২৭ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নেই চেয়ারপার্সন-নেই সদস্য, নামেই রয়েছে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন!

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 128

নয়াদিল্লি: দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষা, সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারের জন্য গঠিতে হয়েছিল জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন (এনসিএম)। কিন্তু বর্তমানে সেই কমিশনে নেই কোনও চেয়ারপার্সন, নেই কোনও সদস্যও। শুধু নামেই রয়ে গেছে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন। কার্যত দীর্ঘ সময় ধরেই অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে এনসিএম। কয়েক বছর ধরে এনসিএম-এর প্রধান ও সদস্য পদ খালি হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে কমিশনের সমস্ত কাজ থমকে রয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের এপ্রিলে এনসিএম-এর চেয়ারপার্সনের পদ থেকে অবসর নেন ইকবাল সিং লালপুরার। তারপর থেকে অর্থাৎ এক বছরের বেশি সময় ধরে চেয়ারপার্সনের পদে কাউকে নিয়োগ করেনি কেন্দ্র। সূত্রের খবর, চেয়ারপারসনসহ কমিশনের পাঁচ সদস্য ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসর নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত নতুন কোনো নিয়োগ করা হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি রাজনৈতিক কারণেই শূন্যপদ পূরণ না করে এনসিএম-কে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে!

কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনে কাজ করে এনসিএম। স্বতন্ত্র সংস্থাটির আধা-বিচারিক ক্ষমতাও রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, এনসিএম-এ চেয়ারপার্সন এবং ভাইস-চেয়ারপার্সন সহ সাতজন সদস্য থাকেন। ১৯৯২ সালের জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন আইনে মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি ও জৈন এই ছয়টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে একজন করে সদস্য নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে শূন্য পদে কাউকেই নিয়োগ করেনি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক। তবে এভাবে শূন্য পদ পূরণে বিলম্ব বা গড়িমসি করা প্রথম নয়। এর আগে ২০১৭ সালে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন মাসের পর মাস ধরে শূন্য পদের কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। শূন্য পদে নিয়োগ না করা নিয়ে কেন্দ্রের গড়িমসিকে তিরস্কার করেছিল আদালত। ২০২১ সালে দিল্লি হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে এনসিএম-এর শূন্য পদ পূরণ করতে নির্দেশও দিয়েছিল।

আরও পড়ুন: ‘তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিও না’ প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের বার্তা  ১৯৮৩ বিশ্বকাপের সদস্যদের

সংখ্যালঘু কমিশনের (১৯৭৮-২০১৫) প্রাক্তন চেয়ারপার্সন তাহির মাহমুদ এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি কখনই এই সংস্থাগুলির উপযোগিতা পুরোপুরি অনুমোদন করিনি।” তিনি আরও বলেন, কমিশন গঠনের আগে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের অবস্থা যেমন ছিল তেমনই রয়েছে। এনসিএম একটি ‘শোপিস’ (লোক দেখানো)। এটি মূলত বিশ্বস্ত রাজনীতিবিদদের জন্য স্টপগ্যাপ প্লেসমেন্ট এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমলাদের জন্য একটি অবসর পরবর্তী পুরষ্কার পদ।

আরও পড়ুন: সংঘাতের আবহে নয়া মোড়, আপ মনোনীত বিদ্যুৎ পর্ষদের ২ সদস্যকে সরালেন উপরাজ্যপাল

শেষ কমিশনের চেয়ারপার্সন ছিলেন ইকবাল সিং লালপুরা। তাঁর অবসর নেওয়ার পর ওই পদে আর কাউকে এখনও নিয়োগ করা হয়নি। লালপুরা বিজেপির টিকিটে পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এর আগে এই পদে ছিলেন বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি। পরে তিনি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রীও হয়েছিলেন। এনসিএমের এক প্রাক্তন সদস্য বলেন, বরাবরই কমিশনের পদগুলিতে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বসানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তারাই পদগুলি দখল করা রয়েছে।

আরও পড়ুন: অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ঋষিতা বসু’কে ঘিরে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নেই চেয়ারপার্সন-নেই সদস্য, নামেই রয়েছে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন!

আপডেট : ৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার

নয়াদিল্লি: দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষা, সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারের জন্য গঠিতে হয়েছিল জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন (এনসিএম)। কিন্তু বর্তমানে সেই কমিশনে নেই কোনও চেয়ারপার্সন, নেই কোনও সদস্যও। শুধু নামেই রয়ে গেছে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন। কার্যত দীর্ঘ সময় ধরেই অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে এনসিএম। কয়েক বছর ধরে এনসিএম-এর প্রধান ও সদস্য পদ খালি হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে কমিশনের সমস্ত কাজ থমকে রয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের এপ্রিলে এনসিএম-এর চেয়ারপার্সনের পদ থেকে অবসর নেন ইকবাল সিং লালপুরার। তারপর থেকে অর্থাৎ এক বছরের বেশি সময় ধরে চেয়ারপার্সনের পদে কাউকে নিয়োগ করেনি কেন্দ্র। সূত্রের খবর, চেয়ারপারসনসহ কমিশনের পাঁচ সদস্য ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অবসর নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত নতুন কোনো নিয়োগ করা হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি রাজনৈতিক কারণেই শূন্যপদ পূরণ না করে এনসিএম-কে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে!

কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনে কাজ করে এনসিএম। স্বতন্ত্র সংস্থাটির আধা-বিচারিক ক্ষমতাও রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, এনসিএম-এ চেয়ারপার্সন এবং ভাইস-চেয়ারপার্সন সহ সাতজন সদস্য থাকেন। ১৯৯২ সালের জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন আইনে মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি ও জৈন এই ছয়টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে একজন করে সদস্য নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে শূন্য পদে কাউকেই নিয়োগ করেনি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক। তবে এভাবে শূন্য পদ পূরণে বিলম্ব বা গড়িমসি করা প্রথম নয়। এর আগে ২০১৭ সালে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন মাসের পর মাস ধরে শূন্য পদের কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। শূন্য পদে নিয়োগ না করা নিয়ে কেন্দ্রের গড়িমসিকে তিরস্কার করেছিল আদালত। ২০২১ সালে দিল্লি হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে এনসিএম-এর শূন্য পদ পূরণ করতে নির্দেশও দিয়েছিল।

আরও পড়ুন: ‘তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিও না’ প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের বার্তা  ১৯৮৩ বিশ্বকাপের সদস্যদের

সংখ্যালঘু কমিশনের (১৯৭৮-২০১৫) প্রাক্তন চেয়ারপার্সন তাহির মাহমুদ এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি কখনই এই সংস্থাগুলির উপযোগিতা পুরোপুরি অনুমোদন করিনি।” তিনি আরও বলেন, কমিশন গঠনের আগে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের অবস্থা যেমন ছিল তেমনই রয়েছে। এনসিএম একটি ‘শোপিস’ (লোক দেখানো)। এটি মূলত বিশ্বস্ত রাজনীতিবিদদের জন্য স্টপগ্যাপ প্লেসমেন্ট এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমলাদের জন্য একটি অবসর পরবর্তী পুরষ্কার পদ।

আরও পড়ুন: সংঘাতের আবহে নয়া মোড়, আপ মনোনীত বিদ্যুৎ পর্ষদের ২ সদস্যকে সরালেন উপরাজ্যপাল

শেষ কমিশনের চেয়ারপার্সন ছিলেন ইকবাল সিং লালপুরা। তাঁর অবসর নেওয়ার পর ওই পদে আর কাউকে এখনও নিয়োগ করা হয়নি। লালপুরা বিজেপির টিকিটে পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এর আগে এই পদে ছিলেন বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি। পরে তিনি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রীও হয়েছিলেন। এনসিএমের এক প্রাক্তন সদস্য বলেন, বরাবরই কমিশনের পদগুলিতে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বসানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তারাই পদগুলি দখল করা রয়েছে।

আরও পড়ুন: অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ঋষিতা বসু’কে ঘিরে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস