১৫ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিশরে ৩৫০০ বছর আগের ফেরাউন রাজার সমাধি আবিষ্কার

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 124

কায়রো, ২০ ফেব্রুয়ারি: মিশর ও যুক্তরাজ্যের যৌথ অভিযানে ফেরাউন রাজা দ্বিতীয় থুতমোসের প্রাচীন সমাধি খুঁজে পাওয়া গেছে। প্রায় ১০০ পর নতুন করে এ ধরনের প্রাচীন কোনো শাসকের সমাধি আবিষ্কৃত হল। মিশরের পর্যটন ও প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক মন্ত্রক মঙ্গলবার জানায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নীল নদের পূর্ব তীরে রাজাদের উপত্যকা খ্যাত লুক্সরের কাছে ফেরাউনের এক  রাজকীয় সমাধি পাওয়া গেছে। ১৯২২ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদদের দ্বারা তুতানখামুনের সমাধি আবিষ্কারের প্রায় ১০০ বছর পর প্রথম কোনো ফারাওয়ের সমাধি আবিষ্কার হল। মিশরের পর্যটন ও প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রী শেরিফ ফাতি বলেন, ‘এটি মিশরবিদ্যার ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা এবং মানব সভ্যতার ইতিহাস বোঝার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।’

প্রাথমিকভাবে, অনুসন্ধানকারী দল এটি রাজপরিবারের নারীদের সমাধিক্ষেত্র হিসেবে মনে করছিল। তবে সমাধির ভেতরে প্রবেশ করার পর সেখানে ফারাওদের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহৃত নীল ও হলুদ তারামণ্ডিত সিলিং দেখতে পান, যা ফারাওয়ের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। মিশরের ১৮তম রাজবংশের বাকি সব শাসকের সমাধি খুঁজে পাওয়া গেলেও এতদিন পর্যন্ত দ্বিতীয় থুতমোসের সমাধি লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিল।

থুতমোস ছিলেন তুতানখামুনের পূর্বপুরুষ, যার রাজত্বকাল আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৪৯৩ থেকে ১৪৭৯ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তিনি ছিলেন বিখ্যাত নারী ফারাও হাটশেপসুটের স্বামী, যিনি মিশরের ইতিহাসের অন্যতম সফল শাসক ছিলেন। প্রত্নতত্ত্ববিদ ড. লিথারল্যান্ড জানান, সমাধির বৃহৎ সিঁড়ি ও দীর্ঘ প্রবেশপথ এর বিশালতা বোঝায় যে এটি রাজকীয় সমাধি।

 

সমাধিস্থলে প্রত্নতত্ববিদরা শেষকৃত্যের কাজে ব্যবহার হয় এমন আসবাবপত্র, নীল রঙের ছবি আঁকা হামানদিস্তার অংশবিশেষ, হলুদ তারা ও ধর্মীয় লেখনী খুঁজে পেয়েছেন। রাজা থুতমোসের মৃত্যুর অল্প সময় পর প্রাচীন মিশরে বন্যা দেখা দেওয়ায় সমাধিস্থলটি ভালো ভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি বলে মন্ত্রকের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মিশরে ৩৫০০ বছর আগের ফেরাউন রাজার সমাধি আবিষ্কার

আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার

কায়রো, ২০ ফেব্রুয়ারি: মিশর ও যুক্তরাজ্যের যৌথ অভিযানে ফেরাউন রাজা দ্বিতীয় থুতমোসের প্রাচীন সমাধি খুঁজে পাওয়া গেছে। প্রায় ১০০ পর নতুন করে এ ধরনের প্রাচীন কোনো শাসকের সমাধি আবিষ্কৃত হল। মিশরের পর্যটন ও প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক মন্ত্রক মঙ্গলবার জানায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নীল নদের পূর্ব তীরে রাজাদের উপত্যকা খ্যাত লুক্সরের কাছে ফেরাউনের এক  রাজকীয় সমাধি পাওয়া গেছে। ১৯২২ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদদের দ্বারা তুতানখামুনের সমাধি আবিষ্কারের প্রায় ১০০ বছর পর প্রথম কোনো ফারাওয়ের সমাধি আবিষ্কার হল। মিশরের পর্যটন ও প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রী শেরিফ ফাতি বলেন, ‘এটি মিশরবিদ্যার ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা এবং মানব সভ্যতার ইতিহাস বোঝার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।’

প্রাথমিকভাবে, অনুসন্ধানকারী দল এটি রাজপরিবারের নারীদের সমাধিক্ষেত্র হিসেবে মনে করছিল। তবে সমাধির ভেতরে প্রবেশ করার পর সেখানে ফারাওদের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহৃত নীল ও হলুদ তারামণ্ডিত সিলিং দেখতে পান, যা ফারাওয়ের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। মিশরের ১৮তম রাজবংশের বাকি সব শাসকের সমাধি খুঁজে পাওয়া গেলেও এতদিন পর্যন্ত দ্বিতীয় থুতমোসের সমাধি লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিল।

থুতমোস ছিলেন তুতানখামুনের পূর্বপুরুষ, যার রাজত্বকাল আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৪৯৩ থেকে ১৪৭৯ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তিনি ছিলেন বিখ্যাত নারী ফারাও হাটশেপসুটের স্বামী, যিনি মিশরের ইতিহাসের অন্যতম সফল শাসক ছিলেন। প্রত্নতত্ত্ববিদ ড. লিথারল্যান্ড জানান, সমাধির বৃহৎ সিঁড়ি ও দীর্ঘ প্রবেশপথ এর বিশালতা বোঝায় যে এটি রাজকীয় সমাধি।

 

সমাধিস্থলে প্রত্নতত্ববিদরা শেষকৃত্যের কাজে ব্যবহার হয় এমন আসবাবপত্র, নীল রঙের ছবি আঁকা হামানদিস্তার অংশবিশেষ, হলুদ তারা ও ধর্মীয় লেখনী খুঁজে পেয়েছেন। রাজা থুতমোসের মৃত্যুর অল্প সময় পর প্রাচীন মিশরে বন্যা দেখা দেওয়ায় সমাধিস্থলটি ভালো ভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি বলে মন্ত্রকের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।