অশোকনগরে কিডনি চক্রের ছক ফাঁস, নেপথ্যে ‘ঘুঘু’ আইনজীবী
- আপডেট : ৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার
- / 41
পুবের কলম প্রতিবেদক, বারাসতঃ অশোকনগর কিডনি পাচার চক্রে বড়সড় মোড়। এবার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা এবং আলিপুর আদালতের আইনজীবী প্রদীপ কুমার বর (৩৭)। অশোকনগর থানার পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে তলব করে। বিকেল চারটে নাগাদ থানায় হাজিরা দেন ওই আইনজীবী। প্রায় রাত তিনটে পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশের দাবি, সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ায় তাঁকে সেখানেই গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, এর আগে গ্রেফতার হওয়া পাচার চক্রের পাঁচ অভিযুক্ত— অমিত জানা, মৌসুমি সর্দার, পিয়ালি দে, গৌরাঙ্গ সর্দার ও বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতল;জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে। তদন্তে উঠে আসে, বহু বছর ধরেই কিডনি দান ও গ্রহণ সংক্রান্ত এফিডেভিটের মাধ্যমে বেআইনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
আইন অনুযায়ী, কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে জেলা ও রাজ্যস্তরে অনুমোদনের প্রক্রিয়া রয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য দফতরের সুপারিশ ছাড়া আদালত থেকে অনুমোদন পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু পুলিশ জানায়, প্রদীপবাবু নাকি ‘নট রেকমেন্ড’ হওয়া অনেক কেসকেই বেআইনি পথে আদালতের ছাড়পত্র পাইয়ে দিতেন। হাবরা ও আশপাশের এলাকায় এসব কাজ তার মাধ্যমেই হত।
আলিপুর কোর্টের নাম ব্যবহার করে হাবরার প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত নথিপত্র দেখে পুলিশের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। তদন্তকারীরা জানান, ২০১৪ সাল থেকে এই পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন প্রদীপ। একটি ৫০০ টাকার এফিডেভিটের জন্য তিনি ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেন, যদিও আদালতের নথিতে টাকার লেনদেনের কোনও উল্লেখ নেই।
শুক্রবার তাঁকে বারাসত আদালতে তোলা হলে, পুলিশ আট দিনের হেফাজতের আবেদন করে। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। এই ঘটনায় তদন্ত আরও বিস্তৃত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা।