ছয় মাসে ২২ লক্ষ মৃত্যু? নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান ঘিরে বিস্ফোরক আরজেডির

- আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার
- / 35
পাটনা: বিহারে ৬৫.২ লক্ষ ভোটারের নাম হঠাৎ করে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, এমনই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে নির্বাচন কমিশনের ‘বিশেষ নিবিড় পুনঃপরীক্ষণ’ (Special Intensive Revision বা SIR)। কিন্তু এই তথ্যকে কেন্দ্র করে এখন তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মুখ খুলেছে বিরোধী দল জাতীয় জনতা দল (আরজেডি)। দলটির মুখপাত্র চিত্তরঞ্জন গগন এই পরিসংখ্যানকে ‘অবিশ্বাস্য ও ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন,“ছয় মাসে ২২ লক্ষ মানুষ মারা গেছেন? এ সংখ্যা চমকে দেওয়ার মতো।”
গগনের দাবি অনুযায়ী, এই বিশাল সংখ্যক ভোটার বাদ পড়াদের মধ্যে ২২ লক্ষকে আবার মৃত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ সরকারি তথ্য বলছে অন্য কথা। ২০২২ সালে বিহারে সরকারি পরিসংখ্যানে মোট মৃত্যু হয়েছিল ৪.৪৮ লক্ষ। আর ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিন বছরে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১২.৪৩ লক্ষ। সেক্ষেত্রে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যেই ২২ লক্ষ মৃত্যুর পরিসংখ্যান ‘তথ্য বিকৃতি ছাড়া কিছু নয়’, বলে সাফ মন্তব্য গগনের। তিনি আরও বলেন, “২০২৩-২৪ সালে এক বছরে ভোটার তালিকা থেকে মাত্র ৪.০৯ লক্ষ নাম বাদ পড়েছিল। এবার হঠাৎ ৬৫.২ লক্ষ নাম বাদ? তাও ২২ লক্ষকে মৃত ধরে? এই তথ্য জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়।”
আরজেডির মুখপাত্রের অভিযোগ, যারা ফর্ম জমা দিতে পারেননি, তাদের বিনা প্রমাণে ‘মৃত’, ‘স্থানান্তরিত’, ‘ডুপ্লিকেট’, কিংবা ‘ট্রেসলেস’ (অজ্ঞাত) হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। গগনের কথায়, “এই শ্রেণিবিন্যাসের কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। এটি এক ধরনের পরিকল্পিত অপসারণ হতে পারে, যাতে নির্দিষ্ট ভোটার গোষ্ঠী প্রভাবিত হয়।”
চিত্তরঞ্জন গগন স্পষ্ট করে বলেন, “নির্বাচন কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা যদি এমন অবিশ্বাস্য ও অসংলগ্ন পরিসংখ্যান দেয়, তবে তা শুধুই প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি মানুষের আস্থাকেই নাড়িয়ে দেয়।” আরজেডি ইতিমধ্যে কমিশনের কাছে বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে এর পিছনে থাকতে পারে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পরিকল্পনা। ভোটার তালিকা থেকে এই বিপুল সংখ্যক নাম বাদ পড়া, বিশেষ করে মৃতদের সংখ্যা নিয়ে এমন বিস্ময়কর দাবি এটা নিছক গাফিলতি, না কি এর পিছনে রয়েছে বৃহত্তর পরিকল্পনা? এই প্রশ্ন এখন শুধু রাজনীতির অঙ্গনে নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও সাড়া ফেলেছে। আগামী দিনে নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে কী ব্যাখ্যা দেয়, সেদিকে চোখ রাখছে গোটা রাজ্য।