পুবের কলম, নয়াদিল্লি: স্বনামধন্য ইতিহাসবিদ বদ্রী নারায়ণ দলিত ও গেরুয়া রাজনীতির উপর ক্রমাগত লিখে চলেছেন। তাঁর সাম্প্রতিকতম বই ‘রিপাবলিক অফ হিন্দুত্ব’তে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে আরএসএস তার বিশ্বজনীন দৃষ্টিকে প্রসারিত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের সময়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ সুকৌশলে কীভাবে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় বিরোধীদের সামনে, তা নিয়েও তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেছেন।
হিন্দুত্ব রাজনীতির ‘গর্ভগৃহ' হিসেবে তিনি এই সংগঠনটিকে দেখেন। যে সব রাজনৈতিক শক্তি আরএসএস-কে আক্রমণ করছে, তারা আসলে পুরোপুরি আক্রমণ করতে পারছে না। সংঘের ছায়াকে আসলে তারা আক্রমণ করছে। এদের প্রকৃত স্বরূপ উদ্ঘাটন করা মুশকিল বলে তিনি মনে করেন। নব্বইয়ের দশকের পর থেকে উদারীকরণ ও বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য তারা যথেষ্ট সচেষ্ট। সম্প্রতি আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের একটি কথা এ ক্ষেত্রে তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যেখানে ভাগবত বলছেন, সমাজ ও সময় বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে ধারণাকেও বদলাতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে এম এস গোলওয়ালকরের ‘বাঞ্চ অফ থটস’-এর কিছু অংশকেও ভুলে যেতে হবে বলে তিনি মনে করেন। আরএসএস দলিত– আদিবাসীদের বৃহত্তর হিন্দুত্ববাদের ছাতার তলায় আনতে চাইছে। এর জন্য তারা সুকৌশলে কাজও করে চলেছে বহুদিন থেকে।
এ ব্যাপারে বদ্রী নারায়ণের বক্তব্য, আরএসএস প্রান্তিক দলিত, যাযাবর, অর্ধ-যাযাবর, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে সবার অলক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। স্কুল, হাসপাতাল, জলাধার তৈরি ইত্যাদির মাধ্যমে যেমন এই কাজ হচ্ছে তেমনি তাদের ইতিহাসের মহানায়কদের গৌরবগাথা তুলে ধরা হচ্ছে তাদের সামনে। তারাও যে বৃহত্তর হিন্দু সমাজের অংশীদার– এর মাধ্যমে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আরএসএস আদিবাসী– দলিতদের মন্দির তৈরিতে অর্থ জোগাচ্ছে এবং তাদের কাছের মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন লোকমাধ্যম ব্যবহার করেও তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে আরএসএস।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন