বাংলা ভাষাকে চূড়ান্ত অপমান কেন্দ্রের, মোদি-শাহকে তুলোধোনা সাংসদ মহুয়ার

- আপডেট : ৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার
- / 19
পুবের কলম প্রতিবেদক : বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করায় রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে প্রবল ক্ষোভ ও বিতর্ক। দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করায় প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি হেনস্থা নিয়ে যখন তৃণমূল গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করেছে তখনই দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে বাংলা ভাষার পরিচিতিকে খর্ব করে ভারতীয় নাগরিকদের ‘বহিরাগত’ হিসাবে চিহ্নিত করার ভয়ঙ্কর অভিযোগে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তুমুল নিশানা করলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ অমিত শাহের দিল্লি পুলিশ সমস্ত সীমা ছাড়িয়েছে।
বাংলার বঙ্গ ভবনকে লেখা একটি সরকারি পত্রে তারা বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করেছে। আমাদের মাতৃভাষা, ভারতের ২২টি অনুমোদিত সরকারি ভাষার একটি, ১১টি ধ্রুপদী ভাষার একটি, ভারতের জাতীয় সংগীতের ভাষাকে আজকে বিদেশি তকমা দিয়ে অবৈধ প্রমাণ করার বিজেপি আপ্রাণ চেষ্টা করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং দিল্লি পুলিশের এখুনি ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং এই চিঠি যে বা যারা লিখেছে তাদের শাস্তি দিতে হবে।’
দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করায় ‘বাঙালি আবেগে’ ঝড় উঠল বাংলায়। রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস কড়া ভাষায় কেন্দ্র ও দিল্লি পুলিশকে এ নিয়ে আক্রমণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতার অভিযোগ, ‘কেন্দ্র সরকার বাঙালি ভাষাভাষী মানুষদের অপমান ও হেয় করার জন্য সংবিধান-বিরোধী ভাষা ব্যবহার করছে।’
দিল্লির লোধি কলোনি থানার একটি চিঠি সামনে এনে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, তাতে বাঙলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ ভাষা বলা হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, ‘কেন্দ্র সরকার ও বিজেপি সরকার এই ভাষাবিদ্বেষী মনোভাব দিয়ে বাঙালিদের অসম্মান করছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং দেশজুড়ে প্রতিবাদ চাই। এই সরকার বাংলা ভাষার মর্যাদা নষ্ট করতে চায়, যা আমরা মেনে নেব না।’
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘এটা নিছক একটি ভুল নয়, এটা বিজেপির সুপরিকল্পিত চক্রান্ত। বাংলা ও বাঙালিকে অবমূল্যায়ন করতে চাইছে কেন্দ্র।’
এই ঘটনা ঘিরে টলিউডেও প্রতিক্রিয়া ছড়িয়েছে। পরিচালক সৃজিত মুখার্জি লেখেন, ‘ওটা বাংলাদেশি ভাষা নয়, মুর্খেরা, ওটা বাংলা। জাতীয় সঙ্গীতের ভাষা।’ গায়ক রূপম ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, ‘বাংলা কি ভারতের ২২টি সরকার স্বীকৃত ভাষার মধ্যে নেই? তাহলে একে বাংলাদেশি ভাষা বলা হল কেন? এটা চরম মূর্খতা।’
তৃণমূল নেতৃত্ব কেন্দ্র ও দিল্লি পুলিশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছে। এখন দেখার, কেন্দ্রীয় সরকার এবং দিল্লি পুলিশ এই ইস্যুতে কী অবস্থান নেয়।