১২ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুখ্য সচিবকে ডেকে পাঠালো জাতীয় নির্বাচন কমিশন

মারুফা খাতুন
  • আপডেট : ১২ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 31

পুবের কলম প্রতিবেদক: নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত অফিসারদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যকে বারবার চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলে ছিল। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন তাদের কাজ থেকে অব্যাহতি দিলেও নাকি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার রাজ্যের মুখ্য সচিব কে ডেকে পাঠালো জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

সময় বেঁধে দেওয়ার পরও নির্বাচন সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত চার অফিসারকে সাসপেন্ড করেনি নবান্ন। শুধুমাত্র নির্বাচন সংক্রান্ত প্রক্রিয়া থেকে এক অফিসার ও এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে সরানো হয়েছে। নির্দেশ না মানায় এবার রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ডেকে পাঠাল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বুধবার বিকেল ৫টায় দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে।

আরও পড়ুন: ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরিতে মন্ত্রিসভার সিলমোহর

নির্বাচন কমিশন একাধিক ক্ষেত্রে দেখেছে বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই, এমন ভোটারের নাম তুলে দেওয়া হয়েছে ভোটার লিস্টে। ভয়ঙ্কর এই অভিযোগের পিছনে কাদের হাত রয়েছে, তা খুঁজতে গিয়ে কমিশনের হাতে এসেছিল পাঁচজনের নাম। বারুইপুর পূর্বের ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার এআরও দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী, ওই কেন্দ্রের এইআরও তথাগত মণ্ডল, আর ময়নার ইআরও বিপ্লব সরকার এবং ওই কেন্দ্রের এইআরও সুদীপ্ত দাসের বিরুদ্ধে ওঠে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শালবনিতে তৈরি হল ৮০০ মেগাওয়াটের দুটি প্ল্যান্ট

এছাড়া, সুরজিৎ হালদার নামে এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের নামও সামনে আসে। চার অফিসারকে দ্রুত সাসপেন্ডের নির্দেশ দেয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আবার এই চারজনের পাশাপাশি ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধেও এফআইআরের সুপারিশ করা হয়। এই নিয়ে রাজ্যের মুখ্য়সচিবকে চিঠি পাঠায় কমিশন

আরও পড়ুন: এনআরসি নিয়ে বাঙালিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় : হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

সেই চিঠির জবাব না পাওয়ার পর ফের মুখ্যসচিবকে কমিশনের তরফে চিঠি পাঠানো হয়। এবার ওই চার অফিসার ও ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পদক্ষেপের জন্য সোমবার বিকেল ৩টে পর্যন্ত সময় দেয় কমিশন।

সোমবার রাজ্যের তরফে কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, এইআরও সুদীপ্ত দাস ও ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সুরজিৎ হালদারকে নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। বাকি ৩ জনের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি রাজ্য। তবে রাজ্য সরকার এই পদক্ষেপকে প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে। রাজ্যের ব্যাখ্যা হল, জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়।

তার পাশাপাশি থাকে ইলেকটোরাল রোল সংক্রান্ত কাজ। এত কাজ করার পরও কোনও তদন্ত ছাড়া অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে অন্যদের উপর প্রভাব পড়তে পারে। কমিশনের নির্দেশ নবান্ন না মানায় এবার মুখ্যসচিবকে ডেকে পাঠানো হল। মুখ্যসচিবকে কমিশনকে কী জবাব দেন, সেটাই এখন দেখার।

প্রসঙ্গত, কমিশন চার অফিসারকে সাসপেন্ড করা নিয়ে প্রথমবার চিঠি পাঠানোর পর সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রামে এক সভা থেকে তিনি বলেছিলেন, “কোন আইনের বলে তুমি নোটিস পাঠাচ্ছ? সাসপেন্ড করছ। আর বলে দিচ্ছ, এফআইআর করতে হবে। হবে না। আমি কারও পানিশমেন্ট হতে দেব না। এটা মাথায় রাখবেন।”

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মুখ্য সচিবকে ডেকে পাঠালো জাতীয় নির্বাচন কমিশন

আপডেট : ১২ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত অফিসারদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যকে বারবার চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলে ছিল। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন তাদের কাজ থেকে অব্যাহতি দিলেও নাকি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার রাজ্যের মুখ্য সচিব কে ডেকে পাঠালো জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

সময় বেঁধে দেওয়ার পরও নির্বাচন সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত চার অফিসারকে সাসপেন্ড করেনি নবান্ন। শুধুমাত্র নির্বাচন সংক্রান্ত প্রক্রিয়া থেকে এক অফিসার ও এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে সরানো হয়েছে। নির্দেশ না মানায় এবার রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ডেকে পাঠাল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বুধবার বিকেল ৫টায় দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে।

আরও পড়ুন: ‘দুর্গা অঙ্গন’ তৈরিতে মন্ত্রিসভার সিলমোহর

নির্বাচন কমিশন একাধিক ক্ষেত্রে দেখেছে বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই, এমন ভোটারের নাম তুলে দেওয়া হয়েছে ভোটার লিস্টে। ভয়ঙ্কর এই অভিযোগের পিছনে কাদের হাত রয়েছে, তা খুঁজতে গিয়ে কমিশনের হাতে এসেছিল পাঁচজনের নাম। বারুইপুর পূর্বের ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার এআরও দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী, ওই কেন্দ্রের এইআরও তথাগত মণ্ডল, আর ময়নার ইআরও বিপ্লব সরকার এবং ওই কেন্দ্রের এইআরও সুদীপ্ত দাসের বিরুদ্ধে ওঠে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শালবনিতে তৈরি হল ৮০০ মেগাওয়াটের দুটি প্ল্যান্ট

এছাড়া, সুরজিৎ হালদার নামে এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের নামও সামনে আসে। চার অফিসারকে দ্রুত সাসপেন্ডের নির্দেশ দেয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আবার এই চারজনের পাশাপাশি ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধেও এফআইআরের সুপারিশ করা হয়। এই নিয়ে রাজ্যের মুখ্য়সচিবকে চিঠি পাঠায় কমিশন

আরও পড়ুন: এনআরসি নিয়ে বাঙালিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় : হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

সেই চিঠির জবাব না পাওয়ার পর ফের মুখ্যসচিবকে কমিশনের তরফে চিঠি পাঠানো হয়। এবার ওই চার অফিসার ও ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পদক্ষেপের জন্য সোমবার বিকেল ৩টে পর্যন্ত সময় দেয় কমিশন।

সোমবার রাজ্যের তরফে কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, এইআরও সুদীপ্ত দাস ও ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সুরজিৎ হালদারকে নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। বাকি ৩ জনের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি রাজ্য। তবে রাজ্য সরকার এই পদক্ষেপকে প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে। রাজ্যের ব্যাখ্যা হল, জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়।

তার পাশাপাশি থাকে ইলেকটোরাল রোল সংক্রান্ত কাজ। এত কাজ করার পরও কোনও তদন্ত ছাড়া অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে অন্যদের উপর প্রভাব পড়তে পারে। কমিশনের নির্দেশ নবান্ন না মানায় এবার মুখ্যসচিবকে ডেকে পাঠানো হল। মুখ্যসচিবকে কমিশনকে কী জবাব দেন, সেটাই এখন দেখার।

প্রসঙ্গত, কমিশন চার অফিসারকে সাসপেন্ড করা নিয়ে প্রথমবার চিঠি পাঠানোর পর সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রামে এক সভা থেকে তিনি বলেছিলেন, “কোন আইনের বলে তুমি নোটিস পাঠাচ্ছ? সাসপেন্ড করছ। আর বলে দিচ্ছ, এফআইআর করতে হবে। হবে না। আমি কারও পানিশমেন্ট হতে দেব না। এটা মাথায় রাখবেন।”