চিন্ময় ভট্টাচার্য
লোকসভা নির্বাচনে মাত্র কয়েকটি বেশি আসন পেয়েই এরাজ্যের ক্ষমতা দখলের দিবাস্বপ্ন দেখছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করে– রাজ্যের পরিবেশ হিংসায় ভরিয়ে ক্ষমতা দখলের ফন্দি এঁটেছে গেরুয়া শিবির। এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে জবাব দিতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। সেকথা মাথায় রেখে– এখন থেকেই দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। দলের মুখপত্রজাগো বাংলার শারদ সংখ্যায় দলীয় কর্মীদের ভোটপ্রস্তুতির আহ্বান জানিয়ে তিনি লিখেছেনতৈরি হোন– সামনে ২০২১এর কঠিন লড়াই প্রবন্ধ। যা স্পষ্ট করে দিয়েছে– সামনে যে ভোটই থাকুক– তৃণমূল কংগ্রেসের পাখির চোখ এখন ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ লড়াইয়ের বিশ্বস্ত সঙ্গী সুব্রত বক্সী। দল তাঁকে যোগ্য সাংগঠনিক নেতা হিসেবেই চেনে। দক্ষিণ থেকে উত্তরবঙ্গ– দলের সংগঠন মজবুত করার ভার সুব্রতবাবুর চওড়া কাঁধেই তুলে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই দলনেত্রীর দেখানো পথে– সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন সুব্রতবাবু।
এই নিরিখেই তিনি চান– দলীয় কর্মীরা এখন থেকেই ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুক। প্রবন্ধে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন– তৃণমূল কংগ্রেস ভয় পেতে শেখেনি। অরাজকতার কাছে হার স্বীকার করা– তৃণমূল কংগ্রেসের ধাতে নেই। লড়াই যতই কঠিন হোক– তা জেতা সম্ভব। প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য হাতে যথেষ্ট সময়ও রয়েছে। আর সেই জন্যই দলীয় নেতা ও কর্মীদের তিনি এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রবন্ধে তিনি স্মৃতিচারণ করেছেন রাজ্যে তৃণমূলের ক্ষমতায় আসার দিনগুলোকে। লিখেছেন– ৩০০র বেশি আসন নিয়ে ফের ক্ষমতায় এল সাম্প্রদায়িক সরকার। বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে ততদিনে দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বহু চাপান উতোর পার করে– সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সংঘবদ্ধ করে ২০১১র ২০ মে বাংলার ক্ষমতায় এসেছেন তৃণমূল কংগ্রেসনেত্রী। সেই ঐতিহাসিক বিধানসভা নির্বাচনে ২৭ দিনে ১৮৭টি জনসভার মধ্যে দিয়ে বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রবন্ধে সুব্রতবাবু জানিয়েছেন– সেই লড়াই ছিল দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বাংলার বুকে চেপে বসে থাকা বামশাসনের জগদ্দল পাথরের বিরুদ্ধে। আর এবারের লড়াই সাম্প্রদায়িক বিজেপির বিরুদ্ধে। এবারের লড়াইয়ে কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হবে– প্রবন্ধে তার পথও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। জানিয়েছেন– এই লড়াই গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়ে নয়। হবে– গণতান্ত্রিক উপায়ে। নিরবিচ্ছিন্ন উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার বুকে নদীর স্টেËাতের মতো বইয়ে দিয়েছেন– সেই স্টেËাতে সামিল হয়ে– জনসাধারণকে সামিল করার মধ্যে দিয়েই চলবে লড়াই। নৈরাজ্যের পাশাপাশি চলবে– নেই রাজ্যের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ। রাজ্যকে আর্থিক ক্ষেত্রে পঙ্গু করে রাখার কেন্দ্রীয় অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে উন্নয়নের রাস্তায় হেঁটেই দেওয়া হবে উপযুক্ত জবাব।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন