নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে হার্ভার্ডের ৯২% মুসলিম শিক্ষার্থী

- আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
- / 236
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম, আরব, ফিলিস্তিনি ও ইহুদি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পক্ষপাত ও বৈষম্যের অভিযোগ নিয়ে প্রকাশিত দুটি পৃথক প্রতিবেদন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ক্যাম্পাসে গাজা যুদ্ধ ঘিরে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে গঠিত হয় দুটি টাস্ক ফোর্স—একটি ইসলামভীতি ও আরব-বিরোধী মনোভাব নিয়ে, অপরটি ইহুদি ও ইসরাইল-বিরোধী বৈষম্য নিয়ে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই রিপোর্টে উঠে এসেছে ভয়, হেনস্থা ও সামাজিক বয়কটের চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার জানান, অনেক মুসলিম ও প্রো-প্যালেস্টাইনিয়ান শিক্ষার্থী মনে করেছেন যে তাদের ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, মূল্যায়িত নয় বরং বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ইহুদি ও ইসরাইলি শিক্ষার্থীদের একাংশ জানান, তাঁদের নিজেদের পরিচয় আড়াল করতে হচ্ছে যাতে নিগ্রহ বা সংঘর্ষের মুখে না পড়তে হয়।
মুসলিম ছাত্রীরা, বিশেষ করে যারা হিজাব পরেন, তাঁরা নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলেও হেনস্থার শিকার হয়েছেন, এমনকি থুতু ছোড়ার ঘটনাও ঘটেছে। ডক্সিং—অর্থাৎ ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা—বিরাট উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। বহু মুসলিম শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের চাকরি ও একাডেমিক ভবিষ্যৎ এই ঘটনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রায় ৫০ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থী তাঁদের শারীরিক নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। ৯২ শতাংশ মনে করেন, রাজনৈতিক মত প্রকাশ করলে তাঁরা পেশাগত বা একাডেমিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। অপরদিকে, ইহুদি শিক্ষার্থীদের ২৬ শতাংশ নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করেন এবং ৬০ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা মতামতের কারণে নেতিবাচক ধারণা ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।
দুটি টাস্ক ফোর্সই পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বেশ কিছু সুপারিশ করেছে, যেমন—ডক্সিং প্রতিরোধে আইনি সহায়তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা, এবং সহনশীলতা বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ। প্রেসিডেন্ট গারবার বলেন, “হার্ভার্ড এমন একটি জায়গা হয়ে উঠবে, যেখানে মতভেদ থাকবে—কিন্তু পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় থাকবে। আমরা সত্য খোঁজার পথে সকল মতকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।”