লখনউ, ৪ ডিসেম্বর: দুই পরিবারের সম্মতিতেই লখনউয়ে হচ্ছিল একটি আন্তঃধর্মীয় বিবাহ। পুলিশ গিয়ে বাধা দেয়। এর ফলে ধর্মান্তরবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ তাঁরা। অনুষ্ঠান শুরুর ঠিক আগেই পুলিশ এসে বাগড়া দেয়। তরুণ প্রযুক্তিবিদ মারুফ আলি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন,এটাই ঘটতে চলেছে। বিবাহ হবে কিনা তা ঠিক করে দেবে পুলিশ। আদালত জানিয়েছে, উভয়ের সম্মতিক্রমে দু’জনে একসঙ্গে থাকতে পারবে কিন্তু এই আইনে পুলিশই ঠিক-ভুল বিচার করছে। কন্যাপক্ষের এক আত্মীয় শিরীষ গুপ্তাও মনঃক্ষুণ্ণ। তিনি বলেন, দুই পরিবারের উপস্থিতিতেই বিয়ে হচ্ছিল কিন্তু পুলিশ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। অতিথিরা আহার না করেই ফিরে গিয়েছেন। স্বাধীন ভারতে এমন ঘটতে পারে, তা তিনি কল্পনাও করতে পারছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাওলানা বলেছেন, যা অনুমান করা হয়েছিল তা বড় দ্রুতই শুরু হয়ে গেল। পুলিশই এখন দেশ চালাচ্ছে এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা আইন দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, হিন্দু মহাসভার জেলা সভাপতি ব্রীজেশ শুক্লা এই বিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। পুলিশ তারপরই বিয়ের আসরে হাজির হয় যেখানে ২২ বছরের রায়না গুপ্তার সঙ্গে তাঁর বাল্যবন্ধু ২৪ বছরের মুহাম্মদ আসিফের বিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। হিন্দু ও মুসলিম দুই রীতিতে বিয়ের আচার পালনের কথা ছিল। অতিরিক্ত ডিসিপি (দক্ষিণ জোন) সুরেশ রাওয়াতও একই কথা বলেছেন। পাশাপাশি বলেছেন, বিয়ে স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে নতুন আইনের ৩ ও ৮ ধারা মেনে। কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। কেন-না দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিবাহ হচ্ছিল। কনের বাবা বিজয় গুপ্তা বলেছেন, বিয়ের জন্য জোর করে ধর্মান্তরিত করার কোনও প্রশ্নই নেই এবং দুই পরিবারই নিঃশর্ত সম্মতি জানিয়েছে। পুলিশ এসে তাঁকে জানায় যে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি ছাড়া বিয়ে হতে পারবে না। রায়না ও আসিফকে এখন দুই মাস অপেক্ষা করতে হবে।
আরও একটি ঘটনা সামনে এসেছে উত্তরপ্রদেশে। এক মুসলিম যুবক আলিগড় আদালতে এক তরুণীকে আইনিভাবে বিবাহ করার জন্য উপস্থিত হলে তাঁকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে,২১ বছরের তরুণকে একদল পুলিশ জোর করে রিকশা করে নিয়ে যাচ্ছে। আর পাত্রীকে মহিলা কনস্টেবলরা যখন টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় তখন তিনি চিৎকার করে বলেন যে, তিনি প্রাপ্তবয়স্কা এবং ওই যুবকের সঙ্গে থাকতে চান। যুগলকে আলিগড়ের সিভিল লাইন থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। সার্কেল অফিসার অনিল সামানিয়া বলেছেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। ধর্মান্তর-বিরোধী আইন পাস হওয়ার পরই উত্তরপ্রদেশে ভিনধর্মী বিবাহে লাগাতার হস্তক্ষেপ করছে পুলিশ। এতে ক্ষুব্ধ দেশের একাংশ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন