সৌদি আরবের জেদ্দায় বন্দর সংলগ্ন এলাকায় ইরানের
একটি তেলট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ ঘটে আগুন ধরে গিয়েছে। শুক্রবার খুব সকালে তেলবোঝাই
জাহাজটিতে আধ ঘণ্টার ব্যবধানে জোড়া বিস্ফোরণ হয়। প্রথমটি সকাল ৫টা এবং দ্বিতীয়টি
সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘটে। লোহিত সাগরে ভাসমান ইরানি জাহাজটা তখন জেদ্দা বন্দর থেকে ৬০
মাইল দূরে ছিল। তবে পুরো বিষয়টি রহস্যময়। ইরানের আশঙ্কা, এটা ভয়াবহ
সন্ত্রাসী হামলা।
সূত্রের খবর, সমুদ্রে ভাসমান ট্যাঙ্কারটিতে রকেট
কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি এনআইটিসি-র
মালিকানাধীন কোনভাবে ছিদ্র হয়ে সেখান থেকে সমুদ্র তেল পড়ছিল। তবে তা খুবই অল্প
মাত্রায় সীমাবদ্ধ ছিল। সব দিক খতিয়ে দেখতে বা পুরো দুর্ঘটনার তদন্ত করতে ইরানের
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন।
তবে তেহরান প্রশাসন জানিয়েছে, খুব
বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ওই তেলট্যাঙ্কার থাকা পাইলট এবং ক্রুরা সকলেই অক্ষত ও
নিরাপদে রয়েছেন। ইরানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আব্বাস মুসাভি বলেছেন,
তদন্তে সন্ত্রাসী হামলার তত্ত্ব বেরিয়ে এলে তখন পরবর্তী পদক্ষেপের
কথা ভাবা যাবে। এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র থাকার সম্ভাবনার কথা কোনওমতেই উড়িয়ে দিতে
রাজি নন তিনি। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদির দুটি শীর্ষ তেল
উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে ভয়াবহ হামলা চালায় ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা।যার জেরে
সৌদির তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে যায়।
সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৌদির সঙ্গে ইরান সম্পর্ক তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়।
যদিও বিষয়টি বেশি দূর এগোনোর আগেই যুযুধান দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক মেরামতির
সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে। এমতাবস্থায় সৌদি উপকূলে ইরানি ট্যাঙ্কার রহস্যময় হামলা বা
বিস্ফোরণ ফের নতুন মোড় নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, সৌদি-ইরান যখন
মতবিরোধ ভুলে কূটনৈতিকভাবে কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে, ঠিক তখন আরবের
বন্দর নগরী জেদ্দায় ইরানি তেলট্যাঙ্কার হামলা নিছক দুর্ঘটনা নয়। এর নেপথ্যে গভীর
ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা থাকতে পারে। কোনও কোনও মহল থেকে ইসরাইলের দিকে আঙুল তোলা
হচ্ছে।তাদের মতে ইরান ও সৌদিকে লড়িয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে দেশটি।
অন্য দিকে ইরানি তেলট্যাঙ্কার বিস্ফোরণের জেরে
বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যারেল পিছু ২.৩ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। পরবর্তীতে
মধ্যপ্রাচ্যে ও উপসাগরীয় অঞ্চলে তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন