দেবশ্রী মজুমদার, বীরভূম, ১১ জানুয়ারিঃঅভিযোগের মাত্র তিন-চার ঘন্টার মধ্যেই ধরা পড়লো আদিবাসী কিশোরী গণ ধর্ষণের ছয় অভিযুক্ত। বাকি একজন প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তার খোঁজ চলছে। অভিযুক্তরা সকলেই নাবালক। তাদের প্রথমে রামপুরহাট হোমে এবং পরে জুভেনাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ রামপুরহাট থানার অন্তর্গত নারায়ণপুর অঞ্চলে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এক আদিবাসী গ্রামে। জানা গেছে, এই সময় আদিবাসীরা বাদনা পরব উৎসব মেতে ওঠে। গ্রামের মধ্যে আদিবাসীদের এক উপাসনালয়ে হাজির হয়ে তারা নিজেদের ধর্মাচারণের মধ্য দিয়ে এই উৎসব পালন করে। রামপুরহাট থেকে ৩০ কিমি দূরে ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী এই আদিবাসী এলাকায় সেই সুবাদে ছিল উৎসবের আমেজ। শনিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ এলাকার দুই কিশোরী অন্য পাড়ায় জিনিস কিনতে যায়। তারা উভয়েই স্কুল পড়ুয়া বলে জানা গেছে। দুই কিশোরীর বক্তব্য, তাদের সেই সময় জনা সাতেক যুবক মুখ চেপে দূরে এক জায়গায় নিয়ে গণ ধর্ষণ করে। এক নির্যাতিতার বাবা জানান, প্রথমে নির্যাতিতারা কাউকে বিষয়টি জানায় নি। পরে গোটা বিষয়টি পরিবারের লোকেদের জানালে, প্রথমে তাঁরা গ্রামের মাঝিহারামের কাছে বিচারের জন্য যান। মাঝিহারাম মালঙ্গ সোরেন তাঁদের ক’দিন অপেক্ষা করতে বলেন। বাদনা পরব মিটে গেলে সালিশি সভা ডাকবেন তিনি বলে জানান। কিন্তু আমরা অপেক্ষা করিনি। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ রামপুরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করি। তারপর রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক এস আহমেদের নেতৃত্বে, রামপুরহাট থানার আইসি দেবাশীষ ঘোষের সহ অন্যান্য পুলিশ অফিসার ওই গ্রামে রেড চালিয়ে তৎপরতার সাথে ৬ অভিযুক্তকে আটক করে নিয়ে আসেন।
নির্যাতিতাদের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় পুলিশি জবানবন্দী নেওয়া হয়েছে। রবিবার সিউড়ির জ্যুভেনাইল আদালতে নাবালক অভিযুক্তদের তোলা হলে তাদের ২৭ তারিখ পর্যন্ত বহরমপুরের বোস্টেল স্কুলে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই ছয়জনের চারিত্রিক গঠন বা কোন স্বভাবের ছিল তা জানার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য হলো, একজন ধর্ষকের বয়স মাত্র ১১ বছর।
উল্লেখ্য যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ধর্ষিতার নাম, গ্রামের নাম বা কোন ভাবে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না। তা শাস্তি যোগ্য অপরাধ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন