০৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার নয়া কৌশল এসআইআর : অভিষেক

মারুফা খাতুন
  • আপডেট : ৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার
  • / 23

আবদুল ওদুদ : রাজ্যের ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার নয়া কৌশল হচ্ছে এসআইআর। আর বাংলায় কখনোই এসআইআর কার্যকর হবে না।এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা লোকসভার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দিল্লি থেকে ফেরার পর কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

অভিষেক বলেন, দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। ইন্ডিয়া জোটের সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী।তিনি এক সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। তাঁর আমন্ত্রণে আমিও সেই বৈঠকে ছিলাম। প্রত্যেক রাজনৈতিক দল এসআইআরের বিরুদ্ধে মতামত ব্যক্ত করেছে ।

আরও পড়ুন: নির্লজ্জভাবে ভোটারদের অধিকার কাড়তে উদ্যত কমিশন : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

নির্বাচন কমিশন কিভাবে বিজেপির কথায় কাজ করেছে সে বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমি নিজে বলেছি বিজেপি যেভাবে বাংলায় এস আইআর করতে চাই তার প্রতিবাদ আমরা জানাতে চাই । বিজেপি সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দিন আনা, দিন খাওয়া তাদের ভাতে মারার চেষ্টা করছে এবং তাদেরই নাম বাদ যাবে এই ভোটার তালিকা থেকে। বিহারে ৬৫ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গেছে। এরা সকলেই সাধারণ মানুষ। বিজেপি বেছে বেছে এই সমস্ত সাধারণ মানুষ গুলোর নাম বাদ দিতে চাই এবং এদের বেনাগরিক করে দেশ থেকে তাড়াতে চাই।

আরও পড়ুন: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সেবাশ্রয়’ মডেল এবার বসিরহাটে

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যারা হ্যাঁ স্যার বলে নির্বাচন কমিশনকে বিক্রি করে দিয়েছে তাদের আমি সতর্ক করছি, যদি ভোটার তালিকা থেকে কোন বাঙালি নাম বাদ যায় তাহলে এক লক্ষ বাঙ্গালীকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন অফিস ঘেরাও করব। তিনি অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলে দিল্লি অভিযান করা হয়েছিল ।

আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তৃণমূলের আসল রাজনীতি: অভিষেক

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে ১ আগস্ট থেকে টাকা দেওয়ার, কিন্তু সেই বরাদ্দ এখনো মেলেনি। সেই প্রসঙ্গ টেনে অভিষেক বলেন, আমরা ১০০ দিনের বরাদ্দ বন্ধ রাখা নিয়ে আন্দোলন করেছি। হাইকোর্টের নির্দেশ দিলেও কেন্দ্র তা দেয়নি। এটাও একটা আদালত অবমাননা।

এদিন ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন প্রশ্ন তুলে বলেন, যে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে ২৪ মাস সময় লাগে, তা এক মাসে হবে কি করে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে খোঁচা দিয়ে তাঁর বক্তব্য, যদি ভোটার তালিকা অবৈধ ভোটার থেকে থাকেন তাহলে এই অবৈধ ভোটারদের দ্বারাই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন,সে হিসাবে প্রধানমন্ত্রী অবৈধ।

এদিন বিমানবন্দরে তিনি আরো বলেন, ২০২৪ সালে কেন্দ্রে  ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রত্যেক নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় হেরেছে ,এত শ্রম দিয়ে, ডেইলি প্যাসেঞ্জার করে তো লাভ নেই, মানুষ ভোট দিলে তো বিজেপি বিপক্ষে দেবে। এটা বিজেপি দেখেছে। তাই ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার একটা নতুন কৌশল এসআইআর। তিনি বাংলার মানুষদের অভয় দিয়ে বলেন, বাংলায় এসআইআর হবে না। এই চুপি চুপি ভোটের কারচুপি আমরা বাংলায় করতে দেবো না। আর এস আই আর- এর নামে একটা মানুষের ভোটাধিকার যদি বাদ যায় নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করব এক লক্ষ বাঙ্গালীকে নিয়ে এদের ক্ষমতা থাকলে আটকে দেখাক।বিজেপির কথা ও ইশারায় কমিশন কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন আমি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আবেদন জানিয়েছি। তাঁকে আমরা বলেছি, আমরা চাই সংসদ চলুক, কিন্তু কেন্দ্রের নিশ্চয়ই কিছু লুকানোর আছে। তাই তারা আলোচনা চাইছে না। এরপর তিনি বলেন, এসআইআর প্রক্রিয়া করতে দু বছর সময় লাগে সেটা এক মাসে করবেন কিভাবে? আর আপনার যদি বলেন, ভোটার তালিকায় গরমিল রয়েছে, তাহলে এই ভোটার তালিকায় তো ২০২৪ সালে কেন্দ্রে সরকার নির্বাচিত হয়েছে।তাহলে তো সেই সরকার অবৈধ। প্রধানমন্ত্রী অবৈধ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবৈধ, দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অবৈধ।এই সাংসদদের ভোটেই দেশের রাষ্ট্রপতি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন তারাও অবৈধ।

তিনি আরোও বলেন, বাঙ্গালীদের প্রতি অপমান, বাঙ্গালীদের ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা আমরা কোনোভাবেই সহ্য করব না। আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়েছি। এর জন্য মুখ্য নির্বাচন কমিশনার কে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চিঠি করা হয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় থাকবো। তিনি বলেন আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট করেছি।তৃণমূলের জন্য যদি কেউ এক পা হাঁটে, তৃণমূল তার জন্য এক পা হাঁটবে।  কিন্তু আমাদের গুরুত্ব হচ্ছে বাংলা, বাংলা ভাষাকে যেভাবে বাংলাদেশী বলা হচ্ছে, আমাদের সমর্থনে যারা, তাদের জন্য হাঁটবো। আমার কোন ইগো নেই, আমরা সবাই মিলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ব।

এদিন তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, জলজীবন প্রকল্পের টাকা বাকি গ্রামের রাস্তা সম্প্রসারণের টাকা বাকি। খুব শীঘ্রই শিবরাজ সিংয়ের সঙ্গে কথা বলব, বাংলার টাকা বন্ধ কেন ? তাঁর সঙ্গে দেখা করব। আমরা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লড়ছি, আগামীতেও লড়বো।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার নয়া কৌশল এসআইআর : অভিষেক

আপডেট : ৮ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার

আবদুল ওদুদ : রাজ্যের ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার নয়া কৌশল হচ্ছে এসআইআর। আর বাংলায় কখনোই এসআইআর কার্যকর হবে না।এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা লোকসভার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দিল্লি থেকে ফেরার পর কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

অভিষেক বলেন, দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। ইন্ডিয়া জোটের সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী।তিনি এক সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। তাঁর আমন্ত্রণে আমিও সেই বৈঠকে ছিলাম। প্রত্যেক রাজনৈতিক দল এসআইআরের বিরুদ্ধে মতামত ব্যক্ত করেছে ।

আরও পড়ুন: নির্লজ্জভাবে ভোটারদের অধিকার কাড়তে উদ্যত কমিশন : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

নির্বাচন কমিশন কিভাবে বিজেপির কথায় কাজ করেছে সে বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমি নিজে বলেছি বিজেপি যেভাবে বাংলায় এস আইআর করতে চাই তার প্রতিবাদ আমরা জানাতে চাই । বিজেপি সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দিন আনা, দিন খাওয়া তাদের ভাতে মারার চেষ্টা করছে এবং তাদেরই নাম বাদ যাবে এই ভোটার তালিকা থেকে। বিহারে ৬৫ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গেছে। এরা সকলেই সাধারণ মানুষ। বিজেপি বেছে বেছে এই সমস্ত সাধারণ মানুষ গুলোর নাম বাদ দিতে চাই এবং এদের বেনাগরিক করে দেশ থেকে তাড়াতে চাই।

আরও পড়ুন: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সেবাশ্রয়’ মডেল এবার বসিরহাটে

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যারা হ্যাঁ স্যার বলে নির্বাচন কমিশনকে বিক্রি করে দিয়েছে তাদের আমি সতর্ক করছি, যদি ভোটার তালিকা থেকে কোন বাঙালি নাম বাদ যায় তাহলে এক লক্ষ বাঙ্গালীকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন অফিস ঘেরাও করব। তিনি অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলে দিল্লি অভিযান করা হয়েছিল ।

আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তৃণমূলের আসল রাজনীতি: অভিষেক

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে ১ আগস্ট থেকে টাকা দেওয়ার, কিন্তু সেই বরাদ্দ এখনো মেলেনি। সেই প্রসঙ্গ টেনে অভিষেক বলেন, আমরা ১০০ দিনের বরাদ্দ বন্ধ রাখা নিয়ে আন্দোলন করেছি। হাইকোর্টের নির্দেশ দিলেও কেন্দ্র তা দেয়নি। এটাও একটা আদালত অবমাননা।

এদিন ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন প্রশ্ন তুলে বলেন, যে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে ২৪ মাস সময় লাগে, তা এক মাসে হবে কি করে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে খোঁচা দিয়ে তাঁর বক্তব্য, যদি ভোটার তালিকা অবৈধ ভোটার থেকে থাকেন তাহলে এই অবৈধ ভোটারদের দ্বারাই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন,সে হিসাবে প্রধানমন্ত্রী অবৈধ।

এদিন বিমানবন্দরে তিনি আরো বলেন, ২০২৪ সালে কেন্দ্রে  ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রত্যেক নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় হেরেছে ,এত শ্রম দিয়ে, ডেইলি প্যাসেঞ্জার করে তো লাভ নেই, মানুষ ভোট দিলে তো বিজেপি বিপক্ষে দেবে। এটা বিজেপি দেখেছে। তাই ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার একটা নতুন কৌশল এসআইআর। তিনি বাংলার মানুষদের অভয় দিয়ে বলেন, বাংলায় এসআইআর হবে না। এই চুপি চুপি ভোটের কারচুপি আমরা বাংলায় করতে দেবো না। আর এস আই আর- এর নামে একটা মানুষের ভোটাধিকার যদি বাদ যায় নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করব এক লক্ষ বাঙ্গালীকে নিয়ে এদের ক্ষমতা থাকলে আটকে দেখাক।বিজেপির কথা ও ইশারায় কমিশন কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন আমি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আবেদন জানিয়েছি। তাঁকে আমরা বলেছি, আমরা চাই সংসদ চলুক, কিন্তু কেন্দ্রের নিশ্চয়ই কিছু লুকানোর আছে। তাই তারা আলোচনা চাইছে না। এরপর তিনি বলেন, এসআইআর প্রক্রিয়া করতে দু বছর সময় লাগে সেটা এক মাসে করবেন কিভাবে? আর আপনার যদি বলেন, ভোটার তালিকায় গরমিল রয়েছে, তাহলে এই ভোটার তালিকায় তো ২০২৪ সালে কেন্দ্রে সরকার নির্বাচিত হয়েছে।তাহলে তো সেই সরকার অবৈধ। প্রধানমন্ত্রী অবৈধ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবৈধ, দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অবৈধ।এই সাংসদদের ভোটেই দেশের রাষ্ট্রপতি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন তারাও অবৈধ।

তিনি আরোও বলেন, বাঙ্গালীদের প্রতি অপমান, বাঙ্গালীদের ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা আমরা কোনোভাবেই সহ্য করব না। আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়েছি। এর জন্য মুখ্য নির্বাচন কমিশনার কে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চিঠি করা হয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় থাকবো। তিনি বলেন আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট করেছি।তৃণমূলের জন্য যদি কেউ এক পা হাঁটে, তৃণমূল তার জন্য এক পা হাঁটবে।  কিন্তু আমাদের গুরুত্ব হচ্ছে বাংলা, বাংলা ভাষাকে যেভাবে বাংলাদেশী বলা হচ্ছে, আমাদের সমর্থনে যারা, তাদের জন্য হাঁটবো। আমার কোন ইগো নেই, আমরা সবাই মিলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ব।

এদিন তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, জলজীবন প্রকল্পের টাকা বাকি গ্রামের রাস্তা সম্প্রসারণের টাকা বাকি। খুব শীঘ্রই শিবরাজ সিংয়ের সঙ্গে কথা বলব, বাংলার টাকা বন্ধ কেন ? তাঁর সঙ্গে দেখা করব। আমরা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লড়ছি, আগামীতেও লড়বো।