১৯ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে টাটা গোষ্ঠীর এন চন্দ্রশেখরণের বৈঠক: বাংলায় নতুন শিল্প বিনিয়োগের ইঙ্গিত?

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার
  • / 233

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার এন চন্দ্রশেখরণ এলেন কলকাতায়, বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে -জল্পনা তুঙ্গে, পশ্চিমবঙ্গে কি টাটা গোষ্ঠী নতুন করে বড় শিল্প বিনিয়োগ করতে চলেছে? দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে এ দিনের সাক্ষাৎকে ঘিরে রাজনৈতিক এবং শিল্প মহলে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে।

বুধবার টাটা সন্সের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখরণ নবান্নে পৌঁছন। তাঁকে স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি উত্তরীয় পরিয়ে দেন তাঁকে নিজ হাতে। এই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাতের ছবি এবং তথ্য তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল X হ্যান্ডলে (আগের টুইটার) প্রকাশিত হয়েছে।

সঙ্গে লেখা হয়েছে: “শিল্পক্ষেত্রে বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আজ নবান্নে টাটা সন্‌স এবং টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশা করাই যায়, এই আলোচনা ভবিষ্যতের শিল্প বিনিয়োগে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে।”

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বড় নির্দেশ: চাকরিহারা গ্রুপ C ও D কর্মীদের আর মিলবে না ভাতা

টাটা কর্ণধারের সঙ্গে মমতার এই আলোচনায় রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-ও উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক যে নিছক সৌজন্য নয়, বরং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বিনিয়োগের রূপরেখা নির্ধারণে তাৎপর্যপূর্ণ, তা বোঝাই যাচ্ছে প্রশাসনিক মহলের আগ্রহ দেখে।

আরও পড়ুন: আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান : পঞ্চায়েত স্তরের কাজ দ্রুত শেষ করতে পরিকল্পনার নির্দেশ নবান্নের

চলতি বছরে আয়োজিত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (BGBS) চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে এন চন্দ্রশেখরণের। সে সময় টাটাদের প্রথম সারির কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না সম্মেলনে। তবে মমতা জানিয়েছিলেন, চন্দ্রশেখরণ তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন ভবিষ্যতে কলকাতা সফর করবেন—এবং এবার তা বাস্তব হল।

আরও পড়ুন: নেপালে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি, ‘কেউ যেন অশান্তিতে জড়িয়ে না পড়েন,’ বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে রিলায়্যান্স, জিন্দাল, আরপিএসজি-সহ প্রথম সারির শিল্পপতিরা উপস্থিত থাকলেও, টাটা গোষ্ঠীর অনুপস্থিতি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। সেই প্রেক্ষিতেই চন্দ্রশেখরণের এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন শিল্প বিশেষজ্ঞরা।

টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলার রাজনৈতিক সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে সিঙ্গুর আন্দোলনের সঙ্গে। সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের ন্যানো প্রকল্প স্থাপনে জমি অধিগ্রহণ ঘিরেই শুরু হয়েছিল আন্দোলন—যার নেতৃত্বে ছিলেন মমতা নিজেই। ওই আন্দোলনই তাঁকে ২০১১ সালে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে দেয়।

তবে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে বহুবার মমতা স্পষ্ট করেছেন, তিনি কখনওই টাটার বিরুদ্ধে ছিলেন না, বরং আপত্তি ছিল তৎকালীন বাম সরকারের ভূমি অধিগ্রহণ পদ্ধতি নিয়ে।

রাজ্য প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, আজকের বৈঠক থেকে একটা পরিষ্কার বার্তা যাচ্ছে—রাজ্য সরকার এখন শিল্পবান্ধব নীতি গ্রহণে আগ্রহী। অতীত টেনে এনে শিল্প সম্ভাবনার পথে বাধা নয়, বরং নতুন উদ্যোগে টাটাদের পুনরায় পশ্চিমবঙ্গে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সরকার।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে টাটা গোষ্ঠীর এন চন্দ্রশেখরণের বৈঠক: বাংলায় নতুন শিল্প বিনিয়োগের ইঙ্গিত?

আপডেট : ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার এন চন্দ্রশেখরণ এলেন কলকাতায়, বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে -জল্পনা তুঙ্গে, পশ্চিমবঙ্গে কি টাটা গোষ্ঠী নতুন করে বড় শিল্প বিনিয়োগ করতে চলেছে? দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে এ দিনের সাক্ষাৎকে ঘিরে রাজনৈতিক এবং শিল্প মহলে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে।

বুধবার টাটা সন্সের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখরণ নবান্নে পৌঁছন। তাঁকে স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি উত্তরীয় পরিয়ে দেন তাঁকে নিজ হাতে। এই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাতের ছবি এবং তথ্য তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল X হ্যান্ডলে (আগের টুইটার) প্রকাশিত হয়েছে।

সঙ্গে লেখা হয়েছে: “শিল্পক্ষেত্রে বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আজ নবান্নে টাটা সন্‌স এবং টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশা করাই যায়, এই আলোচনা ভবিষ্যতের শিল্প বিনিয়োগে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে।”

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বড় নির্দেশ: চাকরিহারা গ্রুপ C ও D কর্মীদের আর মিলবে না ভাতা

টাটা কর্ণধারের সঙ্গে মমতার এই আলোচনায় রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-ও উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠক যে নিছক সৌজন্য নয়, বরং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বিনিয়োগের রূপরেখা নির্ধারণে তাৎপর্যপূর্ণ, তা বোঝাই যাচ্ছে প্রশাসনিক মহলের আগ্রহ দেখে।

আরও পড়ুন: আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান : পঞ্চায়েত স্তরের কাজ দ্রুত শেষ করতে পরিকল্পনার নির্দেশ নবান্নের

চলতি বছরে আয়োজিত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (BGBS) চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে এন চন্দ্রশেখরণের। সে সময় টাটাদের প্রথম সারির কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না সম্মেলনে। তবে মমতা জানিয়েছিলেন, চন্দ্রশেখরণ তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন ভবিষ্যতে কলকাতা সফর করবেন—এবং এবার তা বাস্তব হল।

আরও পড়ুন: নেপালে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি, ‘কেউ যেন অশান্তিতে জড়িয়ে না পড়েন,’ বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে রিলায়্যান্স, জিন্দাল, আরপিএসজি-সহ প্রথম সারির শিল্পপতিরা উপস্থিত থাকলেও, টাটা গোষ্ঠীর অনুপস্থিতি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। সেই প্রেক্ষিতেই চন্দ্রশেখরণের এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন শিল্প বিশেষজ্ঞরা।

টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলার রাজনৈতিক সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে সিঙ্গুর আন্দোলনের সঙ্গে। সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের ন্যানো প্রকল্প স্থাপনে জমি অধিগ্রহণ ঘিরেই শুরু হয়েছিল আন্দোলন—যার নেতৃত্বে ছিলেন মমতা নিজেই। ওই আন্দোলনই তাঁকে ২০১১ সালে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে দেয়।

তবে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে বহুবার মমতা স্পষ্ট করেছেন, তিনি কখনওই টাটার বিরুদ্ধে ছিলেন না, বরং আপত্তি ছিল তৎকালীন বাম সরকারের ভূমি অধিগ্রহণ পদ্ধতি নিয়ে।

রাজ্য প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, আজকের বৈঠক থেকে একটা পরিষ্কার বার্তা যাচ্ছে—রাজ্য সরকার এখন শিল্পবান্ধব নীতি গ্রহণে আগ্রহী। অতীত টেনে এনে শিল্প সম্ভাবনার পথে বাধা নয়, বরং নতুন উদ্যোগে টাটাদের পুনরায় পশ্চিমবঙ্গে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সরকার।