আবদুল ওদুদ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পীঠস্থান হিসাবে পরিচিত ছিল এই বাংলা। কিন্তু একটি সাম্প্রদায়িক শক্তি এই বাংলায় ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি শুরু করেছে। ফলে এই বাংলায় সেই সম্প্রীতির পীঠস্থান ক্রমশই ফিকে হয়ে যাচ্ছে। এই ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি যাতে বাংলায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে তার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শনিবার খিদিরপুরে অল বেঙ্গল জেলা ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভায় এমন বার্তা দিলেন জেলা ইমাম প্রতিনিধিরা। ২৩টি জেলার জেলা ইমাম কো-অর্ডিনেটর নিয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় সংগঠনের প্রেসিডেন্ট এবং কলকাতা জেলা ইমাম কো-অর্ডিনেটর আহমদ আলি ওয়ারসী বলেন, বাংলায় বিভেদের রাজনীতি কখনও মেনে নেওয়া হবে না, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি শুরু করতে চাইছে কেন্দ্রের শাসকদল। তাদের এই ফাঁদে কোন ইমাম-মুয়াজ্জিন পা দেবেন না বলে আহমদ আলি ওয়ারসী জানান।
এ দিন তিনি বলেন, রাজ্যের মু্যূমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়ার কাজ শুরু করেন। পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র রাজ্য যেখানে প্রথম ইমাম-মুয়াজ্জিন ভাতা চালু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আহমদ আলি ওয়ারসী বলেন, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজেই তাঁর হাতকে শক্ত করতে ইমামদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, উত্তরপ্রদেশ, অসমে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে। সেূানকার সংখ্যালঘু মুসলিমদের সঙ্গে কী আচরণ করা হচ্ছে এই সমস্ত ঘটনা সংবাদমাধ্যমে এসেছে। অসমে সরকারি মাদ্রাসাগুলি বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিজেপি।
কাজেই এ রাজ্যে যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে তাহলে সংখ্যালঘুদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ইমাম কো-অর্ডিনেটর মাওলানা হাসানুজ্জামান বলেন, ওয়াকফ বোর্ড নিযুক্ত ইমামদের সরকার যথেষ্ট সম্মান দিয়েছে। আগামী দিনে এ রাজ্যে যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে ইমামদের সেই অধিকার কেড়ে নেবে। তিনিও ইমামদের সতর্ক করে বলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির দিকে তাকিয়ে দেখুন, সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলিমরা কেমন আছেন। সংখ্যালঘুদের কীভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে বিজেপি শাসিত রাজ্য গুলিতে। তাদের ধর্মীয় অধিকারও কেড়ে নিচ্ছে। কি খাবে, কি পড়বে সবই ঠিক করে দিচ্ছে আরএসএস পরিচালিত বিজেপি সরকার।
বিজেপির ধর্মীয় মেরুভবনের রাজনীতিতে পা না দিয়ে যে দল ইমামদের মর্যাদা দিয়েছে তাদের পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুরের ইমাম কো-অর্ডিনেটর ক্বারি মোস্তাক আহমেদ বলেন, শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে গেলে তৃণমূলের উপর কােনও প্রভাব পড়বে না। জেলার মুসলিমরা বুঝে গেছেন আসলে তিনি কী চাইছেন। আগামি দিনেও সমস্ত ইমাম-মুয়াজ্জিনদের নিয়ে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে তৃণমূলের হয়ে কাজ করবে বলে তিনি জানান। এদিন আরও উপস্থিত ছিলেন,পূর্ব মেদিনীপুরের শেখ শাহাদাত আলি, দক্ষিণ দিনাজ পুরের সলিমুদ্দিন মিয়া, উত্তর দিনাজপুরের মফিজউদ্দিন, হাওড়ার আইয়ুব আলি প্রমুখ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন