পুবের কলম প্রতিবেদকঃ মুসলিম তরুণের সঙ্গে প্রতিবেশী হিন্দু কন্যার বিবাহ আটকে দিল পুলিশ। হাতিয়ার সেই নয়া ধর্মান্তর-বিরোধী আইন। লখনউয়ের দুদা কলোনির ঘটনা। এ দিকে পাত্রপাত্রীর বক্তব্য, ধর্মবদলের কোনও পরিকল্পনা তাঁদের ছিল না। পাঁচ বছর ধরে তাঁরা পরস্পরকে চেনেন। পাত্রীর মা জানালেন যে, এই বিয়েতে তাঁদের সম্মতি আছে এবং কেউ আটকাতে পারবে না। দুই পরিবারই জানালেন যে, ২৮ নভেম্বর এই আইন পাস হওয়ার আগেই বিয়ের পরিকল্পনা হয়েছিল। বিয়ের জন্য অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন আছে জানলে তাঁরা তা নিতেন। এমনটাই জানালেন উভয়ের পরিবার। পেশায় ফার্মাসিস্ট পাত্র বলেছেন, ধর্মান্তরণের কোনও প্রশ্নই নেই। এই নিয়ে কোনও আলোচনাও হয়নি। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘যদি দু’জন পরস্পরকে ভালোবাসে তাহলে আমরা যে যেমন সেভাবেই উভয়কে গ্রহণ করতে পারি। যদি পাত্রী হিন্দু হন, আমি তাঁর ধর্ম গ্রহণ করতে পারি এবং বিপরীতটাও ঘটতে পারে।’ হিন্দু আচার মেনেই বিয়ে হচ্ছিল তাঁদের। কিন্তু এই বিয়ে নিয়ে অভিযোগ করে হিন্দুত্ববাদী দল রাষ্ট্রীয় যুব বাহিনী। এরপর পুলিশ বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। যদিও কোনও মামলা দায়ের হয়নি। কনের মা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘আমার মেয়ে কাকে বিয়ে করবে সেটা অন্যের চিন্তার বিষয় নয়। আমরা একটা মিশ্র কলোনিতে বাস করেছি সারাজীবন এবং মুসলিমদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে। তাহলে আমার মেয়ে কেন একজন মুসলিমকে বিয়ে করতে পারবে না?’ প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কনের মা রান্নার কাজ করেন এবং বাবা গাড়িচালক। পাত্রের বাবা রিকশাচালক। মা কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। পাত্রের কথায়, এটা ‘লাভম্যারেজ’ও নয়। দুই পরিবার মিলে এই বিয়ে ঠিক করেছে। আইনজীবী মুক্তেশ্বর মিশ্র বলেছেন, যদি তাঁদের ধর্মান্তরণের অভিপ্রায় না থাকে তাহলে নয়া আইন তাঁদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। তবে বিশেষ বিবাহ আইন মেনে এই বিয়ে করতে হবে। লখনউয়ে (দক্ষিণ) ডিসিপি রবি কুমার জানিয়েছেন, নতুন আইনের কপি দুই পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে, তাও জানানো হয়েছে। এই বিয়েতে কোনও অপরাধ সংঘটিত হয়নি তাই কোনও মামলা দায়ের করা হয়নি। এ দিকে, রাষ্ট্রীয় যুব বাহিনীর জাতীয় সভাপতি কে ডি শর্মার দাবি, তাদের দলের সংখ্যালঘু শাখার রাজ্য প্রধান ইয়াসির খান এই বিয়ে নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন