বিহারে রাতারাতি ১.২৬ কোটি ভোটার মুছে দিল নির্বাচন কমিশন: সাকেত

- আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার
- / 35
পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: বিহারে রাতারাতি ১.২৬ কোটি ভোটার মুছে দিল নির্বাচন কমিশন! অথচ ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ভোটার তালিকাতেও তাঁদের নাম ছিল। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁরা দেশের ‘সরকার’ গড়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। মাত্র ১ বছর কাটতে না কাটতেই তাঁরা ব্রাত্য। শুধু ব্রাত্যই নয়, ভোটার তালিকা থেকেই ভ্যানিস হয়ে গিয়েছে তাঁদের নাম। কি করে সম্ভব! শুধু তাই নয়, রাজ্যে বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন প্রক্রিয়া (SIR)-র সময় যে হারে ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, তা উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, উত্তর-পূর্বের (অসম বাদে) ৬টি রাজ্যের সমগ্র জনসংখ্যার সমান।
এবার বিহারে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখল। তাঁর অভিযোগ, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের ঠিক এক বছর পরেই রাতারাতি ভোটার তালিকা থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে ১.২৬ কোটি মানুষের নাম। ১ বছর আগেও তারা ভোটার ছিল। তাঁর দাবি, ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে মূলত ভোটার NRC চালু করেছে সরকার।
সোমবার রাতে বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। সেই রিপোর্ট সোশ্যাল সাইটে শেয়ার করে গোখেল জানান, বিহারে প্রথম দফার সমীক্ষার জন্য ৭.৯০ কোটি ভোটারের মধ্যে মোট ৭ কোটি ২৪ লক্ষ ফর্ম বিলি করা হয়েছিল। সংখ্যাটা মোট ভোটারের ৯১.৬৯ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের কাছে ফর্মই পৌঁছায়নি। ফলস্বরুপ তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
VERY IMPORTANT AND SHOCKING
ECI has deleted 1.26 CRORE voters in Bihar from the 2024 Lok Sabha voter list OVERNIGHT
Last night, the ECI published details of ongoing “special intensive revision” of the electoral roll being conducted in Bihar. The deadline for collection of forms… pic.twitter.com/E7x2egYfCw
— Saket Gokhale MP (@SaketGokhale) July 28, 2025
অন্যদিকে আরও ২২ লক্ষ ভোটারকে মৃত বলে ঘোষণা করে তাঁদের নাম বাতিল করা হয়েছে। প্রায় ৩৬ লক্ষ ভোটারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলেও দাবি নির্বাচন কমিশনের। পাশাপাশি ৭ লক্ষ ভোটারকে ডুপ্লিকেট হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁদের মধ্যে অর্ধেক অর্থাৎ ৩.৫ লক্ষ নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। নির্বাচন কমিশন দাবি করেছিল যে এই তালিকা সংশোধনের একটি মুখ্য উদ্দেশ্য হল তবিদেশি নাগরিকদেরদ চিহ্নিত করে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, কিন্তু কমিশন আজ পর্যন্ত জানায়নি ঠিক কতজনকে তঅনাগরিকদ হিসেবে চিহ্নিত করে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি বিদেশিদের হঠানোই উদ্দেশ্য হয়, তবে কতজন বিদেশিকে পাওয়া গেল? কেন সেই সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে না?
সাকেত গোখলে এই ঘটনার তাৎপর্য বোঝাতে বলেন, বিহারে এই মুহূর্তে যে ১.২৬ কোটি ভোটারের নাম বাদ পড়েছে, তা উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশের মোট জনসংখ্যার সমান, বা আসাম বাদ দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের ছয়টি রাজ্যের সম্মিলিত জনসংখ্যার সমান। তাঁর আরও বক্তব্য, মাত্র এক বছর আগে যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের এত দ্রুত কী ভাবে তঅযোগ্যদ ঘোষণা করা হল?
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, যেহেতু ৭.২৪ কোটি ভোটারের কাছ থেকে ফর্ম নেওয়া হয়েছে, কিন্তু সবার কাছ থেকে নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়নি, সেই কারণে ভবিষ্যতে আরও ভোটারকে বাতিল করা হতে পারে। তাঁর ভাষায়, এই (SIR) আসলে পেছনের দরজা দিয়ে NRC, যা সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার এক চক্রান্ত। তিনি এই ঘটনাকে গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক সংকেত হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং জানিয়েছেন যে, এই ধরণের ভোটার বাদ দেওয়া ভবিষ্যতে আরও রাজ্যে ঘটতে পারে, যদি এখনই বিরোধিতা না করা হয়।