পুবের কলম, ওয়াশিংটন: ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস মহামারির মতো জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে ২৩টি দেশের নেতারা গতকাল মঙ্গলবার এই চুক্তির বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। প্রস্তাবিত এই চুক্তিতে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরিকারী যে কোনও বিষয়ে তথ্য বিনিময়ের বিষয়ে কড়াকড়ির কথা বলা হয়েছে। গত নভেম্বরে বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক দেশগুলোর জোট গ্র&প ২০-এর সম্মেলনে এ ধরনের একটি চুক্তির ধারণা তুলে ধরেছিলেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল। সেখানে মহামারিতে টিকা। ওষুধ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার সর্বজনীন ও সমান অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যের কথা বলেছিলেন তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক নতুন এই চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সমঝোতা আলোচনা শুরু হয়নি বলে কূটনীতিকেরা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তেদরোস আধানোম বলেন– কোভিড-১৯ মহামারিতে যেসব ঘাটতি দেখা দিয়েছে– সেগুলো মোকাবিলা সম্ভব হবে নতুন এই চুক্তি হবে। আগামী মে মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের বার্ষিক সভা হবে। সেখানে সংস্থাটির সদস্য ১৯৪টি দেশের প্রতিনিধিদের সামনে খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হতে পারে।
কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে। এক বছর তিন মাসের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ২৮ লক্ষের বেশি মানুষের প্রাণ নিয়েছে নতুন করোনাভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে তথ্য গোপনে চিনকে সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ তুলে ছিল আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
কয়েক মাস আগে চিনের উহান ঘুরে আসা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি প্রতিবেদন দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে– বাদুড় থেকে মানবদেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনও প্রাণী অন্তর্বর্তী পোষক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে বলে তাঁদের ধারণা। তবে উহানের গবেষণাগার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে যে সন্দেহের কথা বলা হয়েছিল– তার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
মঙ্গলবার ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবিলায় প্রস্তাবিত চুক্তিতে সম্মতি দেন ২৩ দেশের নেতারা। দেশগুলো হল আমেরিকা– ফ্রান্স– জার্মানি– নেদারল্যান্ডস– স্পেন– নরওয়ে– গ্রিস– ফিজি– পর্তুগাল– রোমানিয়া– রুয়ান্ডা– কেনিয়া– দক্ষিণ কোরিয়া– চিলি– কোস্টারিকা– আলবেনিয়া– দক্ষিণ আফ্রিকা– ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো– তিউনিসিয়া– সেনেগাল– সার্বিয়া– ইন্দোনেশিয়া ও ইউক্রেন। এ সংক্রান্ত চিঠিতে এখনও সই করেনি আমেরিকা ও চিন। তবে দেশ দুটির নেতারা এই প্রস্তাবে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক জানিয়েছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন