ইমতিয়াজ হুসেন |
বিশেষ প্রতিবেদক,কলকাতাঃরাজ্যের স্টেট কাউন্সিল অফ ইউনানি মেডিসিনের রেজিস্ট্রার ও তাঁর সহযোগী চক্রের প্রদত্ত জাল সার্টিফিকেট হাজার হাজার রোগীকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। ইউনানি ডাক্তার বা হাকিম হিসাবে প্র্যাকটিস করার জন্য এই জাল সার্টিফিকেট যাদের দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এদের বেশিরভাগেরই চিকিৎসা-জ্ঞানের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। আর যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গের ইউনানি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার ও কাউন্সিলে গড়ে ওঠা চক্রটি দুর্নীতির মাধ্যমে এই সার্টিফিকেটগুলো দিয়েছে বা বিক্রয় করেছে তাকে শুধু ‘দুঃসাহস’ বললে ভুল করা হবে। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে এদের বিন্দুমাত্র দ্বিধা হয়নি।
২০১৬ সালেও এই ইমতিয়াজ হুসেনকে আরও এক জালিয়াতি মামলায় গ্রেফতার করেছিল বিধাননগর থানার পুলিশ। এক্ষেত্রে জালিয়াতিটি ছিল আইনের দিক থেকে আরও ভয়ানক। ইউনানি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার ইমতিয়াজ হুসেন এক ব্যক্তিকে আয়ুর্বেদের চিকিৎসক হিসাবে প্র্যাকটিস করার জাল সার্টিফিকেট প্রদান করেন। পরে বিষয়টি রাজ্য আয়ুর্বেদিক কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তারা বিধাননগর থানায় এফআইআর করেন। তার ভিত্তিতেই জনাব ইমতিয়াজ হুসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এই মামলাটিও ইমতিয়াজ হুসেন যে কোনও প্রকারেই হোক মিটিয়ে নেন এবং ইউনানি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদে সগৌরবে বহাল থাকেন।
শতশত জাল ইউনানি সার্টিফিকেট প্রদানের মামলাটি ৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পুনরায় আদালতে ওঠে। বিধাননগর থানার পরামর্শে সরকারি উকিল অভিযুক্ত ইমতিয়াজ হুসেনের জামিনের বিরোধিতা করেননি, জেল হাজতও চাননি। কারণ ইমতিয়াজ হুসেন পুলিশকে নাকি বলে তিনি ‘বিভিন্ন রোগে অসুস্থ’। অথচ এই কোভিড পরিস্থিতিতেও কয়েকদিন আগে রেজিস্ট্রার জনাব ইমতিয়াজ হুসেন এক আনন্দ সফরে সপরিপারে দুবাই থেকে ঘুরে এসেছেন। আশ্চর্যের কথা, সরকারি উকিল ইমতিয়াজ হুসেনের জেল হাজতের জন্য কোনও অনুরোধ করেননি। ফলে তাকে পুলিশ হাজত থেকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। বিভিন্ন মহলে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, তবে কী তিনি ২০১৬ সালের মতো এবারও বেকসুর খালাস পেয়ে যাবেন? তাঁর সঙ্গে কী কোনও প্রভাবশালী মহলের অশুভ যোগাযোগ রয়েছে?
কীভাবে তিনি ইউনানি চিকিৎসকদের জাল সার্টিফিকেট প্রদানের কারবার ফেঁদেছিলেন সেই কাহিনী শ্বাসরুদ্ধকর এবং চিত্তাকর্ষক। এমনকী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ (আয়ূষ ব্রাঞ্চ) এই নিয়ে একটি ভিজিলেন্স কমিটি গঠন করে। আর তার রির্পোটেও বলা হয়েছে,সার্টিফিকেট প্রদান ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক দূর্নীতি রয়েছে। কিন্তু হলে কী হবে! সব কিছু উপেক্ষা করে স্বপদে বহাল থাকেন রেজিস্ট্রার ইমতিয়াজ হুসেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন