১৫ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আযানের জবাব কীভাবে দেবেন

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার
  • / 689

পুবের কলম, দ্বীন-দুনিয়া ডেস্ক: ইসলামে আযানের জবাব দেওয়া সুন্নত। মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসা ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি শুধু যে নামাযের সময় জানায়. তা নয়; বরং আমাদের আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে আহ্বান করে। আজ আমরা আযানের জবাব দেওয়ার নিয়ম শিখব।

আযানের জবাব দেওয়ার নিয়ম

আযান শুনলে মুমিনের উচিত মুয়াজ্জিন যা যা বলেন, তা-ই আবার নিজের মুখে বলা। নবীজি সা. বলেছেন,  ‘তোমরা যখন আযান শুনবে, তখন মুয়াজ্জিন যা বলবে, তা বলো।’ (সহিহ্ মুসলিম, হাদিস: ৩৮৩)

আরও পড়ুন: I love Muhammad’ ব্যানারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা অসাংবিধানিক: জামায়াতে ইসলামি হিন্দ

তবে দুয়েকটি বাক্যে সামান্য ব্যতিক্রম আছে। আযানের প্রতিটি বাক্যের উচ্চারণ এবং তার জবাব নিচে দেওয়া হলো:

আরও পড়ুন: ইসলামে অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সুদ বিহীন সমাজ ব্যবস্থার প্রস্তাবনা

মুয়াজ্জিন: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।

আরও পড়ুন: ইসলামের দাওয়াত সবার জন্য

জবাব: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।

মুয়াজ্জিন: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

জবাব: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

মুয়াজ্জিন: আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্।

জবাব: আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্।

মুয়াজ্জিন: হাইয়্যা আলাস সালাহ এবং হাইয়্যা আলাল ফালাহ।

জবাব: এই দুটি বাক্যের জবাবে বলুন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ (কোনো উপায় বা ক্ষমতা নেই আল্লাহ্ ছাড়া)।

মুয়াজ্জিন: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।

জবাব: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’।

মুয়াজ্জিন: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

জবাব: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

ফজরের আযানে ‘আস,সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ (নামায ঘুমের চেয়ে উত্তম) বলা হলে, জবাবে বলতে হবে, ‘সাদাকতা ওয়া বারারতা’ (তুমি সত্য ও ন্যায় কথা বলেছ)।

আযান শুনলে করণীয় 

আযান শুনলে চুপ করে মনোযোগ দিয়ে শোনা উচিত। কথাবার্তা বা অন্য কাজ বন্ধ করে মুয়াজ্জিনের বাক্য পুনরুক্তি করা মুস্তাহাব। আযান যখন আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা করে, তখন জবাব দেওয়ার মাধ্যমে মুমিনও সেই ঘোষণায় শরিক হয়।

নবীজি সা.বলেছেন,  ‘যে ব্যক্তি আযান শুনে তা পুনরুক্তি করে, শয়তান তার থেকে দূরে পালায়।’ (সহিহ্ মুসলিম, হাদিস: ৩৮৯)

আযানের পর দোয়া 

আযান শেষ হলে একটি বিশেষ দোয়া পড়া সুন্নত। নবীজি সা. বলেছেন,  ‘যে ব্যক্তি আযানের পর এই দোয়া পড়বে, তার জন্য (কেয়ামতের দিন) আমার শাফায়াত ওয়াজিব হবে।’ (সহিহ্ বুখারী, হাদিস: ৬১৪)

দোয়াটি হল: উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বা হাযিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাতি ওয়াস সালাতিল কায়িমাতি, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাতা, ওয়াবআসহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাযি ওয়া‘আদতাহু, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মি’আদ।

অর্থ: হে আল্লাহ্! এই পরিপূর্ণ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠিত নামাযের প্রতিপালক তুমিই, হযরত মুহাম্মদ সা.,কে দান কর ওয়াসিলা (সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান) ও সুমহান মর্যাদা এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছে দাও, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ, নিশ্চয় তুমি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করো না।’

আজকাল অনেকে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আযান শোনেন। এমন ক্ষেত্রেও জবাব দেওয়া যায়, তবে মসজিদের আযান শুনে জবাব দেওয়ার মর্যাদা বেশি। আযান শুনলে যেখানেই থাকুন, কাজ থামিয়ে মুয়াজ্জিনের বাক্যটি নিজেই বলুন।

গাড়ি চালানোর সময় বা কাজের মধ্যে হলেও মনে মনে জবাব দেওয়া যায়। আযান শেষ হলে ওপরের দোয়াটি পড়ুন। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই এই সুন্নাহ্ প্রযোজ্য। তবে হায়েজ বা নিফাসের সময় নারীরা জবাব দেবেন না।

 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আযানের জবাব কীভাবে দেবেন

আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম, দ্বীন-দুনিয়া ডেস্ক: ইসলামে আযানের জবাব দেওয়া সুন্নত। মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসা ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি শুধু যে নামাযের সময় জানায়. তা নয়; বরং আমাদের আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে আহ্বান করে। আজ আমরা আযানের জবাব দেওয়ার নিয়ম শিখব।

আযানের জবাব দেওয়ার নিয়ম

আযান শুনলে মুমিনের উচিত মুয়াজ্জিন যা যা বলেন, তা-ই আবার নিজের মুখে বলা। নবীজি সা. বলেছেন,  ‘তোমরা যখন আযান শুনবে, তখন মুয়াজ্জিন যা বলবে, তা বলো।’ (সহিহ্ মুসলিম, হাদিস: ৩৮৩)

আরও পড়ুন: I love Muhammad’ ব্যানারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা অসাংবিধানিক: জামায়াতে ইসলামি হিন্দ

তবে দুয়েকটি বাক্যে সামান্য ব্যতিক্রম আছে। আযানের প্রতিটি বাক্যের উচ্চারণ এবং তার জবাব নিচে দেওয়া হলো:

আরও পড়ুন: ইসলামে অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সুদ বিহীন সমাজ ব্যবস্থার প্রস্তাবনা

মুয়াজ্জিন: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।

আরও পড়ুন: ইসলামের দাওয়াত সবার জন্য

জবাব: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।

মুয়াজ্জিন: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

জবাব: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

মুয়াজ্জিন: আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্।

জবাব: আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্।

মুয়াজ্জিন: হাইয়্যা আলাস সালাহ এবং হাইয়্যা আলাল ফালাহ।

জবাব: এই দুটি বাক্যের জবাবে বলুন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ (কোনো উপায় বা ক্ষমতা নেই আল্লাহ্ ছাড়া)।

মুয়াজ্জিন: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।

জবাব: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’।

মুয়াজ্জিন: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

জবাব: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

ফজরের আযানে ‘আস,সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ (নামায ঘুমের চেয়ে উত্তম) বলা হলে, জবাবে বলতে হবে, ‘সাদাকতা ওয়া বারারতা’ (তুমি সত্য ও ন্যায় কথা বলেছ)।

আযান শুনলে করণীয় 

আযান শুনলে চুপ করে মনোযোগ দিয়ে শোনা উচিত। কথাবার্তা বা অন্য কাজ বন্ধ করে মুয়াজ্জিনের বাক্য পুনরুক্তি করা মুস্তাহাব। আযান যখন আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা করে, তখন জবাব দেওয়ার মাধ্যমে মুমিনও সেই ঘোষণায় শরিক হয়।

নবীজি সা.বলেছেন,  ‘যে ব্যক্তি আযান শুনে তা পুনরুক্তি করে, শয়তান তার থেকে দূরে পালায়।’ (সহিহ্ মুসলিম, হাদিস: ৩৮৯)

আযানের পর দোয়া 

আযান শেষ হলে একটি বিশেষ দোয়া পড়া সুন্নত। নবীজি সা. বলেছেন,  ‘যে ব্যক্তি আযানের পর এই দোয়া পড়বে, তার জন্য (কেয়ামতের দিন) আমার শাফায়াত ওয়াজিব হবে।’ (সহিহ্ বুখারী, হাদিস: ৬১৪)

দোয়াটি হল: উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বা হাযিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাতি ওয়াস সালাতিল কায়িমাতি, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাতা, ওয়াবআসহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাযি ওয়া‘আদতাহু, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মি’আদ।

অর্থ: হে আল্লাহ্! এই পরিপূর্ণ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠিত নামাযের প্রতিপালক তুমিই, হযরত মুহাম্মদ সা.,কে দান কর ওয়াসিলা (সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান) ও সুমহান মর্যাদা এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছে দাও, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ, নিশ্চয় তুমি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করো না।’

আজকাল অনেকে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আযান শোনেন। এমন ক্ষেত্রেও জবাব দেওয়া যায়, তবে মসজিদের আযান শুনে জবাব দেওয়ার মর্যাদা বেশি। আযান শুনলে যেখানেই থাকুন, কাজ থামিয়ে মুয়াজ্জিনের বাক্যটি নিজেই বলুন।

গাড়ি চালানোর সময় বা কাজের মধ্যে হলেও মনে মনে জবাব দেওয়া যায়। আযান শেষ হলে ওপরের দোয়াটি পড়ুন। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই এই সুন্নাহ্ প্রযোজ্য। তবে হায়েজ বা নিফাসের সময় নারীরা জবাব দেবেন না।