নয়াদিল্লি: দেশে পুরনো গাড়িকে বাতিল করার বিষয়ে নয়া নীতি তৈরিতে শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। এই নয়া আইনে ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি আর রাস্তায় নামানো যাবে না।
১ এপ্রিল, ২০২১ থেকেই এই নীতি কার্যকর করা হতে পারে। তবে কেন্দ্র-রাজ্য আলোচনার পরই এই নীতি প্রণয়ন হবে বলে জানা যাচ্ছে। তবে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য গাড়ির ক্ষেত্রে আইন কিছুটা অন্য হতে পারে কিন্তু ১৫ বছরের পুরনো গাড়ির ভবিষ্যৎ চিন্তার কারণ থাকছেই।
বাস্তবত দিল্লিতে ক্রমবর্ধমান দূষণকে মাথায় রেখেই ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু ভারতে এমনিতেই ১৫ বছরের পুরনো গাড়ির চালানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু পুরনো গাড়িকে স্ক্র্যাপ করার বিষয়ে কোনও সংগঠিত আইন না থাকায় এই আইন কার্যকর করা যাচ্ছিল না।
দিল্লির আঞ্চলিক পরিবহন দফতর গাড়ির ফিটনেস চেক শুরু করেছে। ন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল নির্দেশের সমস্ত নিয়মাবলী না জানলে আপনার গাড়িটি শহরের পথে আইনি সমস্যায় পড়তে পারে। এখন জানা দরকার আপনি পুরনো গাড়ির ক্ষেত্রে কী করতে পারেন বা আপনার বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
যদি আপনার ১৫ বছরের পুরোনো গাড়িটি বেশি পুরনো হয়ে যায় তাহলে আপনার পাশের রাজ্যে এই গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন সম্ভব তবে তা খুবই জটিল প্রক্রিয়া। গাড়ির আরসি-র সময় পার হওয়ার আগেই গাড়িটি ট্রান্সফার করতে হবে। সময় নিয়ম এবং শর্ত পালনের ক্ষেত্রে আরটিসি মামলার কারণে এই পদ্ধতি খুবই জটিল।
যদি আপনি অন্য রাজ্যে আপনার গাড়িটি নিয়ে যেতে না চান তাহলে বিকল্প একমাত্র রাস্তা আপনার গাড়িটি স্ক্র্যাপ করা। এর অর্থ গাড়ির সমস্ত যন্ত্রাংশ আলাদা আলাদা করে রিসাইকেল করা হবে। এর ফলে, পুরনো গাড়ির অবৈধ এবং অপরাধমূলক ব্যবহারের সুযোগও শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু গাড়িটি স্ক্র্যাপ করার সময় কিছুটা সতর্কতা প্রয়োজন। প্রথমে স্ক্র্যাপ ডিলারকে দিয়েই গাড়িটি স্ক্র্যাপ করানো উচিত। স্ক্র্যাপ করার সময় গাড়িটির চেসিস নম্বরটি আপনার কাছে রেখে দিন। আপনাকে দেখতে হবে যাতে স্ক্র্যাপ ডিলার পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখেই গাড়িটি স্ক্র্যাপ করে। এরপর আরটিওকে স্ক্র্যাপিং-এর খবর দিন– এবং গাড়িটি ডিরেজিস্টার করুন।
কীভাবে গাড়ি স্ক্র্যাপ করা হয়?
স্ক্র্যাপ ডিলার গাড়ির অবস্থা এবং ওজনের ওপর ভিত্তি করে এর দাম ধার্য করে। এগ্রিমেন্টের পর ডিলার গাড়ির যন্ত্রাংশ আলাদা আলাদা করে প্লাস্টিক লোহা বিক্রি করতে পারে। যদি আপনার গাড়িটি সিএনজি হয় তাহলে তা আলাদা ভাবে নষ্ট করা হবে। তবে গাড়ির মালিককে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে আদৌ তাঁর গাড়িটি স্ক্র্যাপ হয়েছে কিনা। স্ক্র্যাপ ডিলারকে অরিজিনাল আরসি দিতে হবে। আরটিওর আগের প্রক্রিয়ায় আপনার গাড়িটি স্ক্র্যাপ হওয়ার কয়েকটি ছবি তুলে রাখুন।
ট্যাক্স বিষয়ে চিন্তা?
পরিবহন মন্ত্রক পুরনো গাড়িতে ট্যাক্স নিতে পারে কিনা– এমন আলোচনা খুবই জরুরি। মন্ত্রকের অনুমান– পুরনো গাড়ি স্ক্র্যাপ পলিসিতে পরিবেশ দূষণ প্রতি বছর ২৫ শতাংশ কমবে এবং বিপুল পরিমাণ জ্বালানির সাশ্রয় হবে। কিন্তু অপরদিকে প্রাইভেট গাড়িতে ট্যাক্স বৃদ্ধিরও চিন্তাভাবনা চলছে।
সরকারের উদ্দেশ্য পুরনো গাড়ি যাতে রাস্তায় না চলে– এজন্যই গ্রিনট্যাক্স চালুরও বিবেচনা করছে মন্ত্রক– যা প্রাইভেট গাড়ির মালিকদের উদ্বেগ বাড়াতে পারে। ১৫ বছরের বেশি পুরনো গাড়ির রোড ট্যাক্স ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন