০৩ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১২ জন স্ত্রী, ১০২ সন্তান, ৫৭৮ জন নাতি-নাতনি নিয়ে ‘ভরা সংসার’ উগান্ডার বাসিন্দা কাসেরার

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শনিবার
  • / 35

বিশেষ প্রতিবেদন: জেট গতিতে জনসংখ্যা বাড়ছে বিশ্বে। রাষ্ট্রসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১২ বছর সময় লেগেছে ৭০০ কোটি থেকে বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটিতে পৌঁছাতে। ২০৩০ সালে ৮৫০ কোটির ঘরে পৌঁছাবে জনসংখ্যা। বিশ্বের জনসংখ্যা ৯০০ কোটির মাইলফলকে পৌঁছাতে সময় লাগবে ১৫ বছর। অর্থাৎ ২০৩৭ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৯০০ কোটিতে। ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুসারে, বিশ্বের জনসংখ্যা ১০০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করে ১৮০৪ সালে।

তবে বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ল কি কমল এই নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই উগান্ডার বুগিসা গ্রামের বাসিন্দা মুসা হাসাহিয়া কাসেরার। নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত আছেন ৬৮ বছর বয়সী কাসেরা। বর্তমানে তাঁর ১২ জন স্ত্রী, ১০২ জন সন্তান আর ৫৭৮ জন নাতি-নাতনি নিয়ে ভরা সংসার কাসেরার। বিশ্বের বৃহত্তম সংসারের তালিকায় নাম রয়েছে উগান্ডার কাসেরার পরিবারের। সন্তানের সংখ্যা এত বেশি হওয়ার কারণে তাদের নাম মনে করতে পারেন না তিনি। কাসেরার সন্তানদের বয়স ১০ থেকে ৫০ বছর। আর তার সবচেয়ে ছোট স্ত্রীর বয়স ৩৫ বছর। প্রথম আর শেষ সন্তান ছাড়া বাকিদের নাম মনে রাখতে পারেন না তিনি। তাদের জন্মের বিস্তারিত তথ্য জানতে একটি পুরনো নোট বই সঙ্গে রাখেন তিনি। সন্তানদের চিনতে তাদের মায়েরা তাঁকে সাহায্য করেন। এমনকি কয়েকজন স্ত্রীর নামও মনে করতে পারেন না। এ জন্য নিজের এক সন্তানের সাহায্য নেন তিনি।

আরও পড়ুন: নরবলির ঘটনা বাড়ছে উগান্ডায়

সংবাদমাধ্যমকে কাসেরা জানিয়েছেন, মানুষের কাছে আমার জীবনের এই ঘটনা ছিল হাসির বিষয়। কিন্তু বর্তমানে বৃহৎ এই পরিবার ঘিরে অনেক আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশাল এই পরিবারের জন্য মাত্র দুই একর জমি রয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র ও শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারিনি বলেই আগেই দুই স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: এবারে সন্ধান মিলল রিয়েল লাইফ ‘মোগলি’র

তবে কাসেরা আরও জানিয়েছেন, আমার স্ত্রীয়েরা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করলেও তিনি করেননি। তবে আর সন্তান চান না। কারণ, এত বেশি সন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ থেকে শিক্ষা হয়েছে তার। সন্তানদের ভালো ভাবে লালন-পালন করতে পারেননি তিনি।
বর্তমানে উগান্ডার বুগিসা গ্রামের বাসিন্দা কাসেরার হাতে কোনও কাজ নেই। বেকার অবস্থায় দিন কাটছে তার। অবশ্য তাঁর গ্রামটি এখন এক ধরনের পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ফলে কিছুটা আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে।

জানা গিয়েছে, ১৯৭২ সালে পারিবারিক মতে কাসেরা তার প্রথম বিয়ের পর্ব সারেন। এ সময় তিনি এবং তাঁর স্ত্রী দুজনেরই বয়স ছিল ১৭ বছর। এক বছর পর তাদের প্রথম সন্তানের জম্ন হয়।

কাসেরা জানিয়েছেন, তারা দুই ভাই ছিলেন। তখন পরিবারের লোকেরাই তাকে পরামর্শ দেন, বংশ এগিয়ে নিয়ে যেতে কয়েকটা বিয়ে করে সন্তানের জন্ম দিতে। সেই সময় অবস্থাও বেশ স্বচ্ছল ছিল তাঁর। গবাদিপশু বিক্রেতা ও কসাইয়ের কাজ করতেন তিনি। আর কাসেরার স্বচ্ছলতা দেখে গ্রামবাসী তার সঙ্গে তাদের মেয়েদের বিয়ে দিতে চাইতেন। এমনকি তাদের কারও কারও বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। উগান্ডায় বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ হয় ১৯৯৫ সালে। তবে ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে বহুবিবাহের প্রচলন রয়েছে।
উল্লেখ্য, উগান্ডার বুগিসা গ্রামটিতে প্রায় চার হাজার জন লোকের বাস। সেই গ্রামের এক স্থানীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেও কাসেরা তার সন্তানদের ভালোভাবে প্রতিপালন করেছেন। তাদের জন্যই গ্রামটিতে চুরি, মারামারির কোনও ঘটনা নেই।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

১২ জন স্ত্রী, ১০২ সন্তান, ৫৭৮ জন নাতি-নাতনি নিয়ে ‘ভরা সংসার’ উগান্ডার বাসিন্দা কাসেরার

আপডেট : ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শনিবার

বিশেষ প্রতিবেদন: জেট গতিতে জনসংখ্যা বাড়ছে বিশ্বে। রাষ্ট্রসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১২ বছর সময় লেগেছে ৭০০ কোটি থেকে বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটিতে পৌঁছাতে। ২০৩০ সালে ৮৫০ কোটির ঘরে পৌঁছাবে জনসংখ্যা। বিশ্বের জনসংখ্যা ৯০০ কোটির মাইলফলকে পৌঁছাতে সময় লাগবে ১৫ বছর। অর্থাৎ ২০৩৭ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৯০০ কোটিতে। ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুসারে, বিশ্বের জনসংখ্যা ১০০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করে ১৮০৪ সালে।

তবে বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ল কি কমল এই নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই উগান্ডার বুগিসা গ্রামের বাসিন্দা মুসা হাসাহিয়া কাসেরার। নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত আছেন ৬৮ বছর বয়সী কাসেরা। বর্তমানে তাঁর ১২ জন স্ত্রী, ১০২ জন সন্তান আর ৫৭৮ জন নাতি-নাতনি নিয়ে ভরা সংসার কাসেরার। বিশ্বের বৃহত্তম সংসারের তালিকায় নাম রয়েছে উগান্ডার কাসেরার পরিবারের। সন্তানের সংখ্যা এত বেশি হওয়ার কারণে তাদের নাম মনে করতে পারেন না তিনি। কাসেরার সন্তানদের বয়স ১০ থেকে ৫০ বছর। আর তার সবচেয়ে ছোট স্ত্রীর বয়স ৩৫ বছর। প্রথম আর শেষ সন্তান ছাড়া বাকিদের নাম মনে রাখতে পারেন না তিনি। তাদের জন্মের বিস্তারিত তথ্য জানতে একটি পুরনো নোট বই সঙ্গে রাখেন তিনি। সন্তানদের চিনতে তাদের মায়েরা তাঁকে সাহায্য করেন। এমনকি কয়েকজন স্ত্রীর নামও মনে করতে পারেন না। এ জন্য নিজের এক সন্তানের সাহায্য নেন তিনি।

আরও পড়ুন: নরবলির ঘটনা বাড়ছে উগান্ডায়

সংবাদমাধ্যমকে কাসেরা জানিয়েছেন, মানুষের কাছে আমার জীবনের এই ঘটনা ছিল হাসির বিষয়। কিন্তু বর্তমানে বৃহৎ এই পরিবার ঘিরে অনেক আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশাল এই পরিবারের জন্য মাত্র দুই একর জমি রয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র ও শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারিনি বলেই আগেই দুই স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: এবারে সন্ধান মিলল রিয়েল লাইফ ‘মোগলি’র

তবে কাসেরা আরও জানিয়েছেন, আমার স্ত্রীয়েরা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করলেও তিনি করেননি। তবে আর সন্তান চান না। কারণ, এত বেশি সন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ থেকে শিক্ষা হয়েছে তার। সন্তানদের ভালো ভাবে লালন-পালন করতে পারেননি তিনি।
বর্তমানে উগান্ডার বুগিসা গ্রামের বাসিন্দা কাসেরার হাতে কোনও কাজ নেই। বেকার অবস্থায় দিন কাটছে তার। অবশ্য তাঁর গ্রামটি এখন এক ধরনের পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ফলে কিছুটা আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে।

জানা গিয়েছে, ১৯৭২ সালে পারিবারিক মতে কাসেরা তার প্রথম বিয়ের পর্ব সারেন। এ সময় তিনি এবং তাঁর স্ত্রী দুজনেরই বয়স ছিল ১৭ বছর। এক বছর পর তাদের প্রথম সন্তানের জম্ন হয়।

কাসেরা জানিয়েছেন, তারা দুই ভাই ছিলেন। তখন পরিবারের লোকেরাই তাকে পরামর্শ দেন, বংশ এগিয়ে নিয়ে যেতে কয়েকটা বিয়ে করে সন্তানের জন্ম দিতে। সেই সময় অবস্থাও বেশ স্বচ্ছল ছিল তাঁর। গবাদিপশু বিক্রেতা ও কসাইয়ের কাজ করতেন তিনি। আর কাসেরার স্বচ্ছলতা দেখে গ্রামবাসী তার সঙ্গে তাদের মেয়েদের বিয়ে দিতে চাইতেন। এমনকি তাদের কারও কারও বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। উগান্ডায় বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ হয় ১৯৯৫ সালে। তবে ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে বহুবিবাহের প্রচলন রয়েছে।
উল্লেখ্য, উগান্ডার বুগিসা গ্রামটিতে প্রায় চার হাজার জন লোকের বাস। সেই গ্রামের এক স্থানীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেও কাসেরা তার সন্তানদের ভালোভাবে প্রতিপালন করেছেন। তাদের জন্যই গ্রামটিতে চুরি, মারামারির কোনও ঘটনা নেই।