নির্মাল্য সেনগুপ্ত,কলকাতাঃকরোনা আবহে অন্যান্য উৎসবের মতো আসন্ন বড়দিন ও বর্ষশেষের উৎসবও পালিত হতে চলেছে নানা বিধিনিষেধের মাধ্যমে। একদিকে প্রশাসন, অন্যদিকে উৎসবের উদ্যোক্তারাই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে উৎসবে ভিড় কমাতে তৎপর হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ক্যাথলিক চার্চ নিজেদের শতাধিকবর্ষের ঐতিহ্য ভঙ্গ করে জানিয়ে রেখেছে, করোনায় সুরক্ষাবিধি বজায় রাখার জন্য এবার বড়দিনে মধ্যরাতে চার্চে ভিড় জমানো যাবে না। এ প্রসঙ্গে আর্চবিশপ থমাস ডিসুজা একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে তিনি স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য এ বছর মধ্যরাত পর্যন্ত চার্চে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এতে বড়দিন উৎসবের মধ্যে রাতের ভিড় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে তাঁদের আশা। তবে শহরের কিছু অংশ যেমন ,পার্ক স্ট্রিট চত্বর, অ্যালেন পার্ক,মধ্য কলকাতার বো ব্যারাক সহ চার্চগুলোতে যেভাবে প্রতিবার আলোরসজ্জায় সজ্জিত হয় তা এবারও যথারীতি হবে। তবে মধ্যরাত পর্যন্ত যে অনুষ্ঠানগুলোতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বেশি থাকে, সেগুলো সন্ধ্যেরাতের মধ্যেই যাবতীয় কার্যক্রম সঙ্কোচন করা হবে। একইসঙ্গে মধ্য কলকাতার বো ব্যারাকেও প্রতিবারের মতো সপ্তাহব্যাপী যে বড়দিনের উৎসব পালিত হয় এবার সেই কর্মসূচিতে বেশ কিছু বিধিনিষেধ থাকতে চলেছে। বো ব্যারাক রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি অ্যাঞ্জেলা গোবিন্দরাজ বলেন, এবার আমরা বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ নিয়েছি। অন্যান্যবারের মতো বো ব্যারাকে কোনও খাবারের স্টল বসানো এবং গান বাজনা আসরের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ থাকবে। উৎসবের দিনগুলোতে ওই এলাকায় ঢোকার ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই বড়দিন ও নিউ ইয়ার নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের কথায় যেভাবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের মাধ্যমে দুর্গোৎসব সহ নানা উৎসেব মানুষের ভিড় অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত ছিল, ঠিক একইভাবে যেন এবারেও মানুষের ভিড় জমায়েতের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ থাকে। তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কমবে। তাঁদের ব্যাখ্যা শীতের সময় ভাইরাস বেশি সক্রিয় থাকে। ফলে ফুসফুসে সংক্রমণের আশঙ্কাও বেশি থাকে। তার ওপর কোভিড পরিস্থিতি সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। পুলিশ সূত্রে খবর, বড়দিনের আগে পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে উৎসবের আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে সুরক্ষাবিধি মেনেই। খাবারের স্টলগুলি হবে দূরত্ববিধি রেখেই। কিন্তু অন্যান্য বারের মতো পার্ক স্ট্রিটে অবাধ প্রবেশের যে ঐতিহ্য, তা এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত হবে। তবে এখনই পুলিশ স্পষ্ট করেনি ঠিক কী পন্থায় ভিড় নিয়ন্ত্রিত হবে। তা নাকি এখনও পরিকল্পনাস্তরেই রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন