২৩ জুন ঐতিহাসিক পলাশী দিবস
আজ বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়, বিশ্বাসঘাত ও মোনাফেকদের ষড়যন্ত্রে পরাজিত হন সিরাজউদ্দৌলা

- আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 29
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আজ ২৩ জুন। ইতিহাসের পাতায় লেখা এক কালো অধ্যায়। আজকের দিনেই বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। ভাগীরথীর তীরে সংঘটিত হয়েছিল এক ভয়াবহ যুদ্ধ। সেই যুদ্ধের ক্ষত আজও বাঙালি তথা ভারতবাসী বয়ে নিয়ে চলেছে। নদিয়ার পলাশীর আমবাগানে বাংলা, বিহার ও ওড়িশার নবাব সিরাজউদ্দৌলার বাহিনী মুখোমুখি হয় ইংরেজ বাহিনীর। যুদ্ধের নামে লেখা হয় এক ষড়যন্ত্রের ইতিহাস। ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে পরাজিত হন বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা। প্রায় দুইশো বছরের ব্রিটিশ পরাধীনতার অন্ধকারে ডুবে যায় বাংলা তথা ভারতবর্ষ। এ জন্য আজকের দিনটি ‘পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে সিংহাসুচ্যুত করার জন্য ব্রিটিশ সেনাপতি ক্যাপ্টেন ক্লাইভ ও অ্যাডমিরাল ওয়াটসনের নেতৃত্বে একদল সৈন্যকে জাহাজে মাদ্রাজ থেকে বাংলায় পাঠানো হয়।
ঐতিহাসিকরা লিখেছেন , প্রায় এক লাখ সেনাবাহিনী নিয়েও মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা ক্লাইভের অল্পসংখ্যক বাহিনীর কাছে পরাজিত হন। এই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন ঘষেটি বেগম, জগৎ শেঠ, রায় দুর্লভ, উমিচাঁদ-সহ অনেকে।
পলাশীর আমবাগানে ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন সকাল ৮টায় ইংরেজ ও নবাবের বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যে যুদ্ধের ছত্রে ছত্রে লেখা ছিল বিশ্বাসঘাতকতা আর নেমকহারামির কাহিনি। যা আগামী ২০০ বছর ভারতবাসীকে এই ষড়যন্ত্র এবং বিশ্বাসঘাতকতার খেসারত দিতে হয়েছিল। ক্লাইভের মাত্র ৩ হাজার সৈন্যের কাছে ২৮ হাজার অশ্বারোহী ও ৫০ হাজার পদাতিক সৈন্য নিয়েও নবাব বাহিনীকে পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছিল। সিরাজের পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য প্রায় ২০০ বছরের জন্য হারিয়ে যায় ব্রিটিশ উপনিবেশিকতার অন্ধকারে।
পরবর্তীকালে নবাব সৈন্যদের একত্রিত করে ঘুরে দাঁড়াত চাইলেও তা ব্যর্থ হয়। মীর জাফরের ছেলে মীরনের নির্দেশে মুহাম্মদ আলি বেগের ছুরিকাঘাত নিহত হন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলা। এরপর বাংলার ইতিহাস অস্থিরতায় ভরা। ব্রিটিশের ক্রীড়ানক হয়ে একের পর এক বদল হতে থাকে নবাব। অবশেষে পলাশী যুদ্ধের ঠিক সাত বছরের মাথায় ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ব্রিটিশরা বাংলার ক্ষমতা পূর্ণরূপে দখল করে নেয়।