আবদুল ওদুদ
কলকাতার ৪৪ নম্বর পাম অ্যাভিনিউতে রয়েছে শামসুল উলেমা মাওলানা সাইফুল্লা ওয়াকফ এস্টেট। ইসি নম্বর-১৫১৯। এখানে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা বিপজ্জনক বাড়িটিকে ভেঙে ফেলেছে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড। প্রায় ১৮ কাঠা জমির উপরে ছিল বাড়িটি। সেখানে গার্লস হস্টেল করার উদ্যোগ নিল রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড। বোর্ডের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুল গণি সাহেবের উদ্যোগে এই জমিটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। শহর এবং গ্রামের মেয়েদের উচ্চশিক্ষিত করার জন্য ১৫০ বেডের একটি হস্টেল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড।
পাশাপাশি এখানে তৈরি করা হবে একটি কমিউনিটি সেন্টার এবং লাইব্রেরি। আবদুল গণি বলেন, শহরে বহু সংখ্যালঘু পরিবার রয়েছে যাদের বাড়িতে পড়াশোনার পরিবেশ থাকে না। এই সমস্ত মহিলাদের কথা ভেবে এখানে একটি লাইব্রেরি করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। বাড়ির ঘিঞ্জি পরিবেশে পড়াশোনা করতে হয়। এই সমস্ত ছাত্রী যাতে পাম অ্যাভিনিউয়ের লাইব্রেরিতে এসে ঘণ্টা দু’য়েক পড়াশোনা করতে পারে তার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অর্থ বরাদ্দের জন্য এমএএমই বিভাগে প্রোপোজাল পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, সংখ্যালঘু দফতরের সেই প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। পাম অ্যাভিনিউয়ের এই মূল্যবান সম্পত্তিটির বর্তমান বাজার মূল্য ব্যাপক। দীর্ঘকাল ধরে জমিটি পড়েছিল। জমি মাফিয়ারা যাতে দখল করতে না পারে তার জন্য বোর্ডের পক্ষ থেকে দু’জন নিরাপত্তারক্ষীনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৭-৮ মাস আগে চেয়ারম্যান সাহেবের নজরে আসে। এর পরই বিপজ্জনক বাড়িটিকে ভেঙে ফেলা হয়। পাশে রয়েছে একটি ছোট্ট মসজিদ। তিনি বলেন, প্রতিবছর কলকাতায় উচ্চশিক্ষার জন্য মেয়েদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সেই অর্থে হস্টেল গড়ে উঠেনি। একে ফজলুল হক গার্লস হস্টেলের পর শহর কলকাতায় এটি তৃতীয় হস্টেল নির্মিত হতে যাচ্ছে।
চেয়ারম্যান বলেন, উত্তববঙ্গের কয়েকটি জেলা কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, মালদা, মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুর থেকে বিপুল সখ্যক মেয়েরা কলকাতায় উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য আসছে। তাদের থাকার সুযোগ করে দিতেই ওয়াকফ বোর্ড তৃতীয় গার্লস হস্টেল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ওয়াকফ বোর্ডের সিইও নাভেদ আখতার বলেন, দক্ষিণ কলকাতার পাম অ্যাভিনিউয়ের সম্পত্তিটি অত্যন্ত মূল্যবান। এখানে একটি গার্লস হস্টেল নির্মিত হলে ১৫০ জন ছাত্রী নতুন করে সুযোগ পাবে। হস্টেলটিতে ইসলামি কালচার অনুসরণ করে থাকতে পারবেন ছাত্রীরা। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান আবদুল গণি সাহেব নারী শিক্ষা উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক। তাঁর সেই আন্তরিকতাকে মর্যদা দিয়ে যাতে কাজ দ্রুত শুরু করা যায় সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।
রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের বিশেষ সচিব ওবাইদুর রহমান বলেন, ওয়াকফ বোর্ড থেকে পাম অ্যাভিনিউতে গার্লস হস্টেল এবং কমিউনিটি সেন্টার তৈরি করার প্রস্তাব এসেছে। আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই হস্টেল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হবে। ওয়াকফ বোর্ডের একটি ভালো উদ্যোগ সংখ্যালঘু দফতর চেষ্টা করছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন