২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চার্চপ্রধানের বিরুদ্ধে পিতৃত্বের অভিযোগ আনলেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার
  • / 8

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান দেশটির প্রধান ধর্মীয় নেতা, আর্মেনিয়ান অ্যাপোস্টলিক চার্চের প্রধান ক্যাথলিকোস কারেকিন দ্বিতীয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ক্যাথলিকোস নাকি ব্রহ্মচর্য (সন্তান না নেওয়ার) শপথ ভেঙে সন্তানের পিতা হয়েছেন।

এক বক্তব্যে পাশিনিয়ান বলেন, ‘আপনার কৃপা, যান গিয়ে আপনার কাকিমার সঙ্গে সময় কাটান। আমার কাছে আর কী চান?’ এই মন্তব্যের পর দেশজুড়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। অনেকেই বলছেন, এটা শুধু ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং সরকারের সঙ্গে চার্চের বহুদিনের টানাপোড়েন এবার প্রকাশ্যে এলো। প্রধানমন্ত্রী চার্চপ্রধানের পদত্যাগ দাবি করলেও বাস্তবে সরকারের এমন কোনও আইনি ক্ষমতা নেই। তিনি কোনও প্রমাণ দেখাননি, তবে বলেছেন; প্রয়োজনে তা প্রকাশ করবেন। তিনি আরও এক আর্চবিশপের বিরুদ্ধেও অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলেছেন।

আর্মেনিয়ায় ধর্ম ও রাষ্ট্র আলাদা হলেও, সংবিধানে আর্মেনিয়ান চার্চকে ‘জাতীয় চার্চ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ৩০১ খ্রিস্টাধে খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা প্রথম দেশ হিসেবে পরিচিত আর্মেনিয়া।

আরও পড়ুন: ক্রেতাদের ডিজিটাল অভিযোগ সহজতর করতে চালু ‘ই জাগৃতি’ পোর্টাল, বিধানসভায় জানালেন মন্ত্রী

চার্চ এখনও এ সব অভিযোগের জবাব দেয়নি, তবে বলেছে সরকার তাদের চুপ করাতে চাইছে। তারা মনে করে, সরকারের চার্চে হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। চার্চের নিয়ম অনুযায়ী, শুধু সেই সন্ন্যাসীরাই ক্যাথলিকোস হতে পারেন, যারা ব্রহ্মচর্যের শপথ পালন করেন। তাই অভিযোগ যদি সত্য হয়, তবে কারেকিন দ্বিতীয় ওই পদে থাকার যোগ্য নন।

আরও পড়ুন: বিমানবালাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার মাস্কের

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে একটি রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। কারণ ২০২০ সালে আজারবাইজানের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজয়ের পর চার্চ প্রধানসহ অনেকে পাশিনিয়ানের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন। এরপর থেকেই চার্চ সরকারবিরোধী কণ্ঠে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি ক্যাথলিকোস কারেকিন দ্বিতীয় বলেছেন, নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল থেকে যেসব আর্মেনীয় পালিয়ে এসেছে, তাদের দেশে ফিরতে দিতে হবে। কিন্তু সরকার এখন আজারবাইজানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করতে চাইছে, যেখানে এই রকম দাবি বাদ দিতে হবে। চার্চের অবস্থান এই আলোচনায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছে সরকার।

আরও পড়ুন: বাংলা মাতৃপ্রকল্পে’ টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র!

যদিও চার্চপ্রধানের বিরুদ্ধে আগে থেকেই নানা দুর্নীতির অভিযোগ ছিল, তবে কোনও সরকারপ্রধান আগে এত স্পষ্টভাবে তাকে আক্রমণ করেননি। ২০১৮ সালে পাশিনিয়ান বলেছিলেন, ‘সরকার চার্চের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।’ কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তিনি সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

চার্চপ্রধানের বিরুদ্ধে পিতৃত্বের অভিযোগ আনলেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী

আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান দেশটির প্রধান ধর্মীয় নেতা, আর্মেনিয়ান অ্যাপোস্টলিক চার্চের প্রধান ক্যাথলিকোস কারেকিন দ্বিতীয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ক্যাথলিকোস নাকি ব্রহ্মচর্য (সন্তান না নেওয়ার) শপথ ভেঙে সন্তানের পিতা হয়েছেন।

এক বক্তব্যে পাশিনিয়ান বলেন, ‘আপনার কৃপা, যান গিয়ে আপনার কাকিমার সঙ্গে সময় কাটান। আমার কাছে আর কী চান?’ এই মন্তব্যের পর দেশজুড়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। অনেকেই বলছেন, এটা শুধু ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং সরকারের সঙ্গে চার্চের বহুদিনের টানাপোড়েন এবার প্রকাশ্যে এলো। প্রধানমন্ত্রী চার্চপ্রধানের পদত্যাগ দাবি করলেও বাস্তবে সরকারের এমন কোনও আইনি ক্ষমতা নেই। তিনি কোনও প্রমাণ দেখাননি, তবে বলেছেন; প্রয়োজনে তা প্রকাশ করবেন। তিনি আরও এক আর্চবিশপের বিরুদ্ধেও অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলেছেন।

আর্মেনিয়ায় ধর্ম ও রাষ্ট্র আলাদা হলেও, সংবিধানে আর্মেনিয়ান চার্চকে ‘জাতীয় চার্চ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ৩০১ খ্রিস্টাধে খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা প্রথম দেশ হিসেবে পরিচিত আর্মেনিয়া।

আরও পড়ুন: ক্রেতাদের ডিজিটাল অভিযোগ সহজতর করতে চালু ‘ই জাগৃতি’ পোর্টাল, বিধানসভায় জানালেন মন্ত্রী

চার্চ এখনও এ সব অভিযোগের জবাব দেয়নি, তবে বলেছে সরকার তাদের চুপ করাতে চাইছে। তারা মনে করে, সরকারের চার্চে হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। চার্চের নিয়ম অনুযায়ী, শুধু সেই সন্ন্যাসীরাই ক্যাথলিকোস হতে পারেন, যারা ব্রহ্মচর্যের শপথ পালন করেন। তাই অভিযোগ যদি সত্য হয়, তবে কারেকিন দ্বিতীয় ওই পদে থাকার যোগ্য নন।

আরও পড়ুন: বিমানবালাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার মাস্কের

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে একটি রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। কারণ ২০২০ সালে আজারবাইজানের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজয়ের পর চার্চ প্রধানসহ অনেকে পাশিনিয়ানের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন। এরপর থেকেই চার্চ সরকারবিরোধী কণ্ঠে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি ক্যাথলিকোস কারেকিন দ্বিতীয় বলেছেন, নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল থেকে যেসব আর্মেনীয় পালিয়ে এসেছে, তাদের দেশে ফিরতে দিতে হবে। কিন্তু সরকার এখন আজারবাইজানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করতে চাইছে, যেখানে এই রকম দাবি বাদ দিতে হবে। চার্চের অবস্থান এই আলোচনায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছে সরকার।

আরও পড়ুন: বাংলা মাতৃপ্রকল্পে’ টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র!

যদিও চার্চপ্রধানের বিরুদ্ধে আগে থেকেই নানা দুর্নীতির অভিযোগ ছিল, তবে কোনও সরকারপ্রধান আগে এত স্পষ্টভাবে তাকে আক্রমণ করেননি। ২০১৮ সালে পাশিনিয়ান বলেছিলেন, ‘সরকার চার্চের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।’ কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তিনি সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।