এস জে আব্বাস, শক্তিগড়: মধ্য শিক্ষাপর্ষদ, মাদ্রাসা শিক্ষাপর্ষদসহ বিভিন্ন বোর্ডের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের এ বছর পুরস্কৃত করল রাজ্য সরকার। ল্যাপটপ, হাতঘড়ি, বই প্রভৃতি পুরস্কার সামগ্রী তথা সম্মাননা পেয়ে শিক্ষার্থীরা কৃতজ্ঞ রাজ্য সরকারের প্রতি। জানা গেছে, এবছরই প্রথম তপশিলি জাতি সহ অন্যান্য বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পাশাপাশি সারা রাজ্য থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের মাধ্যমিকের ১৮ জন কৃতি আদিবাসী ছাত্রছাত্রীকে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়েছে। এদের মধ্যে বর্ধমান জেলার তিনজন হলেন, তেঁতুলমুড়ি হাই মাদ্রাসার মঙ্গল টুডু, ওরগ্রাম চতুষপল্লী হাই মাদ্রাসার জবা হেমব্রম এবং পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসার তনুশ্রী বাস্কি।
উল্লেখ্য, একটা সময় ধারণা ছিল মাদ্রাসায় শুধুই আরবি বিষয় পড়ানো হয় এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরাই সেখানে পড়াশোনা করতে পারে। কিন্তু আসলে তা কখনোই ছিল না। ক্রমশ ধারণা পাল্টেছে। ধারণা পাল্টাতে সাহায্য করেছে মাদ্রাসা শিক্ষায় বিশেষত অমুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণ এবং তাদের চমকপ্রদ সাফল্য। সূত্র মারফত জানা গেছে, বর্তমানে সারা রাজ্যের মাদ্রাসায় প্রায় ১৫ শতাংশেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী অমুসলিম সম্প্রদায়ের। এমনকি, এমন অনেক মাদ্রাসা আছে, যেখানে অর্ধেকের বেশি ছাত্র-ছাত্রীই অমুসলিম সম্প্রদায়ের।
গলসির তেঁতুলমুড়ি হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমানারা খাতুন জানান, 'প্রথম থেকেই দেখছি আমার মাদ্রাসার অনেক তফশিলি জাতি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা স্কুল অপেক্ষা মাদ্রাসাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আমার ছাত্র মঙ্গল টুডু একেবারে দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে এমনকি মাঠে-ঘাটে কাজ করে যেভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাবার চেষ্টা করছে এবং সফলতা পাচ্ছে তাতে আমরা মুগ্ধ। আমরা সর্বতোভাবে তার পাশে আছি। এমনকি মাদ্রাসা বোর্ডের তরফেও তাকে পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।' অন্যদিকে, মঙ্গল টুডুর মা জানান, 'যদি একবেলা না খেয়েও থাকতে হয় তবুও আমার ছেলেকে পড়াশোনা করাবো।তাছাড়া রাজ্য সরকার যেভাবে পড়াশোনার জন্য উৎসাহিত করছে তাতে আমাদের আশা আমার ছেলে অনেকদূর পর্যন্ত পড়তে পারবে।'
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন