এম এ হাকিম, বনগাঁ : উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিজেপি সভাপতি শঙ্কর চ্যাটার্জির অপসারণ চেয়ে ঠাকুরনগরে বিক্ষোভ-মিছিল করলেন বিজেপি’র একাংশের নেতা-কর্মীরা। রবিবার দুপুরে ওই কর্মসূচিতে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী- সমর্থকরা। পরে তারা জেলা সভাপতির কুশপুতল দাহ করেন। ওই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট বিজেপি’র জেলা সভাপতির অপসারণের দাবিতে ঠাকুরনগরে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। সেই ঘটনার জের না মিটতেই মাত্র ৮ দিনের ব্যবধানে ফের জেলার বিজেপি সভাপতি শঙ্কর চ্যাটার্জির অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ-মিছিল এমনকি কুশপুতল পোড়ানো হল।
বিপ্লব সরকার নামে এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘শঙ্কর চ্যাটার্জি যেদিন থেকে জেলা সভাপতি হয়েছেন, সেদিন থেকে বিজেপিকে ক্ষতি করার জন্য, বিজেপিকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। উনি তৃণমূলের সঙ্গে গটআপ করেছেন। এজন্য আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ শঙ্কর চ্যাটার্জিকে পদ থেকে অপসারণ না করা হলে আগামী ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন আমাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে যাবে বলেও বিজেপি নেতা বিপ্লব সরকার মন্তব্য করেন।
এদিন, ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা-কর্মীরা জেলা বিজেপি সভাপতির ছবিতে জুতোপেটা করেন এবং পরে তার কুশপুতল দাহ করেন। তারা এসময় শঙ্কর চ্যাটার্জি হটাও, বিজেপি বাঁচাও, দেশ বাঁচাও স্লোগানে সোচ্চার হন। বিক্ষোভরত কর্মীরা এসময় ‘নারী লোলুপ সমাজবিরোধী জেলা সভাপতি, মাতাল শঙ্কর চ্যাটার্জিকে অপসারণ করতে হবে’ লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা এদিন ব্যানারে ‘বারাসাত জেলা বিজেপি বাঁচাও কমিটি’ নাম দিয়ে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে তা আমাকে না জানিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো উচিত। আমি সাংসদ মাত্র। সাংগঠনিক কোনও পদে নেই। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানান উচিত।’
এ ব্যাপারে বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা তৃণমূল বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘সপ্তাহখানেক আগে আমরা এধরণের আর একটা ‘নাটক’ আমরা ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে দেখেছিলাম। এটা ওদের দলীয় কোন্দল, এনিয়ে আমাদের কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়। কিন্তু এটা যে একটা ‘নাটক’ এতে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ, ওদের কৌশলই হচ্ছে নাটক, চমক, ধমক, এসব নিয়ে ওরা রাজনীতি করে। ওদের আদর্শ বলতে কিছু নেই। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ওদের অভিযোগ, কিন্তু শান্তনু ঠাকুরের (সাংসদ) বাড়িতে কুশপুতল দাহ, ঠাকুরনগরে মিছিল, এসবের তাৎপর্য বোঝা মুশকিল। কারণ শান্তুনু ঠাকুরের কোনও দলীয় পদ আছে বলে আমার জানা নেই।’
রাজ্য কমিটির কাছে স্মারকলিপি না দিয়ে ঠাকুরনগরে চমক দেখানো আমার মনে হয় নিজের (শান্তনু ঠাকুর) গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য এটা একটা গটআপ, নাটক ছাড়া আর কিছু নয় বলেও বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস মন্তব্য করেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন