জেরুসালেম, ১৭ অক্টোবরঃ আবারও একটা ফিলিস্তিনি স্কুল ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল ইসরাইলি সেনাবাহিনী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক অনুদানে নির্মিত হয়েছিল এই প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওয়েস্টব্যাঙ্কের রামাল্লার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত স্কুলটি বুলডোজার চালিয়ে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয় বলে শুক্রবার জানায় প্যালেস্টানিয়ান ইনফরমেশন সেন্টার। বেদুইন রাস-আল-তিন জনগোষ্ঠীর জনা পঞ্চাশেক কচিকাঁচা এই স্কুলে পড়ত। এখন আর ওই এলাকায় কোনও স্কুল নেই। এখানকার ছেলেপুলেদেরকে ৫ কিমি. পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হবে আল-মুঘাইয়া গ্রামের স্কুলে।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল বলেছে, ইসরাইলি আগ্রাসন ও দখলদারীর মাত্রা ক্রমেই ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে একের পর এক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ কোনও কিছুকেই রেয়াত করা হচ্ছে না। বেছে বেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফিলিস্তিনের নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার ঔদ্ধত্য প্রকাশ করছে দেশটি। কাউন্সিলের রিজিওনাল ডিরেক্টর কারস্টেন হানসেন বলেছেন, এমনিতেই ফিলিস্তিনিরা নির্যাতীত-নিপীড়িত জাতি। ইসরাইল তাদের ওপর বছরভর জুলুম ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালায়। ফলে দেশটির আর্থ-সামাজিক মেরুদণ্ড পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। বেকারত্বের হার লাগামছাড়া। অধিকাংশ কল-কারখানা ও কর্মক্ষেত্র ইসরাইলি বিমান হামলায় ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু স্কুল ধ্বংস করে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার হীন কৌশল বরাদাস্ত করা যায় না। কারস্টেনের কথায়, শিক্ষা-স্বাস্থ্য মানুষের মৌলিক অধিকার।
উল্লেখ্য, গতমাসে ইসরাইল নোটিশ দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল, এর নির্মাণের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন নেওয়া হয়নি। তাই তারা অবৈধভাবে নির্মিত স্কুলটা ৩০ দিনের মধ্যে ভেঙে দেবে। চলতিবছর তিনটে স্কুল ভাঙল ইসরাইল। আরও ৫২টা স্কুল ভাঙার হুমকি দিয়েছে। গতবছর ৩২৮টা স্কুলের পঠনপাঠনে নানাভাবে বিঘ্ন ঘটিয়েছে ইসরাইল। কোথাও শিক্ষক-পড়ুয়াদের ওপর হামলা, হেনস্থা কিংবা অপহরণ। কোথাও স্কুল মেরামতির কাজ আটকে দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে স্কুল-ই ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন