দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন, ১৩ জানুয়ারি: রাত পোহালেই মকর পূণ্য স্নান। কিন্তু কোভিডের কারণে মূল আখড়ার এক তৃতীয়াংশ বসছে।
কেন্দুলীর আশ্রম ছেড়ে ভিন্ন জেলায় রওনা দিচ্ছেন সাধক সাধিকারা । মন ভালো নেই তাদের।
বীরভূম জেলা প্রশাসন এবার মেলা করার অনুমতি দেয় নি।শুধু মাত্র পুন্যার্থীদের স্নান ও রাধা মাধব মন্দির পুজোর অনুমতি দিয়েছে। ভিড় কম হবে। এবার হিংলো বাঁধে জল নেই। সেই সুবাদে জল ছাড়া হচ্ছে না। তবে জয়দেবের স্নানের ঘাটে কোমর অবদি জল আছে বলে জানান বোলপুর মহকুমা শাসক।
এবার করোনা অতিমারীর কারনে প্রশাসন মাত্র ১০০ টি আখড়া অনুমতি দিয়েছে। মনের মানুষ আখড়ার সাধক সাধন দাস বাউলও মা গোঁসাই অর্থাৎ মাকি কাজুমীর সাথে কথা হয়েছে প্রশাসনের। তারাও সমর্থন করছেন সামাজিক দূরত্ব বিধি। তাই বছরের শ্রেষ্ঠ উৎসব ছেড়ে সাধন দাস চলেছেন বর্ধমানের আমরুল গ্রামের আখড়ায। তাঁর কথায়, "কেন্দুলী মেলায় মনের মানুষ আখড়া মানুষের পদ ধূলি তে ধন্য হয়ে ওঠে। আমরা বছর ভর অপেক্ষা করি এই কটা দিনের জন্য। কিন্তু করোনা অতিমারীর কারনে আখড়ায সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা কঠিন হবে তাই আমরাই আখড়া ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছি।যাতে মানুষ বাঁচে। "
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার করোনা অতিমারীর কারনে নিয়ন্ত্রিত মকর স্নানের জন্য ১৫ টি ওয়াচ টাওয়ার, ২০ হাজার মাস্ক, তিন টি মেডিক্যাল ক্যামপ, ৫০০ শৌচাগার তৈরি করে প্রশাসন। এছাড়াও করোনা রোধে ২০ বেডের আইসোলেশন সেন্ট্রার, ও ২০ বেডের কোয়ারেন্টাইনে সেন্ট্রার প্রস্তুত করেছে।
জয়দেবের আর একটি বিখ্যাত আখড়া 'তমাল তলা' সেখানেও বিষাদের সুর। সেখানেও হচ্ছে না কোন আস্তানা। বাউল সাধক লক্ষন দাস বাউলের কথায়, আমাদের মন ভালো নেই। মানুষ আমাদের সব। কিন্তু তাকে ডাকতে পারছি না। নিজে বাঁচার জন্য অন্য কে বাঁচানোর তাগিদেই আমরা এবার কোন নিমন্ত্রণ আমন্ত্রণ করি নাই। তবুও নিবেদন করি এবার আমরা সবাই যেন ঘরে বসেই বাউল সাধনায মেতে থাকি। "
সচেতনতা প্রচারে বাউল কীর্তন সম্প্রদায় ও অগ্রণী ভূমিকা নেবে,বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন