পুবের কলম প্রতিবেদক: কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে নাটকীয় মোড়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘আজ্ঞাবহ দাসে’ পরিণত হওয়া সিবিআই আধিকারিকরা রবিবার দুপুরে আচমকা হানা দিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তৃণমূল সাংসদের স্ত্রী রুজিরা নারুলা ও শ্যালিকাকে জেরা করার উদ্দেশ্য নিয়েই হানা দিয়ে ছিলেন। যদিও তাঁরা কেউ বাড়িতে না থাকায় খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকদের। তবে এ দিনই দেখা করার জন্য দু’জনের নামে নোটিশ জারি করেছেন তাঁরা। তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষনেতা তথা সাংসদ অভিষেকের বাড়িতে সিবিআইয়ের হানা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এমন পদক্ষেপের পিছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের শাসকদলের শীর্ষ নেতারা। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেছেন, বিভিন্ন শরিকদল বিজেপিকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। সেই ঘাটতি পূরণে বিজেপির নতুন শরিক হিসেবে আসরে অবতীর্ণ হয়েছে সিবিআই। তবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি। তিন দলের নেতারা একই সুরে সিবিআইয়ের পদক্ষেপকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে। বঙ্গ দখলে গত কয়েকমাস ধরেই কোমর কোষে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি শীর্ষনেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডারা কার্যত রাজ্যে এসে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লাগাতার নিশানা করে চলেছেন। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে চরিত্রহননের পথেই হাঁটছেন। ফলে তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্বের আশঙ্কা ছিল, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে অভিষেকের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হবে। তাঁদের সেই আকাঙ্খাই সত্যি হল।
এ দিন ছুটির দিনে দুপুর দু’টো ১০ মিনিট নাগাদ অভিষেকের হরিশ মুখোপাধ্যায় রোডের বাড়িতে হাজির হন সিবিআইয়ের পাঁচ আধিকারিক। তৃণমূল সাংসদের স্ত্রী রুজিরা নারুলার সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু সেই সময় অভিষেক কিংবা তাঁর স্ত্রী কেউই বাড়িতে ছিলেন
না। মিনিট দশেক বাড়ির নিচে কাটিয়ে ফিরে যান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ফিরে যাওয়ার আগে ১৬০ ধারায় অভিষেকের
স্ত্রী ও শ্যালিকার নামে নোটিশ জারি করেন। এক আধিকারিকের ফোন নম্বর ওই নোটিশে উল্লেখ করে এ দিনই জেরার জন্য দেখা করার কথা জানানো হয়।
মু্খ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ৪৮ ঘণ্টা আগেই সিবিআইয়ের রাজনৈতিক ‘প্রভু’ অমিত শাহের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিল বিধাননগর আদালত, আর সেই সমনজারির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিষেকের বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকদের জানার পিছনে বিশেষ যোগসূত্র খুঁজে পারছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন