১০ দিনে ৬৪টি ঘৃণামূলক ভাষণ: রিপোর্ট
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর দেশজুড়ে টার্গেট নিরীহ মুসলিমরা

- আপডেট : ৪ মে ২০২৫, রবিবার
- / 144
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁওকাণ্ডের পর থেকে দেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে চলেছে হামলা, ঘৃণা ভাষণ, হেনস্থা ও নির্যাতন। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৪টি ঘৃণা ভাষণ দিয়ে মুসলিমদের টার্গেট করা হয়েছে। এমনই এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়া হেট ল্যাবের (আইএইচএল)। সংস্থাটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২২ এপ্রিল থেকে ২ মে-র মধ্যে অর্থাৎ গত ১০ দিনে জম্মু ও কাশ্মীর সহ নয়টি রাজ্যে মুসলিমদের টার্গেট করে ৬৪টি ঘৃণামূলক ও বিদ্বেষপূর্ণ ভাষণ দেওয়া হয়েছে। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। বিজেপি শাসিত রাজ্যটিতে সবচেয়ে বেশি মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ভাষণ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, পহেলগাঁওকাণ্ডের পর উগ্র হিন্দুত্ববাদী ও হিন্দু ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলি মুসলিমদের মধ্যে ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে দেশব্যাপী ঘৃণা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্রে ১৭টি, উত্তরপ্রদেশে ১৩টি, উত্তরাখণ্ডে ৬টি, হরিয়ানায় ৬টি, রাজস্থানে ৫টি, মধ্যপ্রদেশে ৫টি, হিমাচল প্রদেশে ৫টি, বিহারে ৪টি এবং ছত্তিশগড়ে ২টি ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), বজরং দল, অন্তঃরাষ্ট্রীয় হিন্দু পরিষদ (এএইচপি), রাষ্ট্রীয় বজরং দল (আরবিডি), হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি, সকল হিন্দু সমাজ, হিন্দু রাষ্ট্র সেনা এবং হিন্দু রক্ষা দলের মত উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির আয়োজিত সমাবেশ থেকে মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্য করে নানান উস্কানিমূলক ঘৃণা ভাষণ এবং এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিতে দেখা যায় হিন্দুত্ববাদীদের। মুসলিমদের ‘সবুজ সাপ’, ‘শূকরছানা’, ‘কীট’ এবং ‘পাগলা কুকুর’ বলেও আক্রমণ করা হয়েছে। আইএইচএল-এর রিপোর্টটি বলছে, “এই গোষ্ঠীগুলো সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে লাগাতার উস্কানি দিয়েছে। তারা সহিংসতা ছড়াতে ঘৃণা ভাষণ দিয়েছে। মুসলিমদের সামাজিক ভাবে বর্জন এবং অর্থনৈতিক বয়কটের ডাকও দিয়েছে। এভাবেই দেশের মুসলিমদের সর্বদা লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে।”
রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকে কাশ্মীরি মুসলিমদের ওপর মাত্রারিক্তভাবে হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণ নেমে এসেছে। মূলত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সবচেয়ে বেশি কাশ্মীরিরা হেনস্থা, নির্যাতন ও আক্রমণের শিকার হয়েছে। হরিয়ানায় কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে এবং তাদের দোকানে অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়েছে। উত্তরাখণ্ডে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের হস্টেলে ঢুকে তাদের রড ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। অনেকে পড়ুয়াকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে এলাকা ছাড়তে হুমকি দেওয়া হয়েছে। উত্তরাখণ্ডে এক বিজেপি নেতা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমাদের ছাব্বিশ জন নিহত হয়েছে; তোমাদেরও ছাব্বিশ জনকে মারা যাবে।’ এমনকি মুসলিম নিধনের ডাকও দিয়েছেন তিনি।