রাহুল গান্ধী এসম্পর্কে আরও বলেন, সাধ্বী প্রজ্ঞার ওই মন্তব্য আদতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) মনের কথা। বিজেপির অন্তরের কথা। প্রজ্ঞা যা বলেছেন আরএসএস ঠিক সেটাই মনে করে। বিজেপিও বিশ্বাসী সেই একই মতাদর্শে।
সাধ্বী প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে বহুলালোচিত মালেগাঁও বিস্ফোরণের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৮ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সাবেক ইউপিএ সরকারের আমলে মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডে গ্রেফতার হন সাধ্বী প্রজ্ঞা। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হামলা চালানোর ঘটনাকে সেই সময় ওই ঘটনাকে ‘গেরুয়া সন্ত্রাস’বলে চিহ্নিত করা হয়। জামিনে মুক্ত থাকা প্রজ্ঞা ঠাকুরকে বিগত লোকসভা নির্বাচনে ভূপাল থেকে বিজেপি এমপি নির্বাচনে প্রার্থী করে এবং তিনি জয়ী হন।
এদিকে, সাধ্বী প্রজ্ঞার মন্তব্যকে আজ বৃহস্পতিবার বিজেপির পক্ষ থেকে নিন্দা করা হয়েছে। বিজেপির কার্যনির্বাহী সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেন, ‘সংসদে করা ওই মন্তব্য নিন্দনীয়। বিজেপি কখনও এধরণের বিবৃতি বা মতাদর্শকে সমর্থন করে না।’ তিনি বলেন, ‘লোকসভার চলতি অধিবেশনে বিজেপি’র সংসদীয় দলের বৈঠকগুলোতে প্রজ্ঞাকে উপস্থিত থাকতে নিষেধ করা হয়েছে।’
সম্প্রতি সাধ্বী প্রজ্ঞাকে প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য করা হয়েছিল। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওই থেকে কমিটি থেকে প্রজ্ঞাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, লোকসভায় বিজেপি এমপি প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরের বিতর্কিত বক্তব্যকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও তাঁদের সহযোগী দল তাঁর বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রজ্ঞার বক্তব্য সম্পর্কে সংসদে ক্ষমতাসীন দল যে সাফাই দিয়েছে তাতে বিরোধী দলগুলো সন্তুষ্ট নয়। সেজন্য প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এরইমধ্যে অধীর রঞ্জন চৌধুরী, দয়ানিধি মারান, মনিকা ঠাকুর, এন কে প্রেমচন্দ্রনসহ ৫০ জন এমপি লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে বলেছেন যে, সংসদে প্রজ্ঞা ঠাকুর নাথুরাম গডসেকে দেশপ্রেমিক বলে মহাত্মা গান্ধীকে অপমান করেছেন।
এদিকে, মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি প্রজ্ঞা ঠাকুরের বিরুদ্ধে বিশেষ অধিকার হননের প্রস্তাব পেশ করেছেন। ওয়াইসি বলেন, উনি নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। গডসের প্রশংসা করে প্রজ্ঞা ঠাকুর ৩৪৯ ও ৩৫২ বিধি লঙ্ঘন করেছেন। তিনি সন্ত্রাসবাদের প্রশংসা করেছেন।
কংগ্রেস এমপি শশী থারুর প্রজ্ঞা ঠাকুরের মন্তব্য সম্পর্কে বলেছেন, বিজেপি তাঁকে টিকিট দিয়েছে এমনকি সংসদে পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। তাঁকে সংসদীয় দলের সভায় যেতে না দেওয়া হলে তাতে কী হবে? উনি ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তাকে সংসদে বসার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। আমরা নিন্দা প্রস্তাবের দাবি জানাচ্ছি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন