১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি দল 

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 35

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাণিজ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে উত্তরবঙ্গে হাজির হলেন রাষ্ট্রসংঘের ৪০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। আন্তর্জাতিক সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সফরকালে তারা অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক দিকগুলির উপর আলোকপাত করেন পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়। এই পরিদর্শনের উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে সফল বাণিজ্য উদ্যোগের জন্য সুযোগ বাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো চিহ্নিত করা।

মঙ্গলবার, রাষ্ট্রসংঘের ৪০ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলটি দিল্লি থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামে। এরপর, তারা সড়কপথে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়িতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছয়। বিএসএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার পর, তারা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন বলে জানা যায়। এ ছাড়াও এই দলের প্রতিনিধিরা সীমান্ত দিয়ে আগমন, আমদানি ও রফতানির বিষয়গুলি খতিয়ে দেখেন। পরিদর্শনের পর, রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা বলেন যে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে তারা সন্তুষ্ট।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবেদনের ‘রাজনৈতিক ব্যবহার’ হলে চরম জবাব দেবে ইরান

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। সেই প্রেক্ষিতে দুই দেশের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। তার প্রভাব বাণিজ্যেও পড়ে। তবে ঈদের ছুটির পর সীমান্ত জুড়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি পুনরায় গতি পায়। রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়া বা উত্তর-পূর্ব ভারতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্য ও সম্পর্কও পর্যালোচনা করেন।

আরও পড়ুন: গাজা দখলের নয়া ছক ইসরাইলের, উদ্বেগ রাষ্ট্রসংঘের

রাষ্ট্রসংঘ প্রতিনিধি দলের সদস্য অর্থনীতিবিদ ক্রিস গারভে বলেন, ‘আমরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পরিদর্শন করেছি। তারপর ভারত-নেপাল সীমান্ত। মূলত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্তজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা, সীমান্ত জুড়ে আমদানি-রফতানি এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খতিয়ে দেখা হয়। প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে কীভাবে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যায় এবং ব্যাবসা আরও উন্নত করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করা হয়। আমরা দুই দেশের মধ্যে অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট। দুই দেশ তাদের কাজের গতি বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল পরিষেবা চালু করেছে, যা প্রশংসনীয়।’

আরও পড়ুন: ঔরঙ্গজেবের সমাধি রক্ষা করার আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘকে চিঠি মুঘল বংশধর ইয়াকুব হাবিবুদ্দিনের

রাষ্ট্রসংঘ প্রতিনিধিদলের আরেক সদস্য রাজেন সুদেশরত্ন বলেন, ‘আমরা মূলত সীমান্তবর্তী এলাকায় বাণিজ্যে বিদ্যমান স্থল বন্দরের সমস্যাগুলি দেখি। প্রতিটি দেশ বাণিজ্যে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়। কিছু জায়গায় ভৌগোলিক সমস্যা থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত সমস্যা থাকতে পারে। যখন তিনটি দেশ সীমানা ভাগ করে নেয়, তখন তিনটি জায়গায় বিভিন্ন নিয়ম অনুসারে বাণিজ্য করা হয়। আমরা সেই সমস্ত দিকগুলি এবং সরকার কীভাবে আমদানি ও রফতানিতে সহায়তা করতে পারে এবং ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহার করে কীভাবে বাণিজ্য খরচ কমানো যায় তা দেখি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এবার আমরা নেপালেও একটি কর্মশালা করেছি। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত এবং নেপালের সকল নীতিনির্ধারক, কাস্টমস, রাজস্ব বিভাগ এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি দল 

আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাণিজ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে উত্তরবঙ্গে হাজির হলেন রাষ্ট্রসংঘের ৪০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। আন্তর্জাতিক সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সফরকালে তারা অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক দিকগুলির উপর আলোকপাত করেন পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়। এই পরিদর্শনের উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে সফল বাণিজ্য উদ্যোগের জন্য সুযোগ বাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো চিহ্নিত করা।

মঙ্গলবার, রাষ্ট্রসংঘের ৪০ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলটি দিল্লি থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামে। এরপর, তারা সড়কপথে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়িতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছয়। বিএসএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার পর, তারা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন বলে জানা যায়। এ ছাড়াও এই দলের প্রতিনিধিরা সীমান্ত দিয়ে আগমন, আমদানি ও রফতানির বিষয়গুলি খতিয়ে দেখেন। পরিদর্শনের পর, রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা বলেন যে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে তারা সন্তুষ্ট।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবেদনের ‘রাজনৈতিক ব্যবহার’ হলে চরম জবাব দেবে ইরান

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। সেই প্রেক্ষিতে দুই দেশের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। তার প্রভাব বাণিজ্যেও পড়ে। তবে ঈদের ছুটির পর সীমান্ত জুড়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি পুনরায় গতি পায়। রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়া বা উত্তর-পূর্ব ভারতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্য ও সম্পর্কও পর্যালোচনা করেন।

আরও পড়ুন: গাজা দখলের নয়া ছক ইসরাইলের, উদ্বেগ রাষ্ট্রসংঘের

রাষ্ট্রসংঘ প্রতিনিধি দলের সদস্য অর্থনীতিবিদ ক্রিস গারভে বলেন, ‘আমরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পরিদর্শন করেছি। তারপর ভারত-নেপাল সীমান্ত। মূলত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্তজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা, সীমান্ত জুড়ে আমদানি-রফতানি এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খতিয়ে দেখা হয়। প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে কীভাবে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যায় এবং ব্যাবসা আরও উন্নত করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করা হয়। আমরা দুই দেশের মধ্যে অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট। দুই দেশ তাদের কাজের গতি বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল পরিষেবা চালু করেছে, যা প্রশংসনীয়।’

আরও পড়ুন: ঔরঙ্গজেবের সমাধি রক্ষা করার আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘকে চিঠি মুঘল বংশধর ইয়াকুব হাবিবুদ্দিনের

রাষ্ট্রসংঘ প্রতিনিধিদলের আরেক সদস্য রাজেন সুদেশরত্ন বলেন, ‘আমরা মূলত সীমান্তবর্তী এলাকায় বাণিজ্যে বিদ্যমান স্থল বন্দরের সমস্যাগুলি দেখি। প্রতিটি দেশ বাণিজ্যে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়। কিছু জায়গায় ভৌগোলিক সমস্যা থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত সমস্যা থাকতে পারে। যখন তিনটি দেশ সীমানা ভাগ করে নেয়, তখন তিনটি জায়গায় বিভিন্ন নিয়ম অনুসারে বাণিজ্য করা হয়। আমরা সেই সমস্ত দিকগুলি এবং সরকার কীভাবে আমদানি ও রফতানিতে সহায়তা করতে পারে এবং ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহার করে কীভাবে বাণিজ্য খরচ কমানো যায় তা দেখি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এবার আমরা নেপালেও একটি কর্মশালা করেছি। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত এবং নেপালের সকল নীতিনির্ধারক, কাস্টমস, রাজস্ব বিভাগ এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।’