পুবের কলম আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইরানের বিদেশমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ জাভেদ জারিফ বিস্ফোরক অভিযোগে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাস চালাচ্ছে ইসরাইল। আর পশ্চিমারা তাতে অক্সিজেন জোগাচ্ছে। গত শুক্রবার ইরানের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ড. মহসিন ফখরিজাদেহকে হত্যার জন্য এদিনও সরাসরি ইসরাইলকে কাঠগড়ায় তোলেন জারিফ। বৃহস্পতিবার ইতালির রাজধানী রোমে মেড-২০২০ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ড. ফখরিজাদেহকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ইসরাইল। স্যাটেলাইট ট্র্যাক করে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সুপরিকল্পিতভাবে ওই সন্ত্রাসী হামলা চালায় ইসরাইলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ। আর এই পাশবিক কর্মকাণ্ডের জন্য পশ্চিমারাই ইসরাইলকে মদদ দিয়েছে। না-হলে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও পশ্চিমা বিশ্ব কেন এ ব্যাপারে একটা কথাও বলছে না। কেন তারা মুখে কুলপ এঁটে রয়েছে। এই নারকীয় হত্যার নিন্দা পর্যন্ত তারা করেনি।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন,ফিলিস্তিন,সিরিয়া,লেবানন,ইরাক,ইরান-সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তাই মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলি সন্ত্রাস মোকাবিলায় এই অঞ্চলের মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রোম থেকে তিনি বলেন, ইসরাইলি সন্ত্রাস নির্মূলের লড়াইয়ে ইরানের পাশে দাঁড়ান সবাই। কারণ, পশ্চিমারা ইসরাইলের সব সন্ত্রাস,পাশবিকতা,নৃশংসতা,বর্বরতাকে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে চলেছে। এমতাবস্থায় কিছু মুসলিম দেশ আবার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চুক্তি সই করা নিয়ে দর কষাকষিতে মেতেছে। এটা না করে বরং ইরানের পাশে দাঁড়ালে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলি-সন্ত্রাস দমনের লড়াই শক্তিশালী হবে।
জারিফ এও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে কাছে টানার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু তাদেরকে বুঝতে হবে আমরা একই অঞ্চলে বসবাস করি। আমাদের ভালোমন্দ আমাদেরকেই বুঝতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে বাইরে থেকে কেউ দাঁত ফোটাতে পারবে না। তাই মধ্যপ্রাচ্য ও সংলগ্ন অঞ্চলের দেশগুলোর উচিত ইসরাইল যাতে আমাদের অন্দরমহলে প্রবেশাধিকার না পায়। সেটা হলে কিন্তু পরিণাম ভয়াবহ হবে। তাঁর কথায়, ইসরাইল হল ক্যানসার। তবে জারিফ এদিন এও বলেন, আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। ট্রাম্পের বিদায়ের পর বাইডেন ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে থাকব। দেখি তারপর কী হয়। কিছু না-হলে,সংযমের মূল্য না দেওয়া হলে ইরান নিজের রাস্তা দেখে নেবে।
পরমাণু চুক্তি প্রসঙ্গে জারিফ এদিন বলেন, বাইডেনের নেতৃত্বে নতুন আমেরিকা সরকারকে নিঃশর্তে সমঝোতায় ফিরতে হবে এবং ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। তবেই পুরোদমে চুক্তিতে ফিরবে ইরান। অর্থাৎ, আমেরিকাকেই প্রথম পদক্ষেপ করে সদিচ্ছার প্রমাণ দিতে হবে। যেহেতু তারাই চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। ইরান কিন্তু তা করেনি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন