আইজিএসটি সংগ্রহে রাজ্যে আদায় বাড়ল ২১ শতাংশেরও বেশি
- আপডেট : ৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার
- / 52
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ আন্তঃরাজ্য পণ্য ও পরিষেবার ক্ষেত্রে আদায়যোগ্য আইজিএসটি (ইন্টিগ্রেটেড গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স) সংগ্রহে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রাজ্য সরকার উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবারে আইজিএসটি আদায়ে ২১ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি হয়েছে, যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকা। রাজ্য বাণিজ্য কর দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে যেখানে আইজিএসটি সংগ্রহ ছিল ১৮,০০০ কোটি টাকা, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২,০০০ কোটি টাকায়।
রাজ্য সরকারের এক আধিকারিককে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছেন, “ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট (আইটিসি)-এর ব্যবহার নিয়ে আরও সুসংগঠিত পরিকল্পনা, আইটিসি রিভার্সাল এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে সচেতন এন্টি-ইভেশন (কর ফাঁকি রোধ) অভিযানে কারণেই এই সাফল্য এসেছে। বিশেষ করে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের শেষ দুই ত্রৈমাসিকে এই অভিযান আরও জোরালো হয়। আর এর ফলেই আই জি এস টি সংগ্রহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।” তিনি আরও জানান, “ডেটা বিশ্লেষণের সময় যখনই কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়েছে—যেমন, উচ্চ টার্নওভার অথচ তথ্যের অনুপস্থিতি, ভুয়ো সংযোগযুক্ত জিএসটি রেজিস্ট্রেশন, টিডিএস গরমিল ইত্যাদি—তখনই আমাদের এন্টি-ইভেশন টিম ব্যবস্থা নিয়েছে।”
নবান্ন সূত্রে খবর, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রাজ্যের এন্টি-ইভেশন টিম মোট ৭,৩০০ জায়গায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২,৪০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। তুলনায় ২০২৩-২৪ সালে অভিযান হয়েছিল ৬,৯০০ জায়গায় এবং তখন ১,০০০-রও বেশি আইটিসি জালিয়াতি ধরা পড়ে, যার থেকে আদায় হয়েছিল মাত্র ২৩০ কোটি টাকা।
এখানেই শেষ নয় নবান্নের তথ্য বলছে, আধার ভিত্তিক বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের ফলে কমেছে ভুয়ো জিএসটি রেজিস্ট্রেশন। তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাজ্য সরকার জিএসটি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে আধার-ভিত্তিক বায়োমেট্রিক যাচাই বাধ্যতামূলক করেছে। এর ফলে ভুয়ো রেজিস্ট্রেশনের প্রবণতা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আগে প্রতি মাসে গড়ে যেখানে ৮,৫০০টি আবেদন জমা পড়ত, আধার যাচাই চালুর পর তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫,৫০০-তে। একাধিক সংস্থা ও ব্যক্তিরা ভুয়ো পরিচয় দিয়ে জিএসটি রেজিস্ট্রেশন করার প্রবণতা কমেছে বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা।
নবান্নের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রাজ্যের মোট জিএসটি আদায় হয়েছে ৪৬,৮৯৩ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবর্ষের তুলনায় প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা বেশি। রাজ্য অর্থ দফতর মনে করছে, প্রযুক্তিনির্ভরতা এবং তথ্যভিত্তিক কৌশল, একইসঙ্গে এন্টি-ইভেশন টিমের সক্রিয় কর্মকাণ্ডের ফলে রাজস্ব আদায়ে এই বিরাট সাফল্য এসেছে।
এরফলে একদিকে যেমন কর ফাঁকি রোধে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে রাজ্য, অন্যদিকে করদাতাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক তথ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ে নতুন দিশা খুলছে সরকার। আধার যাচাইকরণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ আগামী দিনে আরও রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন নবান্নের আধিকারিকরা।