পুবের কলম প্রতিবেদকঃদেশে এখনও করোনা সংক্রমণ পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। বরং দেশ অপেক্ষা করে আছে করোনা ভ্যাকসিন কবে আসছে সে দিকে। আশার কথা এই মুহূর্তে অনেকগুলি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। আশা করা হচ্ছে সামনের বছরের শুরুতেই অনেকগুলি ভ্যাকসিন বাজারে চলে আসবে। এই অবস্থায় কোন পথে সেই ভ্যাকসিন রাজ্যগুলির হাতে তুলে দেওয়া হবে, তারজন্য বিস্তৃত আলোচনা জরুরি। মঙ্গলবার সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আজ ২৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার হবে সেই বৈঠক। নবান্ন থেকে সেই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রীও। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কারণেই বাঁকুড়ার কর্মসূচিতে কাটছাঁট করেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির পরিবর্তন করে এ দিনই বাঁকুড়া পৌঁছে যান তিনি। আজ বাঁকুড়ায় ২টো কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। একটি হল প্রশাসনিক বৈঠক। অপরটি প্রশাসনিক সভা।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. হর্ষবর্ধন ক’দিন আগেই জানান যে ২০২১-এর গোড়ার দিকে ভারতে করোনার ভ্যাকসিন চলে আসবে। আর আগামী বছরের জুন-জুলাই মাসের মধ্যে ২৫ কোটি ভারতীয়কে করোনার ভ্যাকসিন দিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯১ লাখ। মোট আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে আমেরিকা। দ্বিতীয় স্থানে ভারত।
দেশে এখনও অবধি করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ২২৭ জনের। তবে সুস্থও হয়েছেন ৮৫ লাখের উপর মানুষ। এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৪০ হাজার ৯৬২ জন। অন্যদিকে, মোট ৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৭০ জন। আর করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় এখনও পর্যন্ত দেশের মধ্যে অষ্টম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
এই অবস্থায় কোভিডকে হারাতে প্রয়োজন ভ্যাকসিনের। আর সেই ভ্যাকসিন চলতি বছরের মধ্যেই দেশের সব রাজ্যগুলির হাতে তুলে দেওয়া শুরু করবে কেন্দ্র সরকার। ঠিক তার আগে দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক সেরে ফেলতে চান প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকে মূলত ভ্যাকসিন কীভাবে সংরক্ষণ ও বণ্টন করা হবে এবং প্রথম পর্যায় কারা তা পাবেন, সেই নিয়েই আলোচনা হবে। আর এই অতি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের কারণেই এই বৈঠক। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে কোভিডের ভ্যাকসিনের জন্য ২৫ হাজার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সদের চিহ্নিত করার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছেন ৫০ বছরের উপরে থাকা মানুষেরা। যোগ হবে ৫০ বছরের নীচে থাকা সেই সব মানুষও যাদের কো-মবোর্ডিটি রয়েছে। এর পাশাপাশি এসে যাবে ভ্যাকসিন কীভাবে সংরক্ষণ করা হবে, তা নিয়ে যথাযথ পরিকল্পনা। কলকাতায় এই ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রয়েছে। কিন্তু জেলাগুলিতে সেই পরিকাঠামো কতটা পাওয়া যাবে ইতিমধ্যেই তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করে দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। সেই সঙ্গে থাকছে যাঁরা এই ভ্যাকসিন দেবেন তাঁদের যথাযথ প্রশিক্ষণের বিষয়টিও। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে এই সবই উঠে আসবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন