২২ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হলদিয়ার সভা থেকে মমতার স্পষ্ট ঘোষণা ‘জোটে আছি, জোটে থাকব’

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার
  • / 28

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ জোট নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার হলদিয়ায় নির্বাচনী জনসভা থেকে মমতা বলেন, “অল ইন্ডিয়া লেভেলে আমাকে অনেকে ভুল ভেবেছেন আমি বলেছি বাংলায় কোনও জোট নেই। কিন্তু ইন্ডিয়ায় যে জোট তা আমিই তৈরি করেছিলাম। ওই জোটটা দিয়ে আমরা সরকার তৈরি করব। আমরা জোটে থাকব। আমরা জোটে আছি। এখানকার সিপিএম, এখানকার কংগ্রেস নেই। কিন্তু অল ইন্ডিয়া লেভেলে ইন্ডিয়া জোট আমি তৈরি করেছিলাম। ইন্ডিয়া জোটে আমরা থাকব। ভুল বোঝাবুঝির ব্যাপার নেই। ইদানিং আমি লক্ষ্য করছি কোনও সংবাদমাধ্য়মে ভুলভাল খবর দেওয়া হচ্ছে। বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।”

বৃহস্পতিবার দুই মেদিনীপুরের তিনটি নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচির মধ্যে প্রথমেই সভা করেন হলদিয়ায়। এ দিন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে দুপুর ২টা নাগাদ এই জনসভায় বক্তব্য রাখেন তৃণমূল নেত্রী। সেই সভা থেকেই জাতীয় এবং রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট করেন মমতা।

জাতীয় রাজনীতিতে এনডিএ জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইন্ডিয়া জোট। কেন্দ্রের মোদি সরকারকে সরাতে সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী সব দলকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতে প্রধান উদ্যোগ নেয় তৃণমূল। এ দিনের সভা থেকে সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে বাংলায় ৪২টি কেন্দ্রে তৃণমূল একক শক্তিতে লড়াই করছে। সর্বভারতীয় স্তরের জোট যে রাজ্যে দানা বাঁধেনি সে কথাও প্রকাশ্য জনসভা থেকে মমতা স্পষ্ট করে দেন। অভিযোগ, রাজ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সিপিএম-প্রীতিই এই জোট ভাঙার জন্য দায়ী। একইসঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের নেতৃত্ব দাবি করেন, তৃনমূলকে পরাস্ত করতে নীতি নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে কংগ্রেস সিপিএম বিজেপি অলিখিত জোট করেছে।

এতদিন পর্যন্ত তৃণমূলের এই অবস্থান স্পষ্ট থাকলেও বিতর্কের সূত্রপাত হয় বুধবার শ্রীরামপুরের নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে। ওই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অনেকে অঙ্ক কষে বলছে..এবার বিজেপি হবে পগার পার। জেনে রেখে দিন ইন্ডিয়া জোট, বাংলার সিপিএম-কংগ্রেসকে ধরবেন না। ওরা এখানে বিজেপির সঙ্গে রয়েছে। ইন্ডিয়া জোটকে নেতৃত্ব দিয়ে আমরা বাইরে থেকে সবরকম সাহায্য করে দিয়ে সরকার গঠন করে দেব। যাতে বাংলার মা বোনেদের কোনওদিন অসুবিধা নয়। একশো দিনের কাজে কোনও দিন অসুবিধা না হয়।”

তবে বৃহস্পতিবার তমলুকের সভা থেকে সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নিজের দলের অবস্থান স্পষ্ট করে বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেন। মমতা বললেন, ‘‘ভোটের সময় কয়েকটা কথা বলতে চাই। মোদিকে আমি মোদিবাবু বলব না। বলব গ্যারান্টিবাবু। যেমন গদ্দার বলি, নাম নিই না। তেমনই এখানেও আমি নাম নেব না। আমি গ্যারান্টিবাবু বলব। তিনি কী বললেন, বিনা পয়সায় চাল দিচ্ছেন।  দু’বছর ধরে এক টাকাও দিচ্ছেন? আমি বলছি হয় আপনি ক্ষমা চান, না হলে বলুন আপনি টাকা দিয়েছেন চালের। ফোর টোয়েন্টির নতুন গ্যারান্টি। টিভিতে, কাগজে, বিজ্ঞাপনে সর্বত্র বলছে বিনা পয়সায় গ্যাস দিয়েছে। দিয়েছে? তার মানে গ্যারান্টিবাবু, ফোর টোয়েন্টি গ্যারান্টি, গ্যাসবেলুনের থেকেও বড় গ্যাসবেলুন, নো গ্যারান্টি। বলুন তো বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ দেবে বলেছিল, দিয়েছে? তার মানে নো গ্যারান্টি ফোর টোয়েন্টি।’’

একইসঙ্গে হলদিয়ায় দাঁড়িয়ে দল এবং বাংলার মানুষের সঙ্গে অধিকারী পরিবারের বেইমানির বিরুদ্ধে নাম না করে সরব হন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, “বাপ-ব্যাটা ১০ বছর কোন কাজটা করেছে? আমাদের মন্ত্রী হিসেবে দশ বছর ছিল। যা পেরেছে করে। সব লুঠে নিয়েছে। যখন তৃণমূল তৈরি করি বাপ-ব্যাটা কেউ ছিল না। ছিলেন অখিল গিরি। ওনারা তখন কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। গদ্দার আমার হাত দিয়ে জেতবার আগে অনেকবার ভোটে হেরেছে। যাদের নিজেদের হাজার-লক্ষ-কোটি টাকার সম্পত্তি আজ তারা বিজেপিতে গেছেন টাকা বাঁচাবার জন্য।” তিনি আরও বলেন, “নন্দীগ্রামে সিপিএমের সঙ্গে সমঝোতা করে অশান্তি বাপ-ব্যাটার। নন্দীগ্রামে আমার সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে। নন্দীগ্রামে আমার ভোট লুঠ হয়েছে। ভোটের পর লোডশেডিং করে রেজাল্ট বদলাল। জেলাশসাক পাল্টে লোডশেডিং করে রেজাল্ট পাল্টেছে। আজ না হলে কাল তার বদলা নেবই। চিরকাল বিজেপি থাকবে না। চিরকাল ইডি, সিবিআই কোলে রাখবে না।” একইসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী চাকরি বাতিল প্রসঙ্গের উত্থাপন করেন। বলেন, শিক্ষকদের চাকরি যাওয়ার আগে এক বাবু বলল বোমা ফাটাবে। বোমা ফাটাবে বলে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি খেয়ে নিল। মেদিনীপুরে কারচুপি করে চাকরি বেশি। ২৬ হাজার ছেলেমেয়ে ভয়ে মুখ খুলছে না। এই জেলায় চাকরিখেকো আছে, সাবধান।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনের সভা থেকে উপস্থিত শ্রোতাদের মেদিনীপুরের উন্নয়নের প্রসঙ্গ স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “মনে রাখবেন, আমি এখানে অনেক কাজ করেছি। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন করেছি।  আমি না  থাকলে দিঘা-তমলুক হত না। নন্দীগ্রামে যখন এসেছি, তখন কেউ আসেনি। এখানে কলেজ থেকে শুরু করে জলের লাইন, মাছের ব্যবসা এবং ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য পরিকাঠামো সব করেছি আমি।’’ বলেন, ” দিঘাতে কে সৈকতসরণি করেছে? বম্বের মতো মেরিন ড্রাইভ? তিনটে সেতু তৈরি করতে হয়েছে। এত সস্তার কাজ এগুলো নয়। শয়ে শয়ে কোটি টাকা খরচ হয়েছে।  তাই এখন দিঘায় এলে লোকে বলে কী ছিল আর কী হয়েছে। দিঘায় জগন্নাথের মন্দির থেকে  শুরু করে দিঘা গেট থেকে শুরু করে, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, জাদুঘর, মাতঙ্গিনী হাজরার বাড়িতে গ্যালারি, পিছাবনী স্মৃতিসৌধ আরও অনেক কিছু করেছি। যে ভাবে আমি দিঘা, হলদিয়া, নন্দকুমার, নন্দীগ্রামকে সাজিয়ে দিয়েছি, খেজুরিকে সাজিয়ে দিয়েছি… খেজুরিতে আগে কী করত? এখন ওখানে মস্তানি করছে!’’

শুধু তাই নয় দলীয় দূর্নীতি প্রসঙ্গে জনতাকে সচেতন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পার্টির নামে টাকা চাইলে দেবেন না। আমার পার্টি আপনাদের টাকা চাইবে না। আমাদের যতটা ক্ষমতা ততটাই করব। বিজেপির মতো বিজ্ঞাপন দিই না। তবে আমাদের কাছে বেশি এক্সপেক্ট করবেন না। আমরা কারও পকেটে টাকা গুঁজে দিয়ে আসতে পারব না।’’

এ দিনের সভা থেকে মেদিনীপুরের উপস্থিত জনতাকে স্বাধীনতা সংগ্রামের অতীত ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গদ্দারদের সম্পর্কে সাবধান করেন।

 

 

 

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হলদিয়ার সভা থেকে মমতার স্পষ্ট ঘোষণা ‘জোটে আছি, জোটে থাকব’

আপডেট : ১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ জোট নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার হলদিয়ায় নির্বাচনী জনসভা থেকে মমতা বলেন, “অল ইন্ডিয়া লেভেলে আমাকে অনেকে ভুল ভেবেছেন আমি বলেছি বাংলায় কোনও জোট নেই। কিন্তু ইন্ডিয়ায় যে জোট তা আমিই তৈরি করেছিলাম। ওই জোটটা দিয়ে আমরা সরকার তৈরি করব। আমরা জোটে থাকব। আমরা জোটে আছি। এখানকার সিপিএম, এখানকার কংগ্রেস নেই। কিন্তু অল ইন্ডিয়া লেভেলে ইন্ডিয়া জোট আমি তৈরি করেছিলাম। ইন্ডিয়া জোটে আমরা থাকব। ভুল বোঝাবুঝির ব্যাপার নেই। ইদানিং আমি লক্ষ্য করছি কোনও সংবাদমাধ্য়মে ভুলভাল খবর দেওয়া হচ্ছে। বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।”

বৃহস্পতিবার দুই মেদিনীপুরের তিনটি নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচির মধ্যে প্রথমেই সভা করেন হলদিয়ায়। এ দিন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে দুপুর ২টা নাগাদ এই জনসভায় বক্তব্য রাখেন তৃণমূল নেত্রী। সেই সভা থেকেই জাতীয় এবং রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট করেন মমতা।

জাতীয় রাজনীতিতে এনডিএ জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইন্ডিয়া জোট। কেন্দ্রের মোদি সরকারকে সরাতে সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী সব দলকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতে প্রধান উদ্যোগ নেয় তৃণমূল। এ দিনের সভা থেকে সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে বাংলায় ৪২টি কেন্দ্রে তৃণমূল একক শক্তিতে লড়াই করছে। সর্বভারতীয় স্তরের জোট যে রাজ্যে দানা বাঁধেনি সে কথাও প্রকাশ্য জনসভা থেকে মমতা স্পষ্ট করে দেন। অভিযোগ, রাজ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সিপিএম-প্রীতিই এই জোট ভাঙার জন্য দায়ী। একইসঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের নেতৃত্ব দাবি করেন, তৃনমূলকে পরাস্ত করতে নীতি নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে কংগ্রেস সিপিএম বিজেপি অলিখিত জোট করেছে।

এতদিন পর্যন্ত তৃণমূলের এই অবস্থান স্পষ্ট থাকলেও বিতর্কের সূত্রপাত হয় বুধবার শ্রীরামপুরের নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে। ওই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অনেকে অঙ্ক কষে বলছে..এবার বিজেপি হবে পগার পার। জেনে রেখে দিন ইন্ডিয়া জোট, বাংলার সিপিএম-কংগ্রেসকে ধরবেন না। ওরা এখানে বিজেপির সঙ্গে রয়েছে। ইন্ডিয়া জোটকে নেতৃত্ব দিয়ে আমরা বাইরে থেকে সবরকম সাহায্য করে দিয়ে সরকার গঠন করে দেব। যাতে বাংলার মা বোনেদের কোনওদিন অসুবিধা নয়। একশো দিনের কাজে কোনও দিন অসুবিধা না হয়।”

তবে বৃহস্পতিবার তমলুকের সভা থেকে সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নিজের দলের অবস্থান স্পষ্ট করে বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেন। মমতা বললেন, ‘‘ভোটের সময় কয়েকটা কথা বলতে চাই। মোদিকে আমি মোদিবাবু বলব না। বলব গ্যারান্টিবাবু। যেমন গদ্দার বলি, নাম নিই না। তেমনই এখানেও আমি নাম নেব না। আমি গ্যারান্টিবাবু বলব। তিনি কী বললেন, বিনা পয়সায় চাল দিচ্ছেন।  দু’বছর ধরে এক টাকাও দিচ্ছেন? আমি বলছি হয় আপনি ক্ষমা চান, না হলে বলুন আপনি টাকা দিয়েছেন চালের। ফোর টোয়েন্টির নতুন গ্যারান্টি। টিভিতে, কাগজে, বিজ্ঞাপনে সর্বত্র বলছে বিনা পয়সায় গ্যাস দিয়েছে। দিয়েছে? তার মানে গ্যারান্টিবাবু, ফোর টোয়েন্টি গ্যারান্টি, গ্যাসবেলুনের থেকেও বড় গ্যাসবেলুন, নো গ্যারান্টি। বলুন তো বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ দেবে বলেছিল, দিয়েছে? তার মানে নো গ্যারান্টি ফোর টোয়েন্টি।’’

একইসঙ্গে হলদিয়ায় দাঁড়িয়ে দল এবং বাংলার মানুষের সঙ্গে অধিকারী পরিবারের বেইমানির বিরুদ্ধে নাম না করে সরব হন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, “বাপ-ব্যাটা ১০ বছর কোন কাজটা করেছে? আমাদের মন্ত্রী হিসেবে দশ বছর ছিল। যা পেরেছে করে। সব লুঠে নিয়েছে। যখন তৃণমূল তৈরি করি বাপ-ব্যাটা কেউ ছিল না। ছিলেন অখিল গিরি। ওনারা তখন কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। গদ্দার আমার হাত দিয়ে জেতবার আগে অনেকবার ভোটে হেরেছে। যাদের নিজেদের হাজার-লক্ষ-কোটি টাকার সম্পত্তি আজ তারা বিজেপিতে গেছেন টাকা বাঁচাবার জন্য।” তিনি আরও বলেন, “নন্দীগ্রামে সিপিএমের সঙ্গে সমঝোতা করে অশান্তি বাপ-ব্যাটার। নন্দীগ্রামে আমার সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে। নন্দীগ্রামে আমার ভোট লুঠ হয়েছে। ভোটের পর লোডশেডিং করে রেজাল্ট বদলাল। জেলাশসাক পাল্টে লোডশেডিং করে রেজাল্ট পাল্টেছে। আজ না হলে কাল তার বদলা নেবই। চিরকাল বিজেপি থাকবে না। চিরকাল ইডি, সিবিআই কোলে রাখবে না।” একইসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী চাকরি বাতিল প্রসঙ্গের উত্থাপন করেন। বলেন, শিক্ষকদের চাকরি যাওয়ার আগে এক বাবু বলল বোমা ফাটাবে। বোমা ফাটাবে বলে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি খেয়ে নিল। মেদিনীপুরে কারচুপি করে চাকরি বেশি। ২৬ হাজার ছেলেমেয়ে ভয়ে মুখ খুলছে না। এই জেলায় চাকরিখেকো আছে, সাবধান।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনের সভা থেকে উপস্থিত শ্রোতাদের মেদিনীপুরের উন্নয়নের প্রসঙ্গ স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “মনে রাখবেন, আমি এখানে অনেক কাজ করেছি। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন করেছি।  আমি না  থাকলে দিঘা-তমলুক হত না। নন্দীগ্রামে যখন এসেছি, তখন কেউ আসেনি। এখানে কলেজ থেকে শুরু করে জলের লাইন, মাছের ব্যবসা এবং ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য পরিকাঠামো সব করেছি আমি।’’ বলেন, ” দিঘাতে কে সৈকতসরণি করেছে? বম্বের মতো মেরিন ড্রাইভ? তিনটে সেতু তৈরি করতে হয়েছে। এত সস্তার কাজ এগুলো নয়। শয়ে শয়ে কোটি টাকা খরচ হয়েছে।  তাই এখন দিঘায় এলে লোকে বলে কী ছিল আর কী হয়েছে। দিঘায় জগন্নাথের মন্দির থেকে  শুরু করে দিঘা গেট থেকে শুরু করে, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, জাদুঘর, মাতঙ্গিনী হাজরার বাড়িতে গ্যালারি, পিছাবনী স্মৃতিসৌধ আরও অনেক কিছু করেছি। যে ভাবে আমি দিঘা, হলদিয়া, নন্দকুমার, নন্দীগ্রামকে সাজিয়ে দিয়েছি, খেজুরিকে সাজিয়ে দিয়েছি… খেজুরিতে আগে কী করত? এখন ওখানে মস্তানি করছে!’’

শুধু তাই নয় দলীয় দূর্নীতি প্রসঙ্গে জনতাকে সচেতন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পার্টির নামে টাকা চাইলে দেবেন না। আমার পার্টি আপনাদের টাকা চাইবে না। আমাদের যতটা ক্ষমতা ততটাই করব। বিজেপির মতো বিজ্ঞাপন দিই না। তবে আমাদের কাছে বেশি এক্সপেক্ট করবেন না। আমরা কারও পকেটে টাকা গুঁজে দিয়ে আসতে পারব না।’’

এ দিনের সভা থেকে মেদিনীপুরের উপস্থিত জনতাকে স্বাধীনতা সংগ্রামের অতীত ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গদ্দারদের সম্পর্কে সাবধান করেন।