৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল-আকসা মসজিদ ‘রেড লাইন’ গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাসের প্রতিক্রিয়া পেল ইসরাইল

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ৫ জুলাই ২০২৫, শনিবার
  • / 191

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ফিলিস্তিনের অন্যতম প্রধান প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ফের জোরালো ভাষায় ঘোষণা করেছে যে, জেরুজালেমে অবস্থিত পবিত্র আল-আকসা মসজিদ তাদের কাছে একটি ‘রেড লাইন’ ; অর্থাৎ এই মসজিদের ওপর কোনো ধরনের আগ্রাসন বা অমানবিক কার্যকলাপ তারা কিছুতেই মেনে নেবে না।

হামাসের আল-কুদস বিষয়ক দফতরের প্রধান হরুন নাসের আল-দীন শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, তআল-আকসা কেবল একটি মসজিদ নয়; এটি ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মপরিচয়, ইতিহাস ও বিশ্বাসের প্রতীক। ইসরাইল এই মসজিদকে ধ্বংস করার জন্য যে পরিকল্পিত হামলা ও উস্কানি দিচ্ছে, আমরা তার জবাব দিতে প্রস্তুত আছি ; প্রয়োজনে যেকোনো মূল্য চুকিয়েও।

তিনি বলেন, তইসরাইলি দখলদার সেনা এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীরা প্রতিনিয়ত আল-আকসা চত্বরে প্রবেশ করছে, নামায পড়তে বাধা দিচ্ছে এবং সেখানকার ধর্মীয় পরিবেশকে ধ্বংস করে নতুন এক ‘ইহুদি চরিত্র’ আরোপ করার চেষ্টা করছে। এই প্রক্রিয়াটি পরিকল্পিতভাবে ‘জুডাইইজেশন’ নামক একটি নীতির আওতায় পরিচালিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘে সম্মেলন শুরু, নেতৃত্বে ফ্রান্স ও সৌদি আরব

হামাস নেতা আরও বলেন, তআমরা আমাদের জাতির সব জনগণকে ; বিশেষ করে জেরুজালেম এবং ১৯৪৮-দখলকৃত ফিলিস্তিন অংশে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের ; আহ্বান জানাচ্ছি, যেন তারা আল-আকসা মসজিদের চত্বরে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন, তা রক্ষা করেন এবং ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এই মসজিদকে ফাঁকা করার যে পরিকল্পনা চলছে, সেটি সফল হতে দেওয়া চলবে না।

আরও পড়ুন: ত্রাণবাহী ‘হানদালা’ জাহাজে ইসরাইলি আক্রমণ

সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, নানা ধরনের সামরিক ও প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, প্রায় ৪০,০০০ ফিলিস্তিনি মুসল্লি গত শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেছেন আল-আকসা মসজিদে। তবে আল-আমুদ ও আল-আসবাত গেটসহ মসজিদের প্রবেশপথগুলোতে কড়া নজরদারি চালিয়েছে ইসরাইলি পুলিশ। তারা বহু মুসল্লির পরিচয়পত্র যাচাই করেছে, প্রবেশে বাধা দিয়েছে এবং বহু তরুণকে গ্রেফতার করেছে।

আরও পড়ুন: গাজা-প্রতিবাদে বাধা: বোম্বে হাইকোর্ট এর মত অসাংবিধানিক, মত কাটজুর

ফিলিস্তিনের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জুন মাসে আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলি বাহিনী অন্তত ২৫ বার অভিযান চালায়, এবং নিরাপত্তার অজুহাতে মসজিদ ১১ বার বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সময়ে, আল-খালিলের ইব্রাহিমি মসজিদেও ৮৯ বার আজান বন্ধ করা হয় এবং টানা ১২ দিন সেখানে মুসলিমদের উপাসনা করতে দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে, ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির নতুন এক প্রস্তাবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং বর্তমানে প্রস্তাবের বিস্তারিত আলোচনা চলছে। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচার সংস্থা কান জানিয়েছে, হামাসের তিনটি প্রধান শর্ত রয়েছে: প্রথমত আগের মতো সাহায্য বিতরণের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, দ্বিতীয়ত, প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো আর তৃতীয়ত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার। ইদিৎ আহরোনোত পত্রিকা আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সোমবার ওয়াশিংটনে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে পারেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আল-আকসা মসজিদ ‘রেড লাইন’ গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাসের প্রতিক্রিয়া পেল ইসরাইল

আপডেট : ৫ জুলাই ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ফিলিস্তিনের অন্যতম প্রধান প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ফের জোরালো ভাষায় ঘোষণা করেছে যে, জেরুজালেমে অবস্থিত পবিত্র আল-আকসা মসজিদ তাদের কাছে একটি ‘রেড লাইন’ ; অর্থাৎ এই মসজিদের ওপর কোনো ধরনের আগ্রাসন বা অমানবিক কার্যকলাপ তারা কিছুতেই মেনে নেবে না।

হামাসের আল-কুদস বিষয়ক দফতরের প্রধান হরুন নাসের আল-দীন শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, তআল-আকসা কেবল একটি মসজিদ নয়; এটি ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মপরিচয়, ইতিহাস ও বিশ্বাসের প্রতীক। ইসরাইল এই মসজিদকে ধ্বংস করার জন্য যে পরিকল্পিত হামলা ও উস্কানি দিচ্ছে, আমরা তার জবাব দিতে প্রস্তুত আছি ; প্রয়োজনে যেকোনো মূল্য চুকিয়েও।

তিনি বলেন, তইসরাইলি দখলদার সেনা এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীরা প্রতিনিয়ত আল-আকসা চত্বরে প্রবেশ করছে, নামায পড়তে বাধা দিচ্ছে এবং সেখানকার ধর্মীয় পরিবেশকে ধ্বংস করে নতুন এক ‘ইহুদি চরিত্র’ আরোপ করার চেষ্টা করছে। এই প্রক্রিয়াটি পরিকল্পিতভাবে ‘জুডাইইজেশন’ নামক একটি নীতির আওতায় পরিচালিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘে সম্মেলন শুরু, নেতৃত্বে ফ্রান্স ও সৌদি আরব

হামাস নেতা আরও বলেন, তআমরা আমাদের জাতির সব জনগণকে ; বিশেষ করে জেরুজালেম এবং ১৯৪৮-দখলকৃত ফিলিস্তিন অংশে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের ; আহ্বান জানাচ্ছি, যেন তারা আল-আকসা মসজিদের চত্বরে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন, তা রক্ষা করেন এবং ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এই মসজিদকে ফাঁকা করার যে পরিকল্পনা চলছে, সেটি সফল হতে দেওয়া চলবে না।

আরও পড়ুন: ত্রাণবাহী ‘হানদালা’ জাহাজে ইসরাইলি আক্রমণ

সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, নানা ধরনের সামরিক ও প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, প্রায় ৪০,০০০ ফিলিস্তিনি মুসল্লি গত শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেছেন আল-আকসা মসজিদে। তবে আল-আমুদ ও আল-আসবাত গেটসহ মসজিদের প্রবেশপথগুলোতে কড়া নজরদারি চালিয়েছে ইসরাইলি পুলিশ। তারা বহু মুসল্লির পরিচয়পত্র যাচাই করেছে, প্রবেশে বাধা দিয়েছে এবং বহু তরুণকে গ্রেফতার করেছে।

আরও পড়ুন: গাজা-প্রতিবাদে বাধা: বোম্বে হাইকোর্ট এর মত অসাংবিধানিক, মত কাটজুর

ফিলিস্তিনের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জুন মাসে আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলি বাহিনী অন্তত ২৫ বার অভিযান চালায়, এবং নিরাপত্তার অজুহাতে মসজিদ ১১ বার বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সময়ে, আল-খালিলের ইব্রাহিমি মসজিদেও ৮৯ বার আজান বন্ধ করা হয় এবং টানা ১২ দিন সেখানে মুসলিমদের উপাসনা করতে দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে, ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির নতুন এক প্রস্তাবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং বর্তমানে প্রস্তাবের বিস্তারিত আলোচনা চলছে। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচার সংস্থা কান জানিয়েছে, হামাসের তিনটি প্রধান শর্ত রয়েছে: প্রথমত আগের মতো সাহায্য বিতরণের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, দ্বিতীয়ত, প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো আর তৃতীয়ত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার। ইদিৎ আহরোনোত পত্রিকা আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সোমবার ওয়াশিংটনে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে পারেন।