পুবের কলম প্রতিবেদকঃ সোমবার কার্তিক পূর্ণিমায় যখন বছরের উজ্জ্বলতম চাঁদ দেখা গেল তখন দিল্লি সীমান্তে জাতীয় সড়ক ও তার আশপাশে হাজার হাজার কৃষক তাঁদের দাবি দাওয়া নিয়ে ঠান্ডায় শুয়ে রয়েছেন, সেখান থেকেও কি এতটাই উজ্জ্বল দেখা গিয়েছে চাঁদ? দেশের কৃষকেরা যখন এমতাবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কি না ব্যস্ত লাইট অ্যান্ড সাউন্ডে।
কার্তিক পূর্ণিমার রাতে বারাণসীতে দেব দীপাবলির উদ্যাপন হয়। এবারও হল। কিন্তু সোমবার সেই দীপের আলো এবং চাঁদের আলোকেও যেন ম্লান করে দিয়েছে,গোলাপি,হলুদ সহ বহুবর্ণের সব স্টেজ লাইট ও স্কাই লাইটের আলো। এটা যদি ব্যাকড্রপ হয়, মূল ফোকাসে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গমগম করে ‘ওম নমঃ শিবায়’ গান হচ্ছে। আর প্রধানমন্ত্রী একটি বজরায় দাঁড়িয়ে তাল ঠুকছেন। কখনও বা অন্য নৌকোর দিকে হাত নাড়ছেন। পরে সন্ধ্যায় আবার সারনাথে গিয়ে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই ছবি সামনে আসতেই ফের মোদির বিরুদ্ধে সরব বিরোধী শিবির।
একাধিক বিরোধী নেতার কথায়, কৃষকদের দাবি ন্যায্য কি ন্যায্য নয় সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। তাঁদের যদি কেউ ভুল বুঝিয়ে থাকে, তা হলেও তো এ দেশেরই কৃষক। গোটা দেশ তাঁদের বিক্ষোভের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। অথচ যেন সেদিকে কোনও ভ্রক্ষেপই নেই মোদির উলটে তিনি ব্যস্ত অনুষ্ঠান উদ্যাপন করতে!
রাজধানীতে কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে ফের মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি। কেন্দ্রের কালো কৃষি আইনের বিরোধিতা করে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে দেশের কৃষকরা দিল্লিতে এসেছেন। এখন ঠিক করতে হবে, সত্য ও অসত্যের লড়াইয়ে আপনি কাদের পাশে থাকবেন! রাজধানীতে কৃষক বিক্ষোভের মাঝে ভিডিয়ো-বার্তায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এমনই প্রশ্ন করলেন রাহুল।
কেন্দ্রের মোদি সরকারকে নিশানা করে রাহুল বলেন, কৃষকরাই হলেন দেশের শক্তি। প্রশ্ন ওঠে, আজ তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন কেন? হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে তাঁরা কেন দিল্লিতে আসছেন? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলছেন, নয়া কৃষি আইন কৃষকদের ভালোর জন্যেই। যদি তাই হয়, তাহলে কৃষকরা ক্ষোভে ফুঁসছেন কেন? চাষিরা খুশি নন কেন? আসলে এই আইন নরেন্দ্র মোদির পুঁজিপতি বন্ধুদের জন্য। এখন ঠিক করতে হবে, আমাদের কাদের পাশে দাঁড়াতে হবে! অন্নদাতা কৃষক নাকি প্রধানমন্ত্রীর ধনতন্ত্রী বন্ধু।
টুইটারে এ দিন কংগ্রেস সাংসদ লিখেছেন, ‘অন্নদাতারা রাস্তায় ময়দানে ধর্না দিচ্ছেন। কৃষকদের কঠোর পরিশ্রমের কাছে আমরা সকলেই ঋণী। ওঁদের ন্যায়, অধিকার দিয়েই এই ঋণ মেটানো যাবে, ওঁদের মারধর করে, লাঠি চালিয়ে,কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে নয়। জেগে উঠুন, অহংকারের কুর্সি থেকে নেমে ভাবুন এবং কৃষকদের অধিকার দিন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন