লি তার মোট আমদানির প্রায় ৩৫ শতাংশ তেল রাশিয়া থেকেই নেয়। এক সময় সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ছিল প্রধান তেল সরবরাহকারী দেশ, কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তেলের বাজারে আমূল পরিবর্তন ঘটে। পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞার জেরে রাশিয়া বড় ছাড়ে তেল বিক্রি শুরু করে। সেই ছাড়ের সুযোগ নিয়েই ভারত সস্তায় তেল কিনছে মস্কো থেকে। যদিও আমেরিকার অভিযোগ, এই তেল আমদানির ফলে রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারছে। তবে ভারত বরাবরই নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে আন্তর্জাতিক চাপের বিরুদ্ধে জ্বালানি নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

 

এই পরিস্থিতিতে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ রাখার খবরে কূটনৈতিক চাপ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখন দেখার, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির তরফে এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়।