নবান্নে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ

- আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 187
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: নবান্নে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। এদিনের বৈঠক মূলত ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ হলেও আসন্ন সংসদের বাদল অধিবেশন ঘিরে বিরোধী দলগুলির মধ্যে ‘কৌশলগত আলোচনা’ হতে পারে বলে মনে করছেন ওয়াকিফহাল মহল।
কাশ্মীরের পহেলগাঁও তে জঙ্গি হামলার পর পর্যটন শিল্পে চরম সংকট দেখা দেয় । এই পরিস্থিতিতে দেশের কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করুক । বৃহস্পতিবার নবান্নে এই যৌথ দাবি তুললেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে বিকেল ৪:৩০ মিনিট নাগাদ নবান্নে পৌঁছান কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। নবান্নে ঢোকার মুখে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ওমর আবদুল্লাহ’র ১২ মিনিটের বক্তব্য জুড়েই ছিল কাশ্মীর ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ।
কীভাবে বারংবার বিধ্বস্ত কাশ্মীরের পাশে দাঁড়িয়েছেন মমতা, সেই কথাটাই তুলে ধরেন ওমর আবদুল্লাহ। দুই মুখ্যমন্ত্রী এদিন প্রশ্ন তোলেন কাশ্মীরের পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের । কেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে না?
তাঁর কথায়, ‘আমার সঙ্গে এনার(মমতার) সম্পর্ক আজকের নয়। তিনি বারংবার কাশ্মীর ও সেখানকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ২০১৯ সালে আমরা যখন নানা সমস্যা জর্জরিত হয়ে পড়েছি, তখনও তিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। পহেলগাঁও-কাণ্ডের পর ভারতের প্রত্যাঘাত ও তার পাল্টা পাকিস্তান যখন রাজৌরি এলাকায় বোমা ছুড়ল, সেখানে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে, তাদের পাশে দাঁড়াতে দিদির প্রতিনিধিরাই ছুটে যায়।’
জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ জানান, ভয় নেই আর কাশ্মীরে। তাঁর কথার রেশ ধরেই মমতাও রাজ্যবাসীর উদ্দেশে আবেদন করেন কাশ্মীরে যাওয়ার জন্য। একই সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জানান, পুজোর পর তিনি কাশ্মীরে যেতে পারেন। দুই রাজ্যের মধ্যে পর্যটন বন্ধনকে আরও মজবুত করার বার্তাও দিলেন দুই মুখ্যমন্ত্রী।
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর প্রথম বার বাংলায় এলেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম শরিক ওমর আবদুল্লাহ। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর বাংলা থেকে একটি প্রতিনিধি দল জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ এবং রাজৌরিতে পাঠিয়েছিলেন মমতা।
সেই কথা মনে করিয়ে ওমর আবদুল্লাহ বলেন, ‘‘বাংলার প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছিল। তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনেছিল। প্রতিনিধি দল পাঠানোর জন্য দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ধন্যবাদ জানাই।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গ এবং জম্মু-কাশ্মীর বাণিজ্য, পর্যটন শিল্পে এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। সেই কারণে আমি দিদিকে কাশ্মীরে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’’
ওমরের আমন্ত্রণের কথা জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমি পুজোর পর কাশ্মীরে যাওয়ার চেষ্টা করব।’’ তার পরেই তিনি জানান, সব দিক থেকে কাশ্মীরকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত তাঁর সরকার। মমতার কথায়, ‘‘আমাদের পর্যটকদের উচিত কাশ্মীরে যাওয়া। কোনও ভয় নেই।’’
পাশাপাশি, পর্যটকদের নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আবেদন করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আরও বেশি পর্যটক যাতে জম্মু-কাশ্মীরে যেতে পারেন, তা নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকারকে পদক্ষেপ করতে হবে। সীমান্ত সুরক্ষা কেন্দ্রের হাতে। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত তাদের।
প্রয়োজনে ওমর আবদুল্লার সঙ্গে কথা বলে যথাযথ পদক্ষেপ করুক।’’ এদিন শিল্প-বাণিজ্য এমনকি পর্যটনের খাতিরে বাংলা-কাশ্মীরের মেলবন্ধনের বার্তাও দিয়েছেন ওমর আবদুল্লাহ।