৭৫ শতাংশ তপশিলি জাতি এখনও অস্পৃশ্যতার শিকার

- আপডেট : ১২ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 36
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : দেশের স্বাধীনতার পর প্রায় ৮ দশক হতে চলল। কিন্তু এখনও অস্পৃশ্যতা, জাতপাতের শিকার বহু মানুষ। তাদের সঙ্গে বসে খাওয়া হয় না, যেতে দেওয়া হয় না মন্দিরে। তাদের হাতে ছোঁয়া যেন ‘অপবিত্র’। কর্নাাটকে সংরক্ষণ কোটা নিয়ে গঠিত বিচারপতি এইচ. এন. নাগামোহন দাস কমিশনের একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
যেখানে অত্যন্ত উদ্বেগজনক এমন কিছু তথ্য সামনে এসেছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে যে, কর্ণাটকের ৭৫ শতাংশ তপশিলি জাতি এখনও সমাজে অস্পৃশ্যতার শিকার। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বৈষম্যের শিকার হওয়াদের মধ্যে ‘মাদিগা’ সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও সুবিধাবঞ্চিত।
কমিশন ১০১টি তপশিলি জাতিভুক্ত সম্প্রদায়কে চারটি গ্রুপে ভাগ করেছে। তারা কতটা বৈষম্যের শিকার, তার ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে এই গ্রুপ। এর মধ্যে ‘মাদিগা’, ‘হোলেয়া’, ‘লাম্বানি (বাঞ্জারা)’ এবং ‘ভোবি’ সম্প্রদায়ের লোকেরা সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সম্প্রদায়গুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অস্পৃশ্যতা প্রচলিত আছে। যেমন: মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেওয়া। সামাজিক অনুষ্ঠানে একসঙ্গে বসে খাবার খেতে না দেওয়া। দাসপ্রথা বা বন্ডেড লেবার। এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের দূরে দূরে রাখা হয়।
গত ৫ বছরে তপশিলি জাতিদের ওপর অত্যাচারের মোট ৮,৮৮৪টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ দায়ের করেছে ‘আদি কর্ণাটক’ সম্প্রদায়। প্রতিবেদনটি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছে। যেখানে কিছু সম্প্রদায় যেমন ‘মাদিগা’ এবং ‘হোলেয়া’ ১০০টিরও বেশি অভিযোগ দায়ের করেছে, সেখানে ৪৫টি তপশিলি জাতিগোষ্ঠী কোনও অভিযোগই জানায়নি। এর কারণ হিসেবে কমিশন উল্লেখ করেছে যে, এর অর্থ এই নয় যে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে না। বরং, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে প্রতিবাদ করার মতো সাহস বা আইনি সচেতনতা নেই।
এই রিপোর্টে স্পষ্ট যে, স্বাধীনতার এত বছর পরেও কর্ণাটকে তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষেরা গুরুতর সামাজিক বৈষম্যের শিকার। যারা সামাজিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে কিছুটা শক্তিশালী, কেবল তারাই এই ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে সক্ষম। এটি শুধু একটি রাজ্যের চিত্র নয়, বরং ভারতের বিভিন্ন অংশে অস্পৃশ্যতা ও বৈষম্যের গভীর শিকড়কে তুলে ধরেছে।