(সাঁতরাগাছি ঝিলে পরিযায়ী পাখিদের ভিড়)
পুবের কলম প্রতিবেদক, হাওড়া: করোনাকালে লকডাউনের জেরে প্রাক শীতকালীন আবহেই প্রায় হাজার চারেক নানান প্রজাতির পরিযায়ী পাখি ভিড় জমাচ্ছে সাঁতরাগাছি ঝিলে। সূত্রের খবর, এবছর ঝিলে ইতিমধ্যেই সাঁতরাগাছিতে ‘লেসার হুইসলিং’ ডাক চলে এসেছে। করোনার জেরে এককালীন দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল যান-চলাচল। যা দূষণ কমার অন্যতম কারণ। এছাড়াও এবছর কালীপুজো ও দীপাবলি উপলক্ষ্যে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ ছিল। পরিবেশবিদের মতে, মূলত এই কারণগুলিই প্রকৃতির হারানো ভারসাম্য ফিরিয়ে এনেছে। জানা গেছে, প্রায় ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে পরিযায়ী পাখিদের শীতকালীন আবাসস্থল এই ঝিল। হাওড়ার জেলা বন আধিকারিক রাজু সরকার জানান, সাধারণত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যে বেসরকারি সংস্থার সাহায্যে সাঁতরাগাছি ঝিলে পাখি সুমারির কাজ হয়। এখনও পর্যন্ত এবছর প্রায় হাজার চারেক পাখি এসেছে বলে জানান তিনি। বিশিষ্ট পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের মতে, এ বছর দূষণের মাত্রা কম থাকায় বেশি সংখ্যক পরিযায়ী পাখির দেখা পাওয়া যাবে। জানা গেছে, দর্শক আগমনের আশায় এ বছরেও সাঁতরাগাছি ঝিলের কচুরিপানা পরিষ্কার ও পরিযায়ী পাখিদের জন্য ভাসমান দ্বীপ তৈরির কাজ যথাযথ সময়ের মধ্যেই শেষ করা হয়েছে।
পক্ষী গবেষক তথা শ্যামপুর সিদ্ধেশ্বরী মহাবিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক প্রসেনজিৎ দাঁ বলেন, ‘বর্তমানে কোভিড অতিমারির পরিস্থিতির জেরে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার বহু পরিবর্তন হয়েছে। করোনার আগে যেসব পাখিদের লোকালয়ে দেখা যেত না, এখন তাদের খুব সহজেই দেখা যায়।’
অপরদিকে, হাওড়া পুরসভার বিদায়ী পুরবোর্ডের প্রাক্তন মেয়র ডা. রথীন চক্রবর্তী জানান, ‘এতদিন ট্রেনের হর্নের আওয়াজে পরিযায়ী পাখিদের জীবনযাত্রায় বিঘ্ন ঘটত। পরে বিষয়টি নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে জাননো হলে তারা ওই এলাকা ‘নো হর্ন জোন’ করার পরিকল্পনা নেয়। সর্বোপরি, বছরভর অপেক্ষায় থাকা এক দর্শক জানায় সারা বছরই অপেক্ষায় থাকি কবে সাঁতরাগাছির ঝিলের পাখিরালয়ে পাখি দেখতে যাব।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন