নয়াদিল্লি: দিল্লির ঐতিহাসিক স্থাপত্য কুতুব মিনারের প্রাঙ্গণে অতীতে হিন্দু ও জৈন মন্দিরের অস্তিত্ত্ব ছিল, এই দাবি জানিয়ে মামলা করেছেন দু'জন আইনজীবী। ওই কথিত মন্দিরে হিন্দু ও জৈনরা যাতে পুজো এবং উপাসনা করার অধিকার ফিরে পান, সেই দাবি জানিয়ে তাদের করা আবেদন দিল্লির একটি দেওয়ানি আদালত গ্রহণ করে। শনিবার দিল্লি আদালত ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ওই মামলার শুনানি স্থগিত করেছেন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এই দাবিতে সক্রিয় সমর্থনও জানাচ্ছে।
তবে ভারতে ইতিহাসবিদরা অনেকেই মনে করছেন– এ দেশে মুসলিম শাসনামলের বিভিন্ন পুরাকীর্তিকে যেভাবে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে ‘পুনরুদ্ধারে’র চেষ্টা চলছে কুতুব মিনার সেই তালিকায় সবশেষ সংযোজন। যেমন শহরের নামও বদলে দেওয়া হচ্ছে। শাহী দিল্লির আইকনিক স্থাপত্য কুতুব মিনারের নির্মাণ শুরু করেছিলেন কুতুবউদ্দিন আইবক– যিনি ছিলেন মুহাম্মদ ঘোরীর একজন সেনাপতি।
১১৯২ সালে মুহাম্মদ ঘোরীর কাছে পৃথ্বীরাজ চৌহানের পরাজয়ের পরই দিল্লিতে হিন্দু শাসনের অবসান হয়– আর তার কয়েক বছর পরেই শুরু হয় এই মিনারের নির্মাণকাজ।
এখন দিল্লির সাকেত ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে পেশ করা এক আবেদনে আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন এবং রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী বলেছেন যে, ওই কমপ্লেক্সে আগে থেকেই শ্রী বিষ্ণু হরি সহ হিন্দু ও জৈন দেবতাদের ২৭টি মন্দির ছিল।
তাদের দাবি সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবক সেগুলো ভেঙেই তৈরি করেছিলেন কুওয়াতউল ইসলাম মসজিদ আরবি ভাষায় যার অর্থ হল ‘ইসলামের শক্তি'।
হিন্দুদের ভগবান বিষ্ণু হরিদেবের ‘মিত্র’ হিসেবে মামলাটি যিনি দায়ের করেছেন, সেই অ্যাডভোকেট হরিশঙ্কর জৈন বলেছেন– আটশো বছর ধরে ওই মসজিদ খালিই পড়ে আছে– কেউ সেখানে নামায পড়েনি।
তবে ইদানীংকালে ভারতে বিভিন্ন মুসলিম যুগের স্থাপত্যকে যেভাবে হিন্দু ঐতিহ্যর আলোকে নতুন করে তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে– এটাকেও সেই চেষ্টারই অংশ বলে মনে করছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ইতিহাসবিদ পারুল পান্ড্য ধর।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন