১০ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৬ লক্ষ মুসলিমের নাম বাদ বিহারের তালিকায়: যোগেন্দ্র যাদব

সুস্মিতা
  • আপডেট : ৮ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার
  • / 360

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদব অভিযোগ করেছেন যে, বিহারে এস আই আর প্রক্রিয়ায় ৬ লক্ষ মুসলিমের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই এস আই আরকে নিয়ে বিন্দুমাত্র উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে তিনি রাজি নন। বরং চূড়ান্ত তালিকা আরও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। যোগেন্দ্র যাদব এবং রাহুল শাস্ত্রী বলেছেন, কোনও ভোটার তালিকাকে প্রকৃতই ভালো বলা যায় তখনই, যখন যত বেশি যোগ্য ভোটদাতার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রস পত্রিকায় ‘মিসিং ভোটারস’ শিরোনামে ওঁরা প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশের পর লিখেছিলেন, এস আই আর প্রক্রিয়ায় বিহারে বয়স্ক ভোটারের সংখ্যা ৯৭ শতাংশ থেকে কমে ৮৮ শতাংশে দাঁড়াবে। অবশ্য চূড়ান্ত তালিকায় কিছুটা উন্নতি দেখা যায়। ৯০ শতাংশ প্রবীণের নাম রয়েছে তালিকায়। কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতি খুবই সঙ্কটাপন্ন। সরকারি পরিসংখ্যান দেখিয়ে তাঁরা বলেছেন, ভারত সরকারের জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্যই বলছে, বিহারে ৮ কোটি ২২ লক্ষ ভোটদাতা থাকার কথা।

আরও পড়ুন: ‘হুজুর, আমরা বেঁচে আছি’ বিডিওকে স্মারকলিপি দিয়ে আর্তি পাঁচ ‘মৃত’ ভোটারের

কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় ৭ কোটি ৪২ লক্ষ ভোটারের নাম রয়েছে। এর মানে ৮০ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। যাদব এবং শাস্ত্রী বলেছেন, অনেকে চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে বেশ খুশিই। কারণ তাঁরা ভেবেছিলেন ২ কোটি নাম বাদ যাবে। তাঁরা মনে করেন, এত বেশি নাম বাদ না যাওয়ার কারণ এস আই আর প্রক্রিয়া নয়, সুপ্রিম কোর্টের ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ। এর ফলে কমিশন কিছুটা ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে বাধ্য হয়েছে। এস আই আর প্রক্রিয়ায় মুসলিম এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মানুষজন কতটা প্রভাবিত হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য এখনও মেলেনি।

আরও পড়ুন: Bihar SIR-এ কোনও অসঙ্গতি পেলেই, পুরো প্রক্রিয়া বাতিল হবে: Supreme Court

তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে মুসলিম এবং মহিলাদের নাম প্রচুর বাদ গিয়েছে। বিহারে মেয়েরা সবসময়ই উপেক্ষিত। জনসংখ্যায় তাদের সংখ্যার অনুপাতে ভোটার তালিকায় তাদের সংখ্যা বরাবরই কম থাকে। ২০১২ সালে এই ফারাক ছিল ২১ লাখের, এখন তা কমে ৭ লাখের হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এস আই আর প্রক্রিয়া এই ফারাককে উলটে দিয়েছে। যে কারণে ১৬ লাখ মহিলা ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। কমিশন তথ্যে কোনও ধর্মীয় পরিচয় না দেওয়ায় পুরোটা খোলসা হচ্ছে না। কিন্তু সমীক্ষা বলছে, বাদ যাওয়া ৬৫ লাখ নামের ২৪.৭ শতাংশ মুসলিম। আর চূড়ান্ত তালিকায় যে নাম বাদ পড়েছে তার ৩৩ শতাংশ মুসলিম। অথচ বিহারের লোকগণনা অনুযায়ী রাজ্যে মুসলিমরা মোট জনসংখ্যার ১৬.৯ শতাংশ।

আরও পড়ুন: Bihar SIR: নথি জমা দিয়েছেন ৯৮.২ শতাংশ ভোটার, জানাল কমিশন

দুই সমীক্ষকই বলছেন, ভোটার তালিকা সংশোধন করেছে বলে যে দাবি করেছে কমিশন তা শুনলে ঘোড়াও হাসবে।তালিকায় উল্টোপাল্টা নামে ভর্তি। ২৪ হাজার অদ্ভুতুড়ে নাম রয়েছে, ৬০০০ অবৈধ নাম আছে। ৫১ হাজার জনের যে সম্পর্ক দেখানো হয়েছে তা ভুলভাল। সেদিক থেকে খসড়া তালিকায় যা গোঁজামিল ছিল তার চারগুণ রয়েছে চূড়ান্ত তালিকায়। তারপর বিদেশি ভোটারদের নাম জানালো না কেন কমিশন? কারণ. ০০১৫ শতাংশ বিদেশি নাম মিলেছে, যা তুচ্ছ। কমিশনের কাছে যে সব আপত্তি জমা পড়ছে তার ৩৯০ জনের আপত্তি গ্রাহ্য করতে বাধ্য হয়েছে কমিশন। এই আপত্তি ছিল নাম বাদ দেওয়ার আর্জি করে। তার মধ্যে মাত্র ৮৭ জন মুসলিম।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৬ লক্ষ মুসলিমের নাম বাদ বিহারের তালিকায়: যোগেন্দ্র যাদব

আপডেট : ৮ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদব অভিযোগ করেছেন যে, বিহারে এস আই আর প্রক্রিয়ায় ৬ লক্ষ মুসলিমের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই এস আই আরকে নিয়ে বিন্দুমাত্র উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে তিনি রাজি নন। বরং চূড়ান্ত তালিকা আরও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। যোগেন্দ্র যাদব এবং রাহুল শাস্ত্রী বলেছেন, কোনও ভোটার তালিকাকে প্রকৃতই ভালো বলা যায় তখনই, যখন যত বেশি যোগ্য ভোটদাতার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রস পত্রিকায় ‘মিসিং ভোটারস’ শিরোনামে ওঁরা প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশের পর লিখেছিলেন, এস আই আর প্রক্রিয়ায় বিহারে বয়স্ক ভোটারের সংখ্যা ৯৭ শতাংশ থেকে কমে ৮৮ শতাংশে দাঁড়াবে। অবশ্য চূড়ান্ত তালিকায় কিছুটা উন্নতি দেখা যায়। ৯০ শতাংশ প্রবীণের নাম রয়েছে তালিকায়। কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতি খুবই সঙ্কটাপন্ন। সরকারি পরিসংখ্যান দেখিয়ে তাঁরা বলেছেন, ভারত সরকারের জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্যই বলছে, বিহারে ৮ কোটি ২২ লক্ষ ভোটদাতা থাকার কথা।

আরও পড়ুন: ‘হুজুর, আমরা বেঁচে আছি’ বিডিওকে স্মারকলিপি দিয়ে আর্তি পাঁচ ‘মৃত’ ভোটারের

কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় ৭ কোটি ৪২ লক্ষ ভোটারের নাম রয়েছে। এর মানে ৮০ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। যাদব এবং শাস্ত্রী বলেছেন, অনেকে চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে বেশ খুশিই। কারণ তাঁরা ভেবেছিলেন ২ কোটি নাম বাদ যাবে। তাঁরা মনে করেন, এত বেশি নাম বাদ না যাওয়ার কারণ এস আই আর প্রক্রিয়া নয়, সুপ্রিম কোর্টের ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ। এর ফলে কমিশন কিছুটা ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে বাধ্য হয়েছে। এস আই আর প্রক্রিয়ায় মুসলিম এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মানুষজন কতটা প্রভাবিত হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য এখনও মেলেনি।

আরও পড়ুন: Bihar SIR-এ কোনও অসঙ্গতি পেলেই, পুরো প্রক্রিয়া বাতিল হবে: Supreme Court

তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে মুসলিম এবং মহিলাদের নাম প্রচুর বাদ গিয়েছে। বিহারে মেয়েরা সবসময়ই উপেক্ষিত। জনসংখ্যায় তাদের সংখ্যার অনুপাতে ভোটার তালিকায় তাদের সংখ্যা বরাবরই কম থাকে। ২০১২ সালে এই ফারাক ছিল ২১ লাখের, এখন তা কমে ৭ লাখের হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এস আই আর প্রক্রিয়া এই ফারাককে উলটে দিয়েছে। যে কারণে ১৬ লাখ মহিলা ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। কমিশন তথ্যে কোনও ধর্মীয় পরিচয় না দেওয়ায় পুরোটা খোলসা হচ্ছে না। কিন্তু সমীক্ষা বলছে, বাদ যাওয়া ৬৫ লাখ নামের ২৪.৭ শতাংশ মুসলিম। আর চূড়ান্ত তালিকায় যে নাম বাদ পড়েছে তার ৩৩ শতাংশ মুসলিম। অথচ বিহারের লোকগণনা অনুযায়ী রাজ্যে মুসলিমরা মোট জনসংখ্যার ১৬.৯ শতাংশ।

আরও পড়ুন: Bihar SIR: নথি জমা দিয়েছেন ৯৮.২ শতাংশ ভোটার, জানাল কমিশন

দুই সমীক্ষকই বলছেন, ভোটার তালিকা সংশোধন করেছে বলে যে দাবি করেছে কমিশন তা শুনলে ঘোড়াও হাসবে।তালিকায় উল্টোপাল্টা নামে ভর্তি। ২৪ হাজার অদ্ভুতুড়ে নাম রয়েছে, ৬০০০ অবৈধ নাম আছে। ৫১ হাজার জনের যে সম্পর্ক দেখানো হয়েছে তা ভুলভাল। সেদিক থেকে খসড়া তালিকায় যা গোঁজামিল ছিল তার চারগুণ রয়েছে চূড়ান্ত তালিকায়। তারপর বিদেশি ভোটারদের নাম জানালো না কেন কমিশন? কারণ. ০০১৫ শতাংশ বিদেশি নাম মিলেছে, যা তুচ্ছ। কমিশনের কাছে যে সব আপত্তি জমা পড়ছে তার ৩৯০ জনের আপত্তি গ্রাহ্য করতে বাধ্য হয়েছে কমিশন। এই আপত্তি ছিল নাম বাদ দেওয়ার আর্জি করে। তার মধ্যে মাত্র ৮৭ জন মুসলিম।