উত্তেজনা প্রশমনে মোতায়েন পুলিশ বাহিনী
উত্তরপ্রদেশের মকবরায় হিন্দুত্ববাদীদের হামলা, ভাঙচুর

- আপডেট : ১১ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার
- / 27
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: যোগী রাজ্যে ফের ইসলামিক স্থাপনায় হামলা। উত্তরপ্রদেশের ফতেপুর জেলার আবু নগরের নবাব আবদুল সামাদের মকবরা (সমাধি)। অনেক আগেই এই মকবরাকে জাতীয় সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তবু সেই মকবরা হিন্দুত্ববাদীদের হামলার শিকার হল।
মকবরা চত্বরে সোমবার হঠাৎই জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে দিতে মাথায় গেরুয়া ফেট্টি বেঁধে, গেরুয়া পতাকা নিয়ে হাজির হন বজরং দল ও বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, এই মকবরা শিব মন্দির ছিল। আমরা এখানে পূজার্চনা করব। এরপর লাঠিসোটা নিয়ে হাজির কয়েকশো হিন্দুত্ববাদীরা মকবরায় ভাঙচুর শুরু করে। এলাকায় চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। অশান্তি রুখতে মকবরার চারপাশে ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরে এলাকায় বিশাল পুলিশ ও পিএসি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, মকবরার চারপাশে গেরুয়া পতাকা হাতে বেশকিছু লোক ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিচ্ছেন। প্রথম সারিতে রয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি মুখলাল পাল। তাঁকে বলতে শোনা যায়, সদর তহসিল এলাকার নবাব আবদুস সামাদের মকবরা কোনও মকবরা নয় বরং একটি মন্দির। এটা ঠাকুর জি ও ভগবান শিবের হাজার বছরের পুরনো মন্দির। এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের মন্দির মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আমরা সনাতন হিন্দুরা সহ্য করব না। আগামীকাল ১১ আগস্ট ওই মন্দিরে আমরা প্রার্থনা করব।’ এরপরই একটি হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা মকবরা প্রাঙ্গণে ঢুকে ভাঙচুর চালায়।
ভাঙচুর চালানোর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার মুসলিমরা মকবরা চত্বরে জড়ো হন। দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়। অভিযোগ, এক পক্ষ আরেক পক্ষের দিকে ইট-পাথর ছোঁড়ে। স্থানীয় মুসলিমরা অভিযোগ করেন বেশকয়েকটি হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা হঠাৎ মকবরাকে মন্দির দাবি করে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। জোর করে পুজো করার চেষ্টাও করে তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখে জেলা প্রশাসন সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফতেহপুর এসপি অনুপ কুমার সিং বলেন, ‘কিছু লোক পাথর ও লাঠিসোটা নিয়ে জড়ো হয়েছিল মকবরা চত্বরে। বিক্ষোভকারীরা জাতীয় সম্পত্তি হিসেবে স্বীকৃত স্মৃতিস্তম্ভে হিন্দু পতাকা লাগিয়েছে। তবে সেই পতাকা খুলে ফেলা হয়েছে। যারা যারা আইন হাতে তুলে নিয়েছে তাদের সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১০টি থানার পুলিশ, পিএসি এবং স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরাও এলাকায় রয়েছেন।’
ফতেহপুর জেলা বজরং দলের সহ-আহ্বায়ক ধর্মেন্দ্র সিং বলেন, ‘আমরা পূজা করব। প্রশাসন আমাদের থামাতে পারবে না।’