০১ জানুয়ারী ২০২৬, বৃহস্পতিবার, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

অর্পিতা লাহিড়ী,পুবের কলমঃ  তখনও  মহামারীর  হানাদারি ঘটেনি, আমরা কিছু  ভ্রমণ পাগল  সিন্ধান্ত  নিলাম, গৌড় বাংলা  আর কুলিক পাখিরালয় ভ্রমণের।  ২০১৯ এর একদম শেষে ২৬ ডিসেম্বর  শিয়ালদহ থেকে গৌড়  এক্সপ্রেসে আামাদের  যাত্রা  হল শুরু। অনেকদিন ধরেই মনের  মধ্যে  লালিত ছিল  ইচ্ছে,  যাব কুলিক, পরিযায়ী  পাখির দেশে উত্তরদিনাজপুর জেলায়।

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

 কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা  করে  মালদহ থেকে ২৭ ডিসেম্বর সকাল  ৮ টা রওয়ানা  দিলাম  উত্তর  দিনাজপুর  জেলার  রায়গঞ্জ  সংরক্ষিত  অভয়ারণ্য  তথা কুলিক পাখিরালয়ের উদ্দেশ্যে। আমাদের ২৮ জনের একটি লম্বা – চওড়া  দলটি ক্যামেরা, বায়নাকুলার নিয়ে    চারটি  গাড়িতে  সওয়ার হয়ে  তখন কুলিকের পথে।  সঙ্গী সহযাত্রীরা  সকলেই  ভ্রমণ  প্রিয়। সে যাই  হোক  গাজোল টোলট্যাক্স পেরিয়ে  ৩৪ নং জাতীয় সড়ককে সঙ্গী করে এগিয়ে  চলা। সময় লাগে কমবেশি   দু ঘন্টা।

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

মূলত জুন মাসে ভিড় জমায় পরিযায়ী পাখিরা। থাকে ডিসেম্বর মাস অবধি। এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম হল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাস। কিন্তু দূষণের কবলে ক্রমে নাব্যতা হারাচ্ছে কুলিক নদী। রাজ্যসরকার  সর্বোতভাবেই  চেষ্টা  করছেন কুলিকের জীব বৈচিত্র্য  বৃদ্ধি  করতে।

ওপেন বিল স্টর্ক, নাইট হেরন, কর্মোনেন্টাল ইগ্রেট। মোটামুটি  জুন নাগাদ উত্তর পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে পরিযায়ীদের উড়ে আসা শুরু। তারপর তাদের ডাকাডাকিতেই সরগরম হয়ে থাকে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাস। এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম এই পক্ষি নিবাস ঘিরে পর্যটকদেরও উৎসাহ প্রচুর।

রেঞ্জ অফিসার  প্রমিতা থাপা   জানালেন  কুলিক পাখিরালয়ের  খুঁটিনাটি  তথ্য। মুূলত জুন মাসে  সাইবেরিয়া  থেকে পরিযায়ী পাখিরা আসে, প্রথমেই  তারা বাসা  তৈরির  উপযুক্ত  জায়গা খোঁজে,  এরপর চলে সঙ্গী নির্বাচন, তারপর  সন্তানের  জন্ম  হয় এই কুলিকেই। সন্তান  ওড়ার  উপযুক্ত  হলেই  বাবা-মা  তাদের  নিয়ে ডিসেম্বর মাসের গোড়ায় পাড়ি দেয়  নিজের  দেশে।

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

এশিয়ার  দ্বিতীয়  বৃহত্তম  এই  পাখিরালয় তে পাখি  দেখার  সবচেয়ে  ভালো  সময় জুন থেকে নভেম্বর  মাস। পাখিরালয়ের  মধ্যেই  রয়েছে  গেস্ট  হাউস।  থাকতে  চাইলে বুকিং – এর জন্য  যোগাযোগ  করতে হবে   বিধাননগরের অরণ্য  ভবনে। প্রকৃতি  ও পাখিদের সঙ্গে একাত্ম  হতে চাইলে আপনার  গন্তব্য  হতেই পারে  কুলিক।

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

মহামারীর নিদারুণ  আঘাতে  আমরা  অনেকেই  ঘরবন্দী। কিন্তু  অরণ্য , জীবজগতকে ভালো বাসলে আপনার  গন্তব্য  হতেই  পারে  ঘরের  কাছের  আর্শিনগর কুলিক।  এই জুন থেকেই আনাগোনা  শুরু  হয়ে  যাবে পরিযায়ীদের।  গৃহবন্দী  জীবনের  ক্লান্তি কাটতে  অতিথি  হতেই  পারেন  কুলিকের পাখিদের  স্বপ্ন রাজ্যে।

ট্যাগ :
সর্বধিক পাঠিত

‘জয় শ্রী রাম’ বলাতে চাপ, বিজেপির রাজ্যে নির্যাতনের শিকার কাশ্মীরি ব্যবসায়ীরা

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

আপডেট : ২৯ জুন ২০২১, মঙ্গলবার

অর্পিতা লাহিড়ী,পুবের কলমঃ  তখনও  মহামারীর  হানাদারি ঘটেনি, আমরা কিছু  ভ্রমণ পাগল  সিন্ধান্ত  নিলাম, গৌড় বাংলা  আর কুলিক পাখিরালয় ভ্রমণের।  ২০১৯ এর একদম শেষে ২৬ ডিসেম্বর  শিয়ালদহ থেকে গৌড়  এক্সপ্রেসে আামাদের  যাত্রা  হল শুরু। অনেকদিন ধরেই মনের  মধ্যে  লালিত ছিল  ইচ্ছে,  যাব কুলিক, পরিযায়ী  পাখির দেশে উত্তরদিনাজপুর জেলায়।

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

 কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা  করে  মালদহ থেকে ২৭ ডিসেম্বর সকাল  ৮ টা রওয়ানা  দিলাম  উত্তর  দিনাজপুর  জেলার  রায়গঞ্জ  সংরক্ষিত  অভয়ারণ্য  তথা কুলিক পাখিরালয়ের উদ্দেশ্যে। আমাদের ২৮ জনের একটি লম্বা – চওড়া  দলটি ক্যামেরা, বায়নাকুলার নিয়ে    চারটি  গাড়িতে  সওয়ার হয়ে  তখন কুলিকের পথে।  সঙ্গী সহযাত্রীরা  সকলেই  ভ্রমণ  প্রিয়। সে যাই  হোক  গাজোল টোলট্যাক্স পেরিয়ে  ৩৪ নং জাতীয় সড়ককে সঙ্গী করে এগিয়ে  চলা। সময় লাগে কমবেশি   দু ঘন্টা।

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

মূলত জুন মাসে ভিড় জমায় পরিযায়ী পাখিরা। থাকে ডিসেম্বর মাস অবধি। এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম হল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাস। কিন্তু দূষণের কবলে ক্রমে নাব্যতা হারাচ্ছে কুলিক নদী। রাজ্যসরকার  সর্বোতভাবেই  চেষ্টা  করছেন কুলিকের জীব বৈচিত্র্য  বৃদ্ধি  করতে।

ওপেন বিল স্টর্ক, নাইট হেরন, কর্মোনেন্টাল ইগ্রেট। মোটামুটি  জুন নাগাদ উত্তর পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে পরিযায়ীদের উড়ে আসা শুরু। তারপর তাদের ডাকাডাকিতেই সরগরম হয়ে থাকে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাস। এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম এই পক্ষি নিবাস ঘিরে পর্যটকদেরও উৎসাহ প্রচুর।

রেঞ্জ অফিসার  প্রমিতা থাপা   জানালেন  কুলিক পাখিরালয়ের  খুঁটিনাটি  তথ্য। মুূলত জুন মাসে  সাইবেরিয়া  থেকে পরিযায়ী পাখিরা আসে, প্রথমেই  তারা বাসা  তৈরির  উপযুক্ত  জায়গা খোঁজে,  এরপর চলে সঙ্গী নির্বাচন, তারপর  সন্তানের  জন্ম  হয় এই কুলিকেই। সন্তান  ওড়ার  উপযুক্ত  হলেই  বাবা-মা  তাদের  নিয়ে ডিসেম্বর মাসের গোড়ায় পাড়ি দেয়  নিজের  দেশে।

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

এশিয়ার  দ্বিতীয়  বৃহত্তম  এই  পাখিরালয় তে পাখি  দেখার  সবচেয়ে  ভালো  সময় জুন থেকে নভেম্বর  মাস। পাখিরালয়ের  মধ্যেই  রয়েছে  গেস্ট  হাউস।  থাকতে  চাইলে বুকিং – এর জন্য  যোগাযোগ  করতে হবে   বিধাননগরের অরণ্য  ভবনে। প্রকৃতি  ও পাখিদের সঙ্গে একাত্ম  হতে চাইলে আপনার  গন্তব্য  হতেই পারে  কুলিক।

করোনার লাল চোখ উপেক্ষা করে গন্তব্য হোক পাখিদের স্বর্গরাজ্য কুলিক

মহামারীর নিদারুণ  আঘাতে  আমরা  অনেকেই  ঘরবন্দী। কিন্তু  অরণ্য , জীবজগতকে ভালো বাসলে আপনার  গন্তব্য  হতেই  পারে  ঘরের  কাছের  আর্শিনগর কুলিক।  এই জুন থেকেই আনাগোনা  শুরু  হয়ে  যাবে পরিযায়ীদের।  গৃহবন্দী  জীবনের  ক্লান্তি কাটতে  অতিথি  হতেই  পারেন  কুলিকের পাখিদের  স্বপ্ন রাজ্যে।