০২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হুগলি ইমামবাড়ার কিছুটা অংশ ভেঙে পড়ল

রফিকুল হাসান
  • আপডেট : ৩ নভেম্বর ২০২১, বুধবার
  • / 26

নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: হাজী মহম্মদ মহসিনের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক হুগলি ইমামবাড়ার পশ্চিম দিকের কিছুটা অংশ হঠাৎই ভেঙে পড়ল। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার, পুর প্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় ও পূর্ত দফতরের এক প্রতিনিধি দল। বিধায়ক অসিত মজুমদার ওই বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে ফোনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন। খুব তাড়াতাড়ি ওই ভাঙা অংশের সংস্কারের কাজ শেষ করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

 ইমামবাড়াটি হেরিটেজ কমিশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ঐতিহাসিক ইমামবাড়া যদি ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে একটা ইতিহাস বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অতএব ওই ইমামবাড়া কোনভাবেই নষ্ট করা যাবে না। এমনটাই দাবি বিধায়কের। অসিত মজুমদারের মতে পিডব্লিউডি অথবা পুরসভাকে টাকা দিয়ে হেরিটেজ কমিশন কাজটা করানোর ব্যবস্থা করুক। ঘটনাটি তিনি রাজ্য সরকার, হেরিটেজ কমিশন ও পিডব্লিউডিকে চিঠি দিয়ে দ্রুত জানাবেন বলে জানান। 

আরও পড়ুন: শিয়ালদার কাছে ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ির একাংশ, আটক পাঁচ সদস্যের সঙ্গে পোষ্যদেরও উদ্ধার করল দমকল

জেলাশাসক বলেন, টাকার ব্যবস্থা কোথা থেকে হয় দেখে সংস্কারের কাজটা করে দেওয়া হবে।ইমামবাড়ার ম্যানেজার গৌতম দাস জানান, ইতিমধ্যেই ১০ কোটি টাকার ডিপিআর জমা দেওয়া হয়েছে স্থানীয় হেরিটেজ কমিশনের কাছে।

আরও পড়ুন: একটা গর্জন হল, ভেঙে পড়ল ঘরের ছাদ…

উল্লেখ্য, ১৮৪৬ সালে সৈয়দ কেরামত আলি চুঁচুড়ায় হুগলি ইমামবাড়া তৈরি করেন। ইমামবাড়া তৈরি করা হয়েছিল বিখ্যাত দানবীর হাজী মহম্মদ মহসিনের স্মৃতি রক্ষার্থে। জানা গেছে, ১৮৫২ সালে লন্ডন থেকে ১১,৭২১ টাকা দিয়ে বিখ্যাত ঘড়ি কিনে এনে ইমামবাড়ার দেওয়ালে লাগানো হয়। ঘড়ি সচল রাখতে প্রতি সপ্তাহে আধঘন্টা ধরে দম দিতে হয়। ঘড়ির চাবির ওজন ২০ কেজি। তাই দম দিতে দুজন লোক লাগে। ঘড়ির তিনটে কাঁটার ওজন ১৫০ কেজি। ওই ঘড়ি ১৬৯ বছর ধরে টিকটিক করে জনসাধারণের জন্য সময় দিয়ে চলেছে। এছাড়াও ইমামবাড়ায় রয়েছে সূর্য ঘড়িও। গঙ্গার দক্ষিণ পাড়ে এক মনোরম পরিবেশে ২২ বিঘা জমির উপর ইমামবাড়া অবস্থিত। 

আরও পড়ুন: যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন, আটক ১

ঐতিহ্যবাহী হুগলি ইমামবাড়া ইতিহাসের এক অনন্য নজির। কালের নিয়মে ইমামবাড়া এখন ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। ঐতিহাসিক  ইমামবাড়ার শরীর থেকে পলেস্তারা ধীরে ধীরে খসে পড়ছে। ২০০৮ সালে ইমামবাড়াকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইমামবাড়া রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বভার চলে যায় রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের হাতে। ইমামবাড়ার ভগ্নদশা সংস্কার করার দাবি উঠতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে। হেরিটেজ কমিশন এখনো পর্যন্ত প্রায় দু’কোটি টাকা খরচ করেছে ইমামবাড়া সংস্কারের পিছনে। কিন্তু ইমামবাড়ার অনেকাংশ এখনো সংস্কার না হওয়ায় ভেঙে পড়ছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হুগলি ইমামবাড়ার কিছুটা অংশ ভেঙে পড়ল

আপডেট : ৩ নভেম্বর ২০২১, বুধবার

নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: হাজী মহম্মদ মহসিনের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক হুগলি ইমামবাড়ার পশ্চিম দিকের কিছুটা অংশ হঠাৎই ভেঙে পড়ল। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার, পুর প্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় ও পূর্ত দফতরের এক প্রতিনিধি দল। বিধায়ক অসিত মজুমদার ওই বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে ফোনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন। খুব তাড়াতাড়ি ওই ভাঙা অংশের সংস্কারের কাজ শেষ করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

 ইমামবাড়াটি হেরিটেজ কমিশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ঐতিহাসিক ইমামবাড়া যদি ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে একটা ইতিহাস বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অতএব ওই ইমামবাড়া কোনভাবেই নষ্ট করা যাবে না। এমনটাই দাবি বিধায়কের। অসিত মজুমদারের মতে পিডব্লিউডি অথবা পুরসভাকে টাকা দিয়ে হেরিটেজ কমিশন কাজটা করানোর ব্যবস্থা করুক। ঘটনাটি তিনি রাজ্য সরকার, হেরিটেজ কমিশন ও পিডব্লিউডিকে চিঠি দিয়ে দ্রুত জানাবেন বলে জানান। 

আরও পড়ুন: শিয়ালদার কাছে ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ির একাংশ, আটক পাঁচ সদস্যের সঙ্গে পোষ্যদেরও উদ্ধার করল দমকল

জেলাশাসক বলেন, টাকার ব্যবস্থা কোথা থেকে হয় দেখে সংস্কারের কাজটা করে দেওয়া হবে।ইমামবাড়ার ম্যানেজার গৌতম দাস জানান, ইতিমধ্যেই ১০ কোটি টাকার ডিপিআর জমা দেওয়া হয়েছে স্থানীয় হেরিটেজ কমিশনের কাছে।

আরও পড়ুন: একটা গর্জন হল, ভেঙে পড়ল ঘরের ছাদ…

উল্লেখ্য, ১৮৪৬ সালে সৈয়দ কেরামত আলি চুঁচুড়ায় হুগলি ইমামবাড়া তৈরি করেন। ইমামবাড়া তৈরি করা হয়েছিল বিখ্যাত দানবীর হাজী মহম্মদ মহসিনের স্মৃতি রক্ষার্থে। জানা গেছে, ১৮৫২ সালে লন্ডন থেকে ১১,৭২১ টাকা দিয়ে বিখ্যাত ঘড়ি কিনে এনে ইমামবাড়ার দেওয়ালে লাগানো হয়। ঘড়ি সচল রাখতে প্রতি সপ্তাহে আধঘন্টা ধরে দম দিতে হয়। ঘড়ির চাবির ওজন ২০ কেজি। তাই দম দিতে দুজন লোক লাগে। ঘড়ির তিনটে কাঁটার ওজন ১৫০ কেজি। ওই ঘড়ি ১৬৯ বছর ধরে টিকটিক করে জনসাধারণের জন্য সময় দিয়ে চলেছে। এছাড়াও ইমামবাড়ায় রয়েছে সূর্য ঘড়িও। গঙ্গার দক্ষিণ পাড়ে এক মনোরম পরিবেশে ২২ বিঘা জমির উপর ইমামবাড়া অবস্থিত। 

আরও পড়ুন: যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন, আটক ১

ঐতিহ্যবাহী হুগলি ইমামবাড়া ইতিহাসের এক অনন্য নজির। কালের নিয়মে ইমামবাড়া এখন ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। ঐতিহাসিক  ইমামবাড়ার শরীর থেকে পলেস্তারা ধীরে ধীরে খসে পড়ছে। ২০০৮ সালে ইমামবাড়াকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইমামবাড়া রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বভার চলে যায় রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের হাতে। ইমামবাড়ার ভগ্নদশা সংস্কার করার দাবি উঠতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে। হেরিটেজ কমিশন এখনো পর্যন্ত প্রায় দু’কোটি টাকা খরচ করেছে ইমামবাড়া সংস্কারের পিছনে। কিন্তু ইমামবাড়ার অনেকাংশ এখনো সংস্কার না হওয়ায় ভেঙে পড়ছে।